২৭ জুলাই ২০২৪

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:০০, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আপডেট: ০৬:১৪, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আনোয়ার হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা 

আনোয়ার হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা 

জ্যেষ্ঠ ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে ওয়ার্ড কমিটি দেওয়ায় ক্ষুব্দ হয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভী৷

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দেওভোগে নগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের নিয়ে এক বৈঠকে তিনি এ ঘোষণা দেন৷

নারায়ণগঞ্জ মহানগরের ১৭টি ওয়ার্ড কমিটিতে জ্যেষ্ঠ ও ত্যাগী নেতাদের বঞ্চিত করে স্বজনপ্রীতির কমিটি ঘোষণার অভিযোগে গত কয়েকদিন ধরে নেতাদের তোপের মুখে আছেন সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা৷

১৬ নম্বর ওয়ার্ডেও জ্যেষ্ঠ ও যোগ্য নেতাদের অসম্মানের অভিযোগ তুললেন সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী৷

তিনি বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী ১৬ নং ওয়ার্ডে ছোট ভাই এপন আর চঞ্চলকে বানায় দিলো। আমি এপন আর চঞ্চলের কথা বলবো না, কারণ ওরা ছোট ভাই। ওরাও নেতা হওয়ার যোগ্যতা রাখে। কিন্তু আনোয়ার কাকা প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাব নিয়ে কমিটি দিয়েছেন৷ দেওভোগ আওয়ামী লীগরে বুঝানোর জন্য যে, আমি যা চাই তা হইতে পারে৷ এই কারণে তিনি এই দুইটা নাম ঘোষণা করে সকলকে অসম্মানিত করেছেন। আমাদের যেই পূর্বপুরুষরা দেওভোগকে নেতৃত্ব দিয়েছে সেই পূর্বপুরুষদের তিনি অসম্মানিত করেছেন। উনাকে আমি আজকে এখানে দাড়িয়ে দেওভোগের মানুষ হিসেবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম।’

সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে মর্গ্যান বালিকা বিদ্যালয়ে সভাপতি নির্বাচিত করিয়েছিলেন বলেও জানান সিটি মেয়র৷

তিনি আরও বলেন, ‘খোকন সাহেব ও আনেয়ার সাহেবের কমিটি আমার হাতে গড়া। যদি অস্বীকার করতে চায়, যদি তিনি মুসলমানের সন্তান হয়ে থাকে তাহলে এখানে এসে বলুক। আর খোকন সাহা যদি ধর্মে বিশ্বাস করে থাকে তাহলে সেও বলুক। সে তখন আমারে মা ডাকতো। সবাাই পূর্বের কথা ভুলে গেছে৷’

‘যাই হোক, এই কমিটি মানবো না। আনোয়ার কাকা ও খোকন সাহেব যদি ২০০৩ থেকে কন্টিনিউ করতে পারে তাহলে বর্তমানে যেই কমিটি আছে সেটাও কন্টিনিউ হবে’, বলেন আইভী৷

তিনি বলেন, ‘যারা নতুন কমিটির ওই ২ ভাইয়ের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এই আওয়ামী লীগ অফিসে আইসা কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা করবেন না। অফিসে আসবে, বসবে, কথা বলবে সমস্যা নেই। কিন্তু বেয়াদবি চলবে না। যদি কেউ কমিটি নিয়া বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে তাহলে আমি ওইটা নিয়ে জবাব দিবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিদ্ধিরগঞ্জের ৯টি ওয়ার্ডে কমিটি নিয়ো কিছু হয় নাই। কারণ আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্য শামীম ভাই বলে দিছেন, এটা আমার নির্বাচনী এলাকা, তোমরা ওখানে যাবা না। আমি আমার এলাকায় যেভাবে কমিটি করি সেভাবেই করবো।’

নগরীর ১৭ ওয়ার্ডে পাল্টা কমিটি দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি৷

আইভী বলেন, ‘এখন আমার তাহলে আনোয়ার কাকা ও খোকন সাহেবের কাছে প্রশ্ন, ওই ৯টি ওয়ার্ড যদি তার নির্বাচনী এলাকা হয়ে থাকে তাহলে ২৭টি ওয়ার্ডই আমার নির্বাচনী এলাকা। কোন অধিকারে, কোন সাহসে আমাকে জিজ্ঞেস না করে আপনারা ১৭টি ওয়ার্ডে কমিটি দেন। আমি ১৭টি ওয়ার্ডে পাল্টা কমিটি দিবো। ১৫নং ওয়ার্ডে কাজী সাহেব দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন, সেই লোকের জায়গায় ১২নং ওয়ার্ড থেকে এক লোকরে এনে ১৫নং ওয়ার্ডের কমিটি দিয়েছে। এগুলা কি ছেলে খেলা নাকি, এগুলা কি আনোয়ার সাহেব ও খোকন সাহার বাপের সম্পত্তি।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর দল। আমি শেখ হাসিনার একজন কর্মী। ২০০৩ থেকে আমি কখনও দলের কোনো ব্যাপারে কখনও মাথা ঘামায় নাই। আজকে বাধ্য হইছি। আমি তো আর শামীম ভাইয়ের মত বলতে পারবো না, আমার এলাকায় এটা করতে পারবেন  না। কিন্তু আমার মতামত নিয়ে যদি না করে তাহলে আমি পাল্টা কমিটি দিবো। এটা আমার সোজা হিসাব।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মো. আসাদুজ্জামান, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোয়ার হোসেন প্রমুখ৷

সর্বশেষ

জনপ্রিয়