২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৯:৪১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আপডেট: ১২:১৮, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আলী আহাম্মদ চুনকার ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার

আলী আহাম্মদ চুনকার ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ভাষা সৈনিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলী আহাম্মদ চুনকার ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার। জনপ্রিয় এই রাজনীতিক ছিলেন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। নগরীর মাসদাইরে কেন্দ্রীয় কবরস্থানে আলী আহাম্মদ চুনকার সমাধিতে পুস্পস্তবক অপর্নের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে।

সকালে আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তনের সামনে থেকে প্রভাত ফেরি শুরু করবে চুনকা ফাউন্ডেশন। পরে মাসদাইর কবরস্থানে আলী আহাম্মদ চুনকার সমাধিস্থলে পুস্পস্তবক অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করা হবে। এরপর আলী আহাম্মদ চুনকার বাসভবন খানকায়ে দারুল ইস্কে মিলাদ ও দোয়া রয়েছে। কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া তাহেরিয়া মাদরাসায় বাদ যোহর এবং হোসাইনিয়া মমতাজিয়া চুনকা সুন্নিয়া মাদরাসায় বাদ আছর মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ দোয়ার আয়োজন থাকবে। প্রয়াত জননেতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছে তার পরিবার।

আলী আহাম্মদ চুনকার পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে জ্যেষ্ঠ কন্যা ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। ২০০৩ সালে প্রথম নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সাবেক পৌর চেয়ারম্যানের কন্যা। এরপর ২০১১ সালে পৌরসভা সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তর হলে প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হন সেলিনা হায়াৎ আইভী। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। আলী আহাম্মদ চুনকার বড় ছেলে আহাম্মদ আলী রেজা রিপন মহানগর যুবলীগের সহসভাপতি এবং ছোট ছেলে আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বল ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

১৯৩৪ সালে ১৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের দেওভোগের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে আলী আহাম্মদ চুনকা জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ওয়াহেদ আলী, মাতার নাম গোলেনুর বেগম। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১’র স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত সকল আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন আলী আহাম্মদ চুনকা। ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলে মনোবল ভেঙ্গে যাওয়া নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত এবং সংগঠিত করার কাজটিও করেন চুনকা। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর দীর্ঘদিন তাকে গৃহবন্দি রাখা হয়। স্থানীয় সেনা ক্যাম্প ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন।

১৯৭৮ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। পর পর দুইবার নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৯ সালে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নে সংসদ সদস্য প্রার্থী হন। আলী আহাম্মদ চুনকা রাজনৈতিক পরিধির বাইরে গিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি সবার কাছে ‘চুনকা ভাই’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এই পরিচিতি তাকে জননেতার মর্যাদায় অসীন করে। দীর্ঘ কর্মময় জীবনে কখনও ক্লান্তি স্পর্শ করেনি তাকে। বিরামহীন এই পথ চলা তাকে কিংবদন্তীতূল্য জনপ্রিয়তা এনে দেয়।

১৯৮৪ সালে ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোরবেলায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি পরলোকগমন করেন। আলী আহাম্মদ চুনকাকে শেষবারের মতো দেখতে এসে তাঁর ‘জনপ্রিয়তা’ প্রত্যক্ষ করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আলী আহাম্মদ চুনকার স্মৃতিচারণে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চুনকাকে সমাহিত করার সময় ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল হাজার হাজার মানুষ। ফুল আর চোখের জলে নারায়ণগঞ্জবাসী তাদের প্রিয় চুনকা ভাইকে বিদায় দিল।’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়