২৪ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ০০:৩৬, ৪ জুন ২০২৩

আপডেট: ০০:৪৭, ৪ জুন ২০২৩

ইন্টারনেট ব্যবসা দখলে নিতে রাফেলের বিরুদ্ধে হামলা ও গুলির অভিযোগ

ইন্টারনেট ব্যবসা দখলে নিতে রাফেলের বিরুদ্ধে হামলা ও গুলির অভিযোগ

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে ইন্টারনেট ব্যবসা দখলে নিতে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে এক তরুণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা ও গুলি চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ শনিবার (৩ জুন) রাতে পরপর দুই দফার হামলায় ওই ব্যবসায়ীসহ পরিবারের আরও তিন সদস্য আহত হয়েছেন৷

অভিযুক্ত আশরাফুল ইসমাইল রাফেল প্রধান নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক৷ রাফেল ও তার ভাই রাসেল প্রধান তাদের অনুসারী লোকজনকে নিয়ে এ সশস্ত্র হামলা চালান বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের৷

হামলায় আহত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাসদাইর এলাকার তরুণ ইন্টারনেট ব্যবসায়ী ইফাদুর রহমান তুষার (৩২), তার বড়বোন শান্তা রহমান বৈশাখী (৩৬), মামা মতিন আহমেদ (৭০) ও কামাল আহমেদ (৬০)৷

শান্তা রহমান বলেন, মাসদাইর এলাকায় তার ছোটভাই তুষারের ‘রান অনলাইন’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে৷ তিনি মাসদাইরসহ আশেপাশের এলাকার ইন্টারনেট সার্ভিস (ওয়াইফাই) প্রোভাইডার৷ একই এলাকায় ইন্টারনেটের ব্যবসা রয়েছে ছাত্রলীগ নেতা রাফেল ও তার ভাই রাসেলের৷ তারা তুষারের ব্যবসা দখলে নিতে চান৷

‘গতকাল শুক্রবার রাফেলের লোকজন আমার ভাইয়ের ৩০ হাজার টাকার ইন্টারনেট লাইন কেটে দেয়৷ আজ শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে রাফেল ও তার ভাই রাসেলের নেতৃত্বে অর্ধশত সন্ত্রাসী বাহিনী পিস্তল, ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা হাতে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়৷ আমার ভাইকে তারা রাস্তায় ফেলে বেধরক পেটায়৷ পরে নয়টার দিকে আবারও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী এসে আমাদের বাড়ির সামনে গুলি করে, বোমা ফাটায়৷ বৃষ্টির মতো ঢিল ছুড়ে আমাদের বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে ফেলে৷ বাড়ির সামনে আমাদের ভাড়াটিয়ার একটা মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করে৷ বাধা দিলে আমাকে ও আমার দুই মামাকে তারা মারধর করে৷ আমার বড়মামার দিকে পিস্তল তাক করে গুলি করে দেওয়ারও হুমকি দেয় রাফেলের লোকজন৷’

স্থানীয় দু’জন প্রত্যক্ষদর্শী পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, তারা অন্তত তিন রাউন্ড গুলির শব্দ শুনেছেন এবং অন্তত দুইবার ককটেল বিস্ফোরণের মতো শব্দ শুনেছেন৷ সন্ত্রাসীরা ইন্টারনেট ব্যবসায়ী তুষারের বাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে মারতে থাকেন৷ এ সময় স্থানীয় লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন৷

ঘটনাস্থলের দুই বাড়ি পরে স্থানীয় কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বাড়ি৷ তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি৷ আমি নিজেও ককটেলের মতো কিছু বিস্ফোরণ হয়েছে এমন শব্দ দুইবার শুনেছি৷ ঘটনাস্থলে পুলিশ আসছে, তারা তদন্ত করছে৷’

স্থানীয় লোকজন জানান, নগরীর বেশকিছু এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন৷ অয়ন ওসমানের ঘনিষ্ঠ অনুসারী বলে পরিচিত ছাত্রলীগ নেতা রাফেল প্রধান৷

তুষারের বড়বোন শান্তা রহমান বলেন, ‘অয়ন ওসমানের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ইন্টারনেটের লাইন নিয়ে আমার ভাই তুষার ব্যবসা করে৷ রাফেল ও রাসেলরাও অয়ন ওসমানেরই লাইন চালায়৷ কিন্তু আমার ভাইয়ের লাইন রাফেলরা দখলে নিয়ে শুধু নিজেরাই ব্যবসা করতে চায়৷ এর আগেও আমার ভাইয়ের উপর হামলার চেষ্টা চালিয়েছিল তারা৷’

যোগাযোগ করা হলে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল ইসমাইল রাফেল৷ 

হামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক দিপু বলেন, ‘হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়৷ পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে৷ গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে এমন কোন আলামত এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি৷ বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে৷ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়ধীন রয়েছে৷’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়