২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ০০:০৫, ২৩ আগস্ট ২০১৮

আপডেট: ১৮:৪৫, ৩১ আগস্ট ২০১৮

ঈদে না.গঞ্জে বেড়ানোর যত স্পট

ঈদে না.গঞ্জে বেড়ানোর যত স্পট

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: ঈদের ছুটিতে অনেকেই অনেক দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে যান। ভ্রমণ পিপাসুদের তো কেবল ছুটি চাই, সময় পেলেই ছুট দেন বিভিন্ন স্থানে। অনেকেই আবার ঐতিহাসিক স্থান দর্শনে যেতে আগ্রহী। এই ছুটিতে ঘুরে আসুন নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান।

সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর

ঐতিহাসিক স্থান দর্শনে আগ্রহী যারা তাদের জন্য উত্তম স্থান হচ্ছে সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর। দর্শনীয় স্থান হিসেবে যেকোন ভ্রমণ পিপাসুর নজর কাড়বে এই স্থানটি।

আবহমান গ্রাম বাংলার লোক সাংস্কৃতিক ধারাকে বিকশিত করার উদ্যোগে ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে ১২ মার্চ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সোনারগাঁয়ের ঐতিহাসিক পানাম নগরীর একটি পুরনো বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। পরে ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে ১৫০ বিঘা আয়তনের কমপ্লেক্সে খোলা আকাশের নিচে বাংলার প্রকৃতি ও পরিবেশে গ্রামীণ রূপকেন্দ্রিক বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের শৈল্পিক কর্মকান্ডের পরিচয় তুলে ধরতে শিল্পী জয়নুল আবেদীন এই জাদুঘর উন্মুক্ত পরিবেশে গড়ে তোলার প্রয়াস নেন এবং বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন কমপ্লেক্সটি প্রায় ১০০ বছর পুরাতন সর্দার বাড়িতে স্থানন্তরিত হয়। এখানে আরো রয়েছে একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার, কারুপল্লী ও একটি বিশাল লেক।

রূপকথার গল্পে রাজারানি, রাজপুত্র রাজকন্যার কথা আমরা অনেক শুনেছি। বাড়ির কাছাকাছি যদি কোনো রাজবাড়ি থাকে তাহলে সেটা দেখতে কার না ইচ্ছে হয়। সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর হচ্ছে এমন একটি স্থান যেখানে পুরনো দিনের রাজা আর সুলতানদের অনেক জিনিসপত্র, ঢাল-তলোয়ার রয়েছে। আরও রয়েছে অনেক পুরনো প্রাসাদ আর চমৎকার সব জিনিস। যা সকলের নজর কাড়বে বিনা প্রশ্নে। এখানে সুলতানি আমল ও মোগল আমলের বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই এ অঞ্চলে জনবসতি গড়ে ওঠে।
যা যা সংরক্ষিত আছে জাদুঘরে

ঈশা খাঁর রাজধানী হিসেবেই সোনারগাঁ সবচেয়ে বিখ্যাত। ঈশা খাঁ ছিলেন মস্ত বড় বীর। সেই আমলের ঢাল-তলোয়ার, অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে এখানে। বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁয়ে এখন রয়েছে লোকশিল্প জাদুঘর। এই জাদুঘরে দেখতে পাওযা যাবে বাংলার প্রাচীন সুলতানদের ব্যবহৃত অস্ত্র-শস্ত্র, তৈজসপত্র, পোশাক, বর্ম, অলংকার ইত্যাদি। বিশাল আকৃতির ঢাল তলোয়ার দেখলে মনে হতে পারে সে যুগের মানুষ কতটা শক্তশালী ছিল যে এমন ভারি অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করত। বাংলার প্রাচীন ও মধ্যযুগের লোকশিল্পের অনেক নিদর্শনও রয়েছে এখানে। রয়েছে বাংলার প্রাচীন মুদ্রা। সোনারগাঁয়ে বড় সর্দার বাড়ি নামে পরিচিত একটি প্রাচীন জমিদার প্রাসাদে এই জাদুঘর রয়েছে। এই প্রাসাদটা দেখতে ঠিক রূপকথার প্রাসাদের মতো। প্রাসাদের সামনে রয়েছে পাথরের ঘোড়ায় চড়া সেপাই। দেখলে মনে হয় যেন জীবন্ত।

চৌরঙ্গী ফ্যান্টাসি পার্ক
নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরের বরফকল খেয়াঘাট সংলগ্ন স্থানে চৌরঙ্গী ফ্যান্টাসী পার্কে শিশু ও বিনোদন প্রেমীদের জন্য বসানো হয়েছে ৮টি রাইড। সেগুলো হলো রোলার কোস্টার, বাম্পার কার, ওয়ান্ডার হুইল, সুইং চেয়ার, মিউজিক বোট, মেরীগোল্ড, ফ্রিজবী ও রকেট। এছাড়া রয়েছে নাইন ডি থিয়েটার ও নদীর তীরে রয়েছে ভাসমান জাহাজে খাবারের ব্যবস্থা। রয়েছে রেষ্টুরেন্ট ও আইসক্রিম পার্লার। ভ্রমন পিপাসুদের জন্য প্রবেশ ফি মাত্র ৫০ টাকা। মূল ফটকের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা রয়েছে।



ফতুল্লায় অ্যাডভেঞ্চার ল্যান্ড পার্ক
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পঞ্চবটিতে অ্যাডভেঞ্চার ল্যান্ড এমিউজমেন্ট পার্কটিতে বাম্পারকার, টুইস্ট, মেরী-গো-রাউন্ড, ওয়ান্ডার হুইল, হানি সুইং, সান্তা মারিয়া, সোহান অ্যাডভেঞ্চার, প্যারাট্রুপার, ফ্যামিলি ট্রেন, মুভিং টাওয়ারের মতো জনপ্রিয় ১০টি রাইড ও কিডস রাইড সংবলিত কিডস জোন রয়েছে। সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য লেক, ফোয়ারা, ফুলের বাগান ছাড়াও দর্শনার্থীদের জন্য জুসবার, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও রেস্টহাউস রয়েছে। মূল ফটকের সামনে গাড়ি পার্কিংয়েরও বিশাল জায়গা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রবেশ ফি ১৫০ টাকা। প্রবেশ ফির সঙ্গে একটি রাইড ফ্রি।



নম পার্ক
ফতুল্লার লামাপাড়ায় খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় স্টেডিয়ামের বিপরীতে স্বল্প পরিসরে গড়ে উঠেছে বিনোদনকেন্দ্র নম পার্ক। এতে রয়েছে নাইনডি থিয়েটারসহ বেশ কিছু শিশুদের রাইড। রয়েছে রেষ্টুরেন্ট ও আইসক্রিম পার্লার।

রূপগঞ্জের জিন্দাপার্কে

সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের জিন্দাপার্ক। শুধু পার্ক বলেই শেষ করা যায় না। এখানে রয়েছে শিক্ষার উপাদান। নৈসর্গিক পরিবেশে প্রকৃতির রূপ-রসেরও গবেষণার ক্ষেত্রও এটি। ঢাকার খুব কাছেই রূপগঞ্জে ৪০ একর ভূমির ওপর গড়ে ওঠা জিন্দাপার্কের নামেই রয়েছে একটি গ্রাম। এ পার্কে ফলদ, বনজ ও ঔষধিসহ নানা প্রকার প্রায় ২০ হাজার গাছ-গাছালি রয়েছে। গ্রামের মানুষ সমবায়ের মাধ্যমে নিজের এবং ইজারা নেওয়া ও কেনা জমি দিয়ে তিলে তিলে প্রাণপ্রিয় করে গড়ে তুলেছে এই নিসর্গকে। নৈসর্গিক পরিম-লে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রহশালা ও লাইব্রেরি স্থাপন করা হয়েছে। এখানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার কাজ করছে। শিশুদের ভাষা তৈরির জন্য কাজ করছে।

রূপগঞ্জের ফানল্যান্ড পার্ক
ঈদকে ঘিরে বিনোদনপ্রেমী পর্যটক ও দর্শনার্থীদের হৃদয় আকৃষ্ট করতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ গাছ-গাছালি বেষ্টিত মনোরম পরিবেশে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ঐরাবো এলাকায় গড়ে উঠেছে ফানল্যান্ড পার্ক। যেখানে রয়েছে বাম্পারকার, স্লাইডিং, পান হর্স, প্যাডেল বোর্ড, উড়োজাহাজ, ড্রাগনসহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তিসম্মত খেলনা সামগ্রীর মাধ্যমে আনন্দ উপভোগ করতে নতুন আঙিকে প্রস্তুত করা হয়েছে।



বাংলার তাজমহল
প্রেমের জন্য অমর হয়ে আছেন মোঘল সম্রাট শাহজাহান তারা বিবির জন্য তাজমহল নির্মান করে। বিশ্বের ক’জনই আছেন সেখানে যাওয়ার অভিলাস প্রকাশ করেনা? কিন্তু যেতেই পারেন বা ক’জন? ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য সুখবর হলো আমাদের দেশেই নির্মিত হয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় তাজমহল। ঠিক সম্রাট শাহজাহানের গড়া আসল তাজমহল না হলেও আগ্রার তাজমহলের আদলেই গড়ে তোলা হয়েছে এই তাজমহলটি। নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ের পেরাবো এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্লাহ মণি গড়ে তুলেছেন বাংলার তাজমহল। এই তাজমহল দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে সোনারগাঁওয়ের পেরাবো গ্রামে। সেখানে প্রবেশ ফি ৫০ টাকা। এছাড়া তাজমহলের পাশেই রয়েছে কৃত্রিম পিরামিড।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়