২৯ মার্চ ২০২৪

প্রকাশিত: ২১:০৭, ১৫ জুন ২০১৮

ঈদেও ছুটি নেই এনামুলদের

ঈদেও ছুটি নেই এনামুলদের

সাবিত আল হাসান (প্রেস নারায়ণগঞ্জ): কি রোদ, কিবা বৃষ্টি। ঝড়-তুফানেও ডিউটি মাফ নেই ট্রাফিক পুলিশের। একটু অন্যমনষ্ক হলেই গাড়ির চাকা থমকে যায়। লেগে যায় জট। ধুলো-বালি আর কালো ধোঁয়ার ভেতর রাস্তায় দাঁড়িয়ে অবিরাম বাঁশি ফুঁকে, হাতের ইশারায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করাই ট্রাফিক পুলিশের কাজ। তারপরও নেই কাংখিত ছুটি। নেই পদোন্নতি কিংবা সামাজিক মর্যাদাও। এতশত কষ্ট করবার পরেও রাস্তায় যে কোন জনদুর্ভোগের জন্য প্রথম গালি শুনেন এই ট্রাফিক পুলিশরা। অথচ তারা নিজ পরিবার পরিজন ছেড়ে দিনের অধিকাংশ সময় রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বছর শেষে ঈদের ছুটিটাও কপালে জুটেনা অনেকের।

তেমনি একজন ট্রাফিক পুলিশ এনামুল। জীবনের ২০টি বছর রাজপথের গাড়ি নিয়ন্ত্রণেই পাড় করেছেন। ২০ বছরে মাত্র ৫/৬ টি ঈদ পরিবারের সাথে কাটিয়েছেন। বাকি সময় উৎসব মুখর মানুষের জন্য নিজের আনন্দ উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু তবুও মনের ভেতরকার ব্যথা লুকিয়ে হাসি মুখেই আগেরকার স্মৃতিচারন করলেন প্রেস নারায়ণগঞ্জের কাছে।

এনামুল বলেন, ঈদ সবার জন্য যেমন আনন্দের আমাদের জন্যেও তেমন। প্রতিদিন ডিউটি করি যেভাবে এদিন ও সেভাবে করলেও আমাদের জন্য মানুষ আনন্দের ছুটি কাটাতে পারছে ভেবে আনন্দ লাগে। মানুষের সেবায় কোন কষ্ট নেই। বরং আছে প্রাপ্তি। সেটা কে কিভাবে উপভোগ করবে সেটা তার ব্যাপার। প্রথম প্রথম ঈদ পরিবারের সাথে করতে না পারলেও ধীরে ধীরে আমরা অভ্যাস্ত হয়ে গেছি। শুধু আমি নই। আমাদের সাথে অনেকেই ঈদে কেউ কোথাও যায় না। সহকর্মীদের সাথে একসাথে কাজ করার ফলে খুব একটা খারাপ লাগে না, কারন সবার উদ্দেশ্য একই।

নিজের অতীত স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এনামুল বলেন, ছাত্রজীবনের দিনগুলো তো ছিল অসাধারণ। ঈদের আগের রাতে গ্রামের সকল বয়সী ছেলেরা মিলে মিছিল বের করতাম। চাঁদরাতে মেহেদী পাতা বেটে হাতে দিতাম। বাবার সাথে ঈদগাঁয় গিয়ে নামাজ আদায় করা কোলাকুলি সব মিলে আনন্দ মুখর পরিবেশ ছিল।

তখনকার ঈদ আর এখনকার ঈদের ভেতর আনন্দের পার্থক্য কতটুকু জানতে চাইলে বলেন, আগে বাবা মার সাথে ঈদ করতাম এখন ছেলেমেয়ের সাথে ঈদ করি। তাও ঈদের দিন ফুলটাইম ডিউটি শেষে বাসায় গিয়ে তাদের সময় দেয়া। আনন্দ কখনো স্থির থাকে না। পরিবেশ পরিস্থিতিতে আনন্দ ও আনন্দের উপলক্ষ্য পরিবর্তন করে নিতে হয়।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়