খুলনায় হামলার প্রতিবাদে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের মানববন্ধন
প্রেস নারায়ণগঞ্জ: রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল রক্ষা আন্দোলনে খুলনায় গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি ও শ্রম আইনের শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী ধারাসমূহ বাতিলের দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২১ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, জেলা রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক এস এম কাদির, জেলা গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, সহ সভাপতি হাসনাত কবীর, সহ সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সোহাগ, অর্থ সম্পাদক খোরশেদ আলম, সদস্য আনোয়ার হোসেন খান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বর্তমান করোনাকালীন সময়ে সারাদেশে শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে অনাহারে, বিনা চিকিৎসায় চরম অসহায়ত্বের মধ্যে দিনযাপন করছে। প্রবাসী শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে অসহায় অবস্থায় দেশে ফিরে আসছে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে। অথচ এই সময়ে সরকার লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫ টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করেছে। পাট এবং পাটকল আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে সম্পর্কিত। ফলে পাটকল বন্ধ করা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অঙ্গীকারের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা। লোকসানের মূল কারণ যে পুরোনো যন্ত্রপাতি, অদক্ষ ও মাথাভারী প্রশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট সেটা উদঘাটন করে ব্যবস্থা না নিয়ে কর্মরত ৫০ হাজার শ্রমিককে করোনাকালে বেকার করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে ১২শ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে পাটকলগুলো আধুনিকায়ন করলে লাভজনক করা সম্ভব। অথচ সরকার সে পথে না হেটে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে পাটকল বন্ধ করার উদ্দেশ্যে। সরকার পিপিপি বা লিজের নামে জনগণের সম্পদ ব্যক্তি মালিকদের হাতে তুলে দিতে চাচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, করোনাকালে আমরা গার্মেন্টসে লক্ষাধিক শ্রমিক ছাঁটাই হতে দেখেছি। সরকারের কাছ থেকে প্রণোদনার টাকা নিয়েও মালিকরা শ্রমিকদের ৪০% টাকা কেটে নিয়েছে। গত সোমবার (১৯ অক্টোবর) বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল চালুর দাবিতে খুলনায় পাটকল শ্রমিকরা রাজপথ অবরোধ কর্মসূচী পালন করে। রাজপথে বসে থাকা শ্রমিকদের উপর পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং বেধরক লাঠিপেটা করে। পুলিশ শুধু রাজপথে নয় বরং শ্রমিক কলোনিতে প্রবেশ করে নারী ও শিশুর উপরও হামলা চালায়। এতে শতাধিক শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আহত হয়। এ আন্দোলন থেকে বাসদ খুলনা জেলার সমন্বয়ক জনার্দন দত্ত নান্টুসহ ১৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এ সময় বন্ধকৃত ২৫টি পাটকল আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু এবং পাটকল রক্ষা আন্দোলনে খুলনায় গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম