১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২৩:০০, ২৪ এপ্রিল ২০২২

আপডেট: ১৫:৪৯, ২৫ এপ্রিল ২০২২

খোকন সাহার মামলা তুলে নেওয়ার দাবি ‘স্ট্যান্ডবাজি’

খোকন সাহার মামলা তুলে নেওয়ার দাবি ‘স্ট্যান্ডবাজি’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহার বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি তুলে নিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর দেওয়া প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে জানেন না দলটির জেলা ও মহানগর কমিটির সিনিয়র নেতারা। তারা বলছেন, নির্বাচনের পূর্বে তাদের উপস্থিতিতে কোন বৈঠকে এই রকম প্রতিশ্রুতির বিষয়ে আলোচনা হয়নি। এমন আলোচনা হয়েছে বলেও তারা শোনেননি। মামলা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতির দাবি স্ট্যান্ডবাজি বলেও মন্তব্য করেন তারা।

খোকন সাহার বিরুদ্ধে করা মামলায় সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলাটি করেছিলেন নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। এদিকে এই মামলায় চার্জশিট হওয়ার পর আদালত ওয়ারেন্ট জারি করলে খোকন সাহার ঘনিষ্ঠ নেতারা দাবি করছেন, গত সিটি নির্বাচনের পূর্বে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে মেয়র আইভী নির্বাচনের পর মামলা তুলে নিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের পর মামলা তুলে না নিয়ে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন আইভী। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদা মালা। গত শনিবার খোকন সাহার পক্ষে এক মানববন্ধনেও তিনি এই কথা বলেন। তবে এই প্রতিশ্রুতির বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের।

এই বিষয়ে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপুর সাথে যোগাযোগ করা হয়। তারা তিনজনই গত সিটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে ছিলেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছেন। তারা বলেন, তাদের উপস্থিতিতে এমন কোনো আলোচনা হয়নি। এই ধরনের আলোচনা অন্য কোন সভাতে হয়েছে বলেও তারা শোনেননি। বিষয়টি নিয়ে স্ট্যান্ডবাজি করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও মন্তব্য তাদের।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমার উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সামনে আইভী এমন কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি। অন্য কোন সভাতে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও আমি শুনিনি। আমার সামনে এইরকম কোনো কথাও হয়নি।’

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি তো এই বিষয়ে বলতে পারবো না। আলোচনা হয়ে থাকলেও যে বিবাদী তার তো বাদীর সাথে আলাপ আলোচনা করার দরকার ছিল। সেটা না করে স্ট্যান্ডবাজি করলে তো হয় না। তিনি একজন আইনজীবী। নিয়ম অনুযায়ী আদালতে তার তো হাজিরা দেওয়া তো উচিত ছিল। হাজিরা না দেওয়ায় ওয়ারেন্ট হইসে। হাজিরা দিলে তো আর ওয়ারেন্ট হইতো না। এখন এইটা নিয়ে তিনি ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি তো আসলে প্রেসিডেন্ট। আমার সাথেও তো আলোচনা করতে পারতো। আমাদের মাধ্যমে তো আলোচনা করা উচিত ছিল। সেইটাও তো করে নাই। প্রয়োজনে আমরা আইভীকে নিয়ে বসতে পারতাম। এইরকম কোনো উদ্যোগ তো খোকন সাহা নেননি। এখন এইগুলো বলে পরিস্থিতি অন্যরকম করতে চাচ্ছেন।’

আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু বলেন, ‘এই রকম কোনো আলোচনার বিষয়ে আমি জানি না। এমনকি আমি শুনিও নাই। যদি এইরকম কিছু হয়ে থাকে তাহলে কেন্দ্রীয় কমিটির যেসব নেতারা তখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন সেই নেতাদের বললেই হয়। নিশ্চয়ই কেন্দ্রীয় কমিটির বাইরে তো কেউ না। সবারই তো জবাবদিহিতার জায়গা আছে। এই রকম ওয়াদা যদি কেউ দিয়ে থাকে এবং কেন্দ্রীয় যেসব নেতাদের কাছে ওয়াদা করেছিলেন তারাই তো এইটার সুরাহা করতে পারে। রাস্তাঘাটে চিৎকার করে তো আর এইটার সমাধান করা যায় না।’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়