১৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২১:২১, ২৯ এপ্রিল ২০২১

জমজমাট চারারগোপে ফলের আড়ত

জমজমাট চারারগোপে ফলের আড়ত

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: আজ বৈশাখ মাসের ১৬ তারিখ। বৈশাখের শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জ শহরের চারারগোপে ফলের আরত ভরে উঠেছে মৌসুমি ফলে। মহামারী করোনা ও সরকার ঘোষিত লকডাউনেও নারায়ণগঞ্জে বেচাঁকেনা সব মিলিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আছে বলছেন আড়তদাররা। তবে কেউ কেউ বলছেন ভিন্ন কথা।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) শহরের কালিরবাজার চারারগোপ ফলের আড়ত ঘুরে দেখা যায়, বাজারে উঠেছে দেশী গুটি আম। যা বৈশাখী আম বলছেন বিক্রেতারা। এই আম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা কেজিতে। আরও এক ধরনের আম দেখা যাচ্ছে আড়তে। বাংলা ভাষায় যা বার্মিজ আম হলেও এর মূল নাম রোয়াংগাই। এই আমটি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।

এছাড়াও বাজারে মিলছে নাবি জাতের আম; যা বাজারে গোবিন্দপুর আম নামেই অধিক পরিচিত। বর্তমানে এই আমটি এই সময়ে বাজারে পাওয়ার কথা ছিল না। তবে তা বেচাঁকেনা হচ্ছে দেদারসে। মূলত লাভের আশায় পাকার আগেই আমগুলো বাজারে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে জানান এক আড়তদার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আড়তদার বলেন, এই সময়ে আমগুলো তুলনামূলক অনেক কম মিষ্টি হয়ে থাকে। কিন্তু কিছুদিন পর আমগুলো পাড়া হলে এ আম অত্যাধিক মিষ্টি হবে। আমটি আসছে সাতক্ষীরা থেকে। কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। আবার খুচরা বাজারে বিভিন্ন জাতের আমের কথা বলে এই গোবিন্দপুর আমই বিক্রি করা হচ্ছে।

চারারগোপের আড়তদার মহব্বত আলী বলেন, অন্যান্য ব্যবসার চেয়ে ফলের ব্যবসা ভালো অবস্থায় আছে। মূলত এই লকডাউনেও ফলের চাহিদা রয়েছে অনেক। তাই করোনার সময়েও আমাদের ব্যবসা মোটামুটি চলছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে বেঁচাকেনা অনেক কম।

তরমুজের নাম ‘কালি’ ও ‘বাংলালিংক’। শুনতে খটকা লাগলেও চারারগোপের ফলের আড়তে এসব নামেই বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। তরমুজের বাহিরের অংশ ডোরাকাটা হলদে-সবুজ রঙের এবং ভেতরটা দেখতে লাল টুকটুকে। যার কারণে নাম তার ‘বাংলালিংক’ তরমুজ। বাজারে চাহিদা বেশি এই তরমুজ দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও ঠিক তেমনি সুস্বাদু। আবার কালো রঙের তরমুজের নাম দেয়া হয়েছে ‘কালি’। এ দুই ধরনের তরমুজই বাজারে আকারভেদে ৮০-৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন আকার ও ধরনের বাঙ্গিও। বাজারে দেখা গেছে বাঙ্গিরই আরেক প্রজাতি যা চিনাল নামে পরিচিত। বিক্রেতা সেন্টু ব্যাপারী বলেন, এর আঞ্চলিক নাম ‘চিলান’ হলেও এ ধরনের বাঙ্গিগুলো দেখতে লম্বাটে। যা আসছে ফরিদপুর থেকে এবং আকারভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা করে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে। আবার ছোট ছোট বলের ন্যায় ‘নালিম’ জাতের বাঙ্গিও রয়েছে ফলের আড়তে। এ ধরনের বাঙ্গিগুলো দেশের মাগুরা থেকে আসে, বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি এবং প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে।

রাঙ্গামাটি থেকে আগত ‘জলডুগি’ জাতের আনারসও উঠেছে এই ফলের আড়তে। যা আকারভেদে ২০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। সময় না হলেও রাঙ্গামাটি থেকে কিছু কাঠাল আসতে দেখা যায়। যা আকারভেদে প্রতি পিস ২০০ থেকে ৮০ টাকার ভিতরে পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে বরাবরের মতো দেখা মিলেছে সাগর কলা, নেপালী কলা, চাপা কলা ও সবড়ি কলাসহ বিভিন্ন জাতের কলা। সাগর কলা প্রতি ৮০ পিস বা এক পণ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা করে। নেপালী ও চাপা কলা পণ প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা এবং সবড়ি কলা পাওয়া যাচ্ছে পণ প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। যশোর, বরিশাল, টাঙ্গাইল, দিনাজপুর, বগুড়া, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কলাগুলো আসছে চারারগোপের ফলের আড়তে।

কালিরবাজার চারারগোপ ফলের আড়ত সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবির ফারুক বলেন, রাস্তাঘাটে জ্যাম, দ্বিগুণ ভাড়া ও পথে ডাকাতিসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে আড়তে মালামাল আসতে দেরি হয়। যেহেতু বেশিরভাগ মালামালই কাঁচামাল যা দ্রুত পঁচনশীল। তাই গতবারের লকডাউনের চেয়ে এবারের লকডাউনে বেচাঁকেনা কম হচ্ছে। গতবারের লকডাউনে প্রণোদনা বা সাহায্য সহযোগিতা থাকলেও এবারে তার দেখা মিলছে না বলেও জানান তিনি।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়