২৩ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২০:৫৫, ২২ অক্টোবর ২০২০

দাফনের ৩৯ দিন পর কবর থেকে গৃহবধুর লাশ উত্তোলন

দাফনের ৩৯ দিন পর কবর থেকে গৃহবধুর লাশ উত্তোলন

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ বন্দরে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যুর ৩৯ দিন পর তার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কল্যান্দি কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়৷

এর আগে নিহতের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলনের আদেশ দেন আদালত৷

নিহত নারীর নাম রোজিনা বেগম (৩৩)৷ তিনি বন্দর উপজেলার রাজবাড়ী এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা জব্বর সরদারের মেয়ে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর শ্বশুরবাড়িতে মৃত্যু হয় তার৷ তিনি ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে জানান নিহতের ভাই মো. মাসুদ৷ তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবে স্ট্রোক করে মারা গিয়েছে রোজিনা, এমনটাই জানিয়েছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন৷ কিন্তু পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে তার বোনকে নির্যাতন কথা তারা প্রতিবেশী ও বিভিন্ন লোকজন মারফত জানতে পারেন৷ একথা জানতে পেরে তিনি নিজে বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন৷ মামলার পর লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হয়৷

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন্দর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসমা সুলতানা নাসরীন, মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জের উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সায়েম৷

নিহত রোজিনার পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৩ বছর পূর্বে বন্দর রাজবাড়ী এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা জব্বর সরদারের মেয়ে রোজিনা বেগমের সাথে একই এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মুরাদ মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। তবে বিয়ের শুরু থেকেই তাদের জীবনে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত। গত মাসে রোজিনা বেগম ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হলে তার স্বামী মুরাদ স্ত্রীকে ঠিকমত চিকিৎসা না করিয়ে উল্টো শারীরিক নির্যাতন করতো বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়৷

মামলায় বাদী বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর স্বামী মুরাদ, তার মা পিয়ারা বেগম মিলে অন্তঃসত্ত্বা রোজিনাকে অমানুষিক নির্যাতন করলে সে অসুস্থ হয়ে মারা যায়। পরদিন রোজিনার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জব্বর সরদার ও তার ভাই মাসুদ সরদারকে জানানো হয় তার মেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেছে। তাৎক্ষনিক স্বামী মুরাদ, তার মা পিয়ারা বেগম, জিয়াসমিন, লার্সন, কুতুব উদ্দিনসহ রোজিনার শ্বশুরবাড়ির লোকজন কৌশলে মরদেহ কল্যান্দি কবরস্থানে দাফন করে। পরে রোজিনাকে নির্যাতন করে হত্যা করা রয়েছে জানতে পেরে আদালতে মামলা করেন নিহতের ভাই মাসুদ৷

এ ব্যাপারে পিবিআইয়ের আবু সায়েম বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে বাদী মামলা করার পর তদন্তের ভার দেয়া হয় পিবিআই নারায়ণগঞ্জকে। তদন্তের স্বার্থে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়েছে৷

বন্দর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা সুলতানা নাসরীন বলেন, কোর্টের আদেশ পেয়ে আমি নিজে উপস্থিত থেকে কবর খুড়ে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়