২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৭:৩৭, ২১ অক্টোবর ২০২০

আপডেট: ১৯:৫৯, ২১ অক্টোবর ২০২০

দুর্গাপূজা মন্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি

দুর্গাপূজা মন্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে এবার ১৯৯টি পূজামন্ডপে হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে এবার ৬টি মন্ডপ কমেছে। বুধবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দশাভুজা দেবী দুর্গার বোধন। বৃহস্পতিবার মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসবের কার্যক্রম শুরু হবে। এদিকে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে পূজামন্ডপগুলোতে। এবার করোনাভাইরাসের কারণে উৎসবের চেয়ে পূজার দিকে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়টিতে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা।

মঙ্গলবার ও বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েকটি জেলার কয়েকটি পূজা মন্ডপ ও মন্দির ঘুরে দেখা যায়, শারদীয় দুর্গোৎসবের সর্বশেষ প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত সবাই। অধিকাংশ পূজামন্ডপে প্রতিমা স্থাপন সম্পন্ন হলেও আলোকসজ্জাসহ আনুসাঙ্গিক কিছু কার্যক্রম এখনও বাকি রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বুধবার রাতের মধ্যেই এসব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে যাবে।

শহরের ব্যস্ততম পাইকারি বাজার নিতাইগঞ্জ মোড়ে অবস্থিত শ্রী শ্রী বলদেব জিউর আখড়া ও শিবমন্দিরে প্রতিমা স্থাপন ও সাজানোর কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। দুর্গা প্রতিমার শাড়ির পাড় লাগাতে দেখা যায় জগদীশ পালকে। তিনি বলেন, সব কাজ প্রায়ই শেষ। কিছুটা বাকি আছে যা সন্ধ্যার মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।

এই মন্ডপের বিশেষ আকর্ষন হিসেবে সজ্জায় রাখা হয়েছে মাস্ক। মন্দির ও পূজা মন্ডপের সিলিংয়ে লাগানো হয়েছে সাড়ে তিন হাজার মাস্ক। মন্দিরে আসা লোকজন স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়ে যাতে সচেতন থাকেন সে কারণেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি জয় কে রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, কোভিড মহামারীর সময়ে মাস্ক পড়াটা খুবই জরুরি। সরকারও এই বিষয়টিতে খুব জোর দিচ্ছে। কেউ যদি মন্দিরে মাস্ক ছাড়াও প্রবেশ করে তাও সে ডেকোরেশন দেখে স্বাস্থ্য সচেতন হবেন এই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই এই উদ্যোগ।

মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রবাস সাহা বলেন, এই বছর কোভিড পরিস্থিতির কারণে অনেক আয়োজনই সীমিত রাখা হয়েছে। পূজার দিকেই বেশি জোর রয়েছে। উৎসবকে এবার কম প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সাউন্ড সিস্টেম ও অতিরিক্ত আলোকসজ্জার বিষয়টি এবার বাদ পড়েছে। অঞ্জলি, অর্চনা, প্রসাদ বিতরণের ক্ষেত্রেও সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়গুলো নজরে রাখা হবে।

শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে পূবালী গ্রুপ এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের ব্যক্তিগত পূজা মন্ডপটিরও। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এই মন্ডপটিতে দেখা যায় কয়েকজন কারিগর আলোকসজ্জা নিয়ে কাজ করছে। প্রতিমাগুলো মন্ডপের সামনে রাখা আছে। তবে তা এখনও স্থাপন করা হয়নি। পূবালী গ্রুপের পরিচালক জয় কে সাহা বলেন, আজ দেবীর বোধন কাল মহাষষ্ঠী। এখন মন্ডপের শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে। সন্ধ্যার মধ্যে কার্যক্রম সব সম্পন্ন হয়ে যাবে।

জেলার সবচেয়ে বড় পূজামন্ডপটি হয় শহরের আমলাপাড়া এলাকায়। আমলাপাড়া সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি প্রতি বছর বেশ জাকজমকপূর্ণ আয়োজন করে। তবে এবার তা কমে এসেছে। মন্ডপটিতে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিমা স্থাপন হলেও অনেক কার্যক্রম এখনও বাকি রয়েছে। তবে ষষ্ঠী পূজার আগেই মন্ডপ প্রস্তুত হবে বলে ধারণা পূজা উদযাপন কমিটির। এই মন্ডপে করোনাকালীন সময়ে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, সাংবাদিকদের নিয়ে বিশেষ আকর্ষন রাখা হয়েছে।

শহরের টানবাজারের সাহাপাড়া পূজামন্ডপেও এবার সীমিত আয়োজন রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার এই মন্ডপে স্থাপিত প্রতিমাগুলোর রঙের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন চলছে সজ্জার কাজ। রাতের মধ্যে সকল কার্যক্রম শেষ হয়ে যাবে বলে জানান পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, করোনা পরিস্থিতি সবকিছুকেই অস্বাভাবিক করে তুলেছে। এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব অন্যান্যবারের তুলনায় অনেক সীমিত আকারে চলে এসেছে। উৎসবের চেয়ে পূজার দিকেই বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে। সরকার ও কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটির দেওয়া নির্দেশনা মতোই সকল কার্যক্রম চলবে।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়