২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৪:১৪, ১৩ এপ্রিল ২০২০

আপডেট: ১৪:৩৮, ১৩ এপ্রিল ২০২০

নারায়ণগঞ্জে করোনার প্রভাবে লোকসানে দুগ্ধ খামারিরা

নারায়ণগঞ্জে করোনার প্রভাবে লোকসানে দুগ্ধ খামারিরা

সৌরভ হোসেন সিয়াম (প্রেস নারায়ণগঞ্জ): ভালো নেই খামারিরা। প্রাণঘাতী নভেল করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাব পড়েছে দুধের বাজারেও। করোনা সংক্রমন রোধে নারায়ণগঞ্জকে লকডাউন ঘোষণা করায় মিষ্টি ও বেকারির দোকান বন্ধ। পড়ে গেছে দুধের দাম। পাইকারি দুধ বিক্রেতারাও কম দামে খুচরা বাজারে দুধ বিক্রি করছেন। এমন চলতে থাকলে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা খামারিদের।

খামারি মো. সায়েম বলেন, ‘দুধে তো আর ভাইরাস নাই। তাও দুধ বেচতে পারি না। বড় বড় ডিলাররা কেউ ঘুরতেও এদিকে আহে না। আমাগো তো মরণ হইয়া গেছে গা।’

একদিকে দুধের দাম কম অন্যদিকে গরুর খাবারের (খৈল, ভূষি) দাম বেশি। গরুর খাবার কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘গরুর খাওনের দাম তো আর কমে না। হপ্তায় বিশ হাজার টাকার খাওন লাগে। দুধ বেচতে পারিনা দশ হাজারও। গরু বেইচা দিমু এইডাও পারি না। মাইনষের ঘরে ট্যাকা নাই। গরু কিনবো কেডায়?’

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর সেতু সংলগ্ন সিরাজ মন্ডল মার্কেটের সামনে বসে উপজেলার সবচেয়ে বড় দুধের বাজার। সকাল ও বিকেল দুই বেলায় পাইকারি ও খুচরা মূল্যে বিক্রি হয় কয়েকশ’ মন দুধ। গোগনগর, বক্তাবলী, আলীরটেক, ফতুল্লাসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় সাড়ে তিনশ’ খামারি এখানে তাদের দুধ বিক্রি করেন বলে জানা যায়।

কয়েকজন খামারির সাথে কথা হলে তারা জানান, দুধের বড় ডিলার হচ্ছে মিষ্টি ও বেকারি মালিকরা। এছাড়া বিয়ে, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দুধের চাহিদা থাকে। সম্প্রতি করোনার প্রাদুর্ভাবে নারায়ণগঞ্জ লকডাউন করে দেওয়ায় দুধের বড় বড় ডিলাররা আসছেন না। কোন অনুষ্ঠান না থাকাতে পড়ে গেছে দুধের দাম। ৭০-৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া দুধ বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪০ টাকায়। পাইকারি বিক্রেতারা রাতারাতি খুচরা বিক্রেতা বনে গেছেন।

সিরাজ মন্ডল মার্কেটের মালিক খামারি আওলাদ হোসেন মন্ডল বলেন, তিনশ’ খামারির মাধ্যমে কয়েকশ’ পরিবার বাঁচে। খামারি না বাঁচলে ওইসব পরিবারের লোকজনও না খেয়ে থাকবে। তাই সরকার যেন এই খামারিদের দিকে একটু তাকায়।

গোগনগরের উত্তর মসিনাবন্দ এলাকার আজমেরী ডেইরির মালিক গোলাপ হোসেন। খামারে ২২টি গরু রয়েছে তার। তার বড় ডিলার ছিল ফুডল্যান্ড বেকারি। লকডাউনের কারণে প্রতিষ্ঠানটি দুধ কিনছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন তিনি। গত কয়েকদিন যাবত খুচরা বাজারে দুধ বিক্রি করছেন।

গোলাপ হোসেন বলেন, বড় বিপদের মধ্যে আছি। কাজের লোকেরে এই মাসে বেতন দিতে পারি নাই। গরুরেও খাওয়াইতে পারতাছি না, নিজেরাও খাইতে পারতাছি না।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আতাউর রহমান ভূঞা বলেন, করোনার প্রভাব তো সর্বত্রই পড়েছে। আমরা মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি জানিয়েছি। আমরাও নতুন পথ খুঁজছি। কীভাবে তাদের ক্ষতি লাঘব করা যায় সেটা আমরা দেখছি।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়