নিট কনসার্নকে ছাড় দিয়ে রেলওয়ের উচ্ছেদ
প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে চাষাঢ়া-আদমজী সড়কের ৯০ শতাংশের বেশি কাজ শেষ। কিছু অবৈধ স্থাপনার কারণে বাকি কাজ সম্পন্ন করতে পারছে না নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগ। সড়কটি নির্মাণে প্রধান বাধা নিট কনসার্ন গ্রুপের কিছু স্থাপনা। রয়েছে স্থানীয় লোকজনেরও কিছু স্থাপনা।
বুধবার (৭ জুন) বাংলাদেশ রেলওয়ে ও সড়ক বিভাগের যৌথ অভিযানে স্থানীয় লোকজনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও ছাড় পেয়ে গেছে শিল্পগোষ্ঠী নিট কনসার্নের অবৈধ স্থাপনা। নিট কনসার্নের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করেই অভিযান সম্পন্ন করেছে রেলওয়ে ও সড়ক বিভাগ।
এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন। তারা বলছেন, স্থানীয় লোকজনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি পরিমাণ সরকারি জমি দখল করে আছে নিট কনসার্ন গ্রুপ। এ নিয়ে একাধিক বৈঠকে স্থানীয়দের পাশাপাশি নিট কনসার্নের দখলে থাকা জমির উপর অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়েছিল সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর। তবে কাজের বেলায় তারা কেবল স্থানীয় লোকজনের স্থাপনাই উচ্ছেদ করেছেন। অনৈতিক আর্থিক সুবিধা পেয়ে নিট কনাসার্নকে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
রেলওয়ে বিভাগের ডিভিশনাল এস্টেট অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শফি উল্লাহর নেতৃত্বে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায় এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। জেলা প্রশাসন ও নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী উচ্ছেদ অভিযানে সহযোগিতা করে।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সামিউল কাদের খান জানান, শহরের চাষাঢ়া থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেড পর্যন্ত সাড়ে ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ভাষা সৈনিক বেগম নাগিনা জোহা সড়ক নির্মাণের জন্য রেলওয়ের কাছ থেকে প্রতীকি মূল্যে জায়গা বরাদ্দ পায় নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগ। ২০১৯ সালে সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ইতিমধ্যে প্রায় ৯২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে হাজীগঞ্জ থেকে পাঠানটুলি পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার জায়গায় অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠায় সড়কটি সংকুচিত হয়ে পড়ে এবং নির্মাণ কাজে বাধাগ্রস্ত হয়। তাই রেলওয়ে কতৃপক্ষকে জানালে তারা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়িসহ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়।
তিনি বলেন, উচ্ছেদ অভিযানটি সম্পূর্ণভাবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করেছে। জেলা প্রশাসন এবং আমরা তাদের সহায়তা করেছি। অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করায় সড়ক নির্মাণের কাজ আরও দ্রুত গতিতে চলবে। আমরা আশা করছি চলতি মাসের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারবো।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মারুফা সুলতানা হীরামনিসহ রেলওয়ে এবং সড়ক বিভাগে অন্যান্য কর্মকর্তারা উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন।
নিট কনসার্ন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের, ‘জমি রেলওয়ের, সড়কের জন্য তারা জমি আমাদের যেভাবে জমি হস্তান্তর করবে সেভাবে রাস্তা সড়ক নির্মাণ করা হবে। অবৈধ দখলদার থাকার কারণে রেলওয়েকে জমি উদ্ধারের জন্য বলা হয়েছিল। আজ তারা সেই জমি উদ্ধার করে দিয়েছে। তারা যদি নিট কনসার্নের জমি দিতো তাহলেও আমাদের কোনো সমস্যা ছিল না। এখন তারা স্থানীয়দের কাছ থেকে জমি উদ্ধার করে দিয়েছে, সেটা তাদের ব্যাপার। আমরা জমি পেয়েছি, কাজ শেষ করবো দ্রুত।’
প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম