নির্মাণাধীন ভবন থেকে শাবল পড়ে সাবেক ফুটবলারের স্ত্রীর মৃত্যু

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ শহরে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের উপর থেকে পড়া শাবলের (ভারী ধাতব যন্ত্র) আঘাতে পথচারী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ৩৭নং নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের মিশনপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীর নাম জাহানারা বেগম (৫০)। তিনি শহরের খানপুরের কাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাবেক ফুটবলার জাকির হোসেনের স্ত্রী এবং এক সময়ের জনপ্রিয় ফুটবলার স¤্রাট হোসেন এমিলির ফুপাতো বোন।

স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাহানারা বেগমের নাতি শহরের নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের মাউন্ট রয়েল একাডেমিতে পড়ে। নাতিকে সেখানে পৌঁছে দিয়ে খানপুরে নিজ বাসায় ফেরার পথেই মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। নিরাপত্তা বেষ্টনী না দিয়ে ভবনের নির্মাণ কাজ করার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

ওই ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, নির্মাণাধীন ১১ তলা আবাসিক ভবনের পাশের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন জাহানারা বেগম নামে ওই নারী। হঠাৎ উপর থেকে একটি শাবল তার মাথার উপর পড়ে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তার। তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ জামান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে নিহতের পরিবারের লোকজনের সাথে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু। রাজউকের কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন স্থানীয় এই কাউন্সিলর। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনে ভবনের নকশার অনুমোদন দেয় রাজউক। তাদেরই অবহেলার কারণে এই দুর্ঘটনা। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়ার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তরের দাবি জানান এই জনপ্রতিনিধি।

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ১১ তলাবিশিষ্ট আবাসিক ভবনটির সপ্তম ও অষ্টম তলায় নির্মাণকাজ চলছে। তবে কোনো প্রকার বেষ্টনী বা নিরাপত্তাজনিত সতর্কীকরণ বিষয় উল্লেখ করা কোনো সাইনবোর্ড চোখে পড়েনি। এমনকি ভবন মালিক কিংবা ভবনের অনুমোদন সংক্রান্ত কোনো সাইনবোর্ড পাওয়া যায়নি। নির্মাণকাজের সাথে সম্পৃক্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পরপরই নির্মাণ শ্রমিকরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। শহরের খানপুর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়ার মালিকানাধীন ১০ শতাংশ জমির উপর ভবনটি নির্মাণ করছে সানরাইজ হাউজিং লিমিটেড নামে একটি আবাসন কোম্পানি। এই কোম্পানির মালিক মো. আমান। তার মুঠোফোনের নম্বরে একাধিকবার কল করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।