পুলিশের ভয়ে ডোবায় ঝাঁপিয়ে পড়ে যুবক নিহত
প্রেস নারায়ণগঞ্জ: পুলিশ খুঁজতে এসেছে শুনে ভয়ে বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত ডোবায় ঝাপ দিয়ে নিখোঁজ হন নিলয় আহাম্মেদ (২৭) নামে এক যুবক৷ তিনদিন পর বুধবার (৪ মে) দুপুরে ওই ডোবা থেকেই তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার বাগবাড়ি এলাকায়৷
নিহত নিলয় আহাম্মেদ ওরফে বাবু ওই এলাকার শোভা মিয়ার ছেলে৷ তার হোসিয়ারি পোশাকের ব্যবসা ছিল৷
নিহতের পরিবারের লোকজন জানান, গত রোববার রাতে নিলয়ের খোঁজে বাড়িতে আসে পুলিশ৷ ভয়ে বাড়ির পাশের ডোবায় ঝাপ দেয় নিলয়৷ পুলিশ ডোবাতে কিছুক্ষণ খোঁজাখুজি করে তাকে না পেয়ে চলে যায়৷ তিনদিন পর ওই ডোবাতেই তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা৷ পরে পুলিশের উপস্থিতিতে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা মরদেহ উদ্ধার করেন৷
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, হাসিনা বেগম নামে স্থানীয় এক নারীর সাথে দ্বন্দ্ব ছিল নিলয়ের৷ ওই নারীর সাথে বন্দর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রওশন ফেরদৌসের ভালো সম্পর্ক ছিল৷ ওই নারীর কথাতেই নিলয়ের বাড়িতে যান এসআই রওশন ফেরদৌস৷
তবে যোগাযোগ করা হলে বন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, নিহত নিলয়ের বিরুদ্ধে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ নেই৷ এ ঘটনায় এসআই রওশন ফেরদৌসকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে৷ তার কোন অপরাধ বা দায়িত্বে অনিয়ম পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে৷
এদিকে ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়৷ পরে অভিযুক্ত হাসিনা বেগম ও তার কন্যাকে আটক করে পুলিশে দেন স্থানীয়রা৷ পুলিশ তাদের নিয়ে যাবার সময় স্থানীয়রা আবারও উত্তেজিত হয়ে পড়ে৷ পুলিশের উপরে চড়াও হন নিহতের স্বজনরা৷ পরে থানার ওসি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন৷
নিহতের ছোট ভোই ইমন আহাম্মেদ বলেন, পুলিশ তার ভাইকে অযথাই হয়রানি করেছে৷ নিলয় যখন ডোবায় ঝাপ দেয় তখন পুলিশ ইট দিয়ে ঢিলও মেরেছে৷
মা লিলি বেগম বলেন, ‘পুলিশের ধাওয়া খাইয়া পোলায় ঝাপ দেয়৷ আমার পোলারে না পাইয়া থানায় গিয়া জিডি করছি। ওই মহিলায় আমার পোলার নামে মিছা অভিযোগ দিয়া দারোগা ফেরদৌসরে দিয়া আমার পোলারে লাশ বানাইলো। আমি এর বিচার চাই।’
বন্দর থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, সুরতহালে নিহতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে৷ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷
তিনি আরও বলেন, হাসিনা নামে ওই নারী থানায় আছেন৷ নিহতের স্বজনরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷ তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷
প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম