২৮ মার্চ ২০২৪

প্রকাশিত: ০১:১০, ৪ এপ্রিল ২০২৩

আপডেট: ২২:২৭, ৮ এপ্রিল ২০২৩

বন্দরে বিরোধের জেরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

বন্দরে বিরোধের জেরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের বন্দরে বিরোধের জেরে মো. মেরাজুল ইসলাম (২৮) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে৷ আহত হয়েছেন আলামিন (২৭) নামে আরেকজন৷

সোমবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বন্দর অঞ্চলের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের রূপালী আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে৷

হতাহত দু’জনই মাত্র ২০ দিন আগে সন্ত্রাসী দুই বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলার আসামি ছিলেন৷ গত ১৩ মার্চ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বন্দরের নূরবাগ এলাকার রাজু আহমেদ ওরফে স্ট্যান্ড রাজু এবং চিনারদী এলাকার আকিব হাসান রাজু ওরফে চুইল্লা রাজু বাহিনীর মধ্যে ওই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনরা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় ইফতারের সময় রূপালী আবাসিক এলাকায় মেরাজের ওয়ার্কশপে ধারালো অস্ত্রসহ একদল সন্ত্রাসী ঢুকে তাকে ও তার বন্ধুকে কুপিয়ে জখম করে৷ গুরুতর জখম অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মেরাজ সেখানে মারা যায়৷

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, রাত সাড়ে আটটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মেরাজুল৷ আলামিন নামে অপরজন চিকিৎসাধীন আছেন৷

নিহত মেরাজুল বন্দরের ছালেহনগর এলাকার আজহারুল ইসলামের ছেলে৷ আহত আল আমিন রুপালী আবাসিক এলাকার জাভেদ মিয়ার ছেলে৷

স্থানীয় সোয়েব ও রবিনের নেতৃত্বে মানিক, রানা ও নাদিমসহ কয়েকজন মিলে ধারালো অস্ত্রসহ মেরাজুল ও আলামিনের উপর হামলা চালায় হয় বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের৷

অভিযুক্তদের মধ্যে সোয়েব ও রবিন স্থানীয় কাউন্সিলর শাহীন মিয়ার চাচাতো ভাই৷ অভিযুক্ত যে কয়জনের নাম এসেছে তারা সকলেই চিনারদীর রাজুর অনুসারী বলে জানান স্থানীয়রা৷

নিহতের ভাই মো. সম্রাট বলেন, ‘হামলাকারীদের মধ্যে কাউন্সিলরের আত্মীয়-স্বজনও আছে৷ ওদের সাথে ড্রেজার ব্যবসা নিয়া আমার ভাইর ঝগড়া ছিল৷ হামলা যারা করছে তাদের কয়েকজনের মুখ বাঁধা ছিল বলে যারা দেখছে তারা কইছে৷’


স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্র বলছে, বন্দরের নূরবাগের রাজু আহমেদ ও চিনারদীর আকিব হাসান রাজুর উভয় বাহিনীকে বন্দরের যুবলীগ নেতা খান মাসুদ নিয়ন্ত্রণ করেন৷ গত ১৩ মার্চ সংঘর্ষের পর উভয়পক্ষ দু’টি মামলা করে থানায়৷ আকিব হাসান রাজুর পক্ষের মামলায় নিহত মেরাজ সাত নম্বর এবং আহত আলামিন পাঁচ নম্বর আসামি ছিলেন৷ সম্প্রতি হাইকোর্ট থেকে জামিন নেবার পর এলাকায় ফিরলে সোমবার সন্ধ্যায় তাদের উপর হামলার ঘটনা ঘটলো৷

নিহত মেরাজ ও আহত আলামিন দু’জনই রাজু আহমেদ ওরফে স্ট্যান্ড রাজুর অনুসারী৷ গত ১৩ মার্চের ওই সংঘর্ষের জেরেই এ হামলা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের৷

এদিকে মেরাজের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতে তার পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের উপর হামলা ও স্থানীয় কাউন্সিলরের বাড়ি ও কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহীন মিয়া বলেন, ‘আমি হামলার খবর কিছুই জানি না৷ আমার পাশের বাড়ি সোয়েব ও রবিনদের৷ ওরা সম্পর্কে আমার চাচাতো ভাই৷ ওরা চুইল্লা রাজুর পক্ষের লোকজন৷ দুই রাজুর মধ্যে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব৷ ওই দ্বন্দ্বের জেরেই এটা ঘটছে বলে শুনতেছি৷ কিন্তু এ ব্যাপারে অযথাই জড়িয়ে রাত দশটার দিকে আমার বাড়িঘরে হামলা করছে স্যান্ড রাজুর লোকজন৷ নাদিম নামে একটা ছেলেকেও তারা কুপিয়েছে বলে শুনেছি৷’

সন্ধ্যার ওই হামলার ঘটনার পর থেকে বন্দরের রূপালী আবাসিকসহ আশেপাশের এলাকাগুলোতে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে৷

রাত সাড়ে এগারোটায় বন্দর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘এলাকায় পুলিশ আছে৷ ঠিক কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে৷ হতাহতের ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন৷ তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি৷’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়