২৯ মার্চ ২০২৪

প্রকাশিত: ১৪:৪২, ১৯ জুলাই ২০২১

আপডেট: ১১:৩৪, ২৪ জুলাই ২০২১

বাড়তি আয়ের আশায় খাইট্টা-পাটি নিয়ে বসেছেন তারা

বাড়তি আয়ের আশায় খাইট্টা-পাটি নিয়ে বসেছেন তারা

সৌরভ হোসেন সিয়াম (প্রেস নারায়ণগঞ্জ): নারায়ণগঞ্জ শহরের ৫ নম্বর ঘাট এলাকায় গাছের কাজ করেন মধ্যবয়সী মোহাম্মদ সোবহান। একদিন বাদে কোরবানি ঈদ। এ উপলক্ষে মাংস কাটার জন্য প্রয়োজনীয় কাঠের খাইট্টার পসরা সাজিয়ে বসেছেন তিনি। গত ২০ বছর যাবৎ কাজের সুবাদে নারায়ণগঞ্জে থাকেন বরিশালের কুয়াকাটার বাসিন্দা সোবহান। প্রতি বছরই কোরবানির ঈদের দু-একদিন আগে সীমিত লাভের আশায় কাঠের খাইট্টা নিয়ে বসেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

সোমবার (১৯ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ নগরীর মন্ডলপাড়া এলাকায় বঙ্গবন্ধু সড়কের এক পাশে কাঠের খাইট্টা নিয়ে বসতে দেখা যায় সোবহানকে। তার মতো শুভ, সবুজ, শাকিলসহ দশ-বারোজন খাইট্টা ও পাটি নিয়ে বসেছেন। তারা কেউই অন্য সময় এই কাজ করেন না। কোরবানির পশু জবাইয়ের পর মাংস কাটার জন্য এই উপকরণ অতীব জরুরি। এই সময় চাহিদাও থাকে প্রচুর। এই সময়টিকে কেন্দ্র করে অনেকেই সীমিত লাভের আশায় খাইট্টা ও পাটি বিক্রিতে নেমে পড়েন। শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন অলিগলিতেও দেখা যায় তাদের।

মোহাম্মদ সোবহান বলেন, তেতুল, চাম্বুল, রেইন ট্রি, কড়ই, আম গাছের খাইট্টা মেলে বাজারে। তবে তেতুল গাছের খাইট্টা মজবুত হয়। এর কদর বেশি বলে দামও বেশি। শহরের ৫ নম্বর ঘাট এলাকা থেকে চার ধরনের গাছ কিনে তা জিমখানার একটি করাতকলে বিভিন্ন আকারে কাটিয়ে এনেছেন। সব মিলিয়ে আঠারো হাজার টাকা খরচ পড়েছে তার। বাজার ঠিক থাকলে অন্তত ছয় হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন বলে আশাবাদী সোবহান।

বাড়তি আয়ের আশায় মন্ডলপাড়া মোড়ে খাইট্টা ও পাটি নিয়ে বসেছেন শাকিল ও শুভ। বিভিন্ন আকারের দেড়শ’ পিস খাইট্টা আছে তাদের কাছে। আকারভেদে সেগুলো বিক্রি করছেন ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়। খাইট্টা প্রতি ৫০ টাকার মতো লাভ করছেন বলে জানান। শুভ বলেন, ফতুল্লার লঞ্চঘাট ও দাপা এলাকা থেকে গাছ কিনে তা করাতকলে কাটিয়ে নিয়ে আসেন। পাটি বিক্রি করছেন ১৫০ টাকায়।

অন্য সময় কেবল কসাইরা খাইট্টা-পাটি কিনে থাকেন। তবে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে এসবের চাহিদা বাড়ে। এই সময়ে মৌসুমি বিক্রেতাদের দেখা মেলে। অন্য সময় দিনমজুরের কাজ করলেও গত পাঁচদিন যাবৎ খাইট্টা বিক্রি করছেন শাকিল। তার কাছে কেবল তেতুল গাছের খাইট্টা রয়েছে বলে জানান। সব মিলিয়ে ছয়শ’ খাইট্টা আনেন। ইতিমধ্যে আড়াইশ’ বিক্রি করে ফেলেছেন। সবচেয়ে বড় আকারের খাইট্টা ৮০০-৯০০ টাকায়ও বিক্রি করেছেন বলেন জানান শাকিল। এই বেচা-কেনা চলবে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত।

খাইট্টা ও পাটির দরদাম করছিলেন রহমান ও মজিদ। তারা এক ব্যক্তির কোরবানির গরু কাটার দায়িত্ব পেয়েছেন। সেজন্য কিনতে এসেছেন খাইট্টা ও পাটি। তারা বলেন, অন্যবারের তুলনায় এইবার এসবের দাম বেশি। দরে মিলছে না। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে গাছ কেনা থেকে শুরু করে কাটিয়ে আনার খরচও বেড়েছে।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়