২৪ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২০:৫২, ২৭ অক্টোবর ২০২০

বিজ্ঞানমনস্কতা তৈরি না হওয়ায় তল্লায় বিস্ফোরণ: ডিসি

বিজ্ঞানমনস্কতা তৈরি না হওয়ায় তল্লায় বিস্ফোরণ: ডিসি

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, তল্লার মসজিদে যে বিষ্ফোরণ ঘটলো তাতে এলাকার মানুষ, আমরা নীতিনির্ধারক যাদের দেখভাল করার দায়িত্ব ছিল তাদের মধ্যে বিজ্ঞানমনষ্কতা তৈরি হয়নি। এ কারণেই গ্যাসের পাইপ লাইনের উপর অনায়াসে মসজিদ তুলে ফেলেছি। মসজিদ নির্মাণ করেই ক্ষ্যান্ত হইনি। হঠাৎ একটু গরম লাগতেই দুই নম্বর লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দিচ্ছি। ফলে আমাদের থেকে ৩৪ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘৪১তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমরা দেখি ড্রেনে পলিথিন আটকে যাচ্ছে। ফলে আধা ঘন্টার বৃষ্টিতে একটি কাঁচা বাজারের সকল পণ্য পানিতে ভেসে যাচ্ছে। এখানেই আমাদের বিজ্ঞানমনস্কতার অভাব। বিজ্ঞানমনস্ক পরিবশে গড়ে তুলতে না পারলে যেই উন্নয়ন করি না কেন সেই ধারা ধরে রাখতে পারবো না। বিজ্ঞানমনষ্ক হওয়ার জন্য কেবল সায়েন্স পড়তে হবে এমন নয়। তার পরিবেশটা বিজ্ঞানমনস্ক হিসেবে গড়ে দিতে হবে। এই উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের একসাথে কাজ করতে পারলে আমরা সফল হবো। আমাদের একটা বিজ্ঞানমনস্ক জাতি দরকার। এটা ছাড়া আমাদের দেশের সমৃদ্ধতা, দেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের এগিয়ে যাওয়ার ধারাকে ধরে রাখার জন্য আমাদের বিজ্ঞানী ও মনিষীদের সবাইকে প্রয়োজন।

অনলাইন মাধ্যম জুম অ্যাপের মাধ্যমে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রেবেকা সুলতানার সভাপতিত্ব ও নারায়ণগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় এন্ড কলেজের শিক্ষক আরিফ মিহিরের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ বেলা রানী সিংহ, জেলা শিক্ষা অফিসার শরীফুল ইসলাম, বিদ্যানিকেতন হাই স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সদস্য সাংবাদিক আব্দুস সালামসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ সংযুক্ত ছিলেন। অনুষ্ঠানে পেশাদার বিজ্ঞানবক্তা আসিফও সংযুক্ত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান চর্চায় প্রাধান্য দিয়ে ডিসি জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা অনেক পড়া মুখস্ত জানতাম কিন্তু সেই সময়ে তা বাস্তবে দেখে অনুভব করার সুযোগ ছিল না। ব্যাঙের ব্যবচ্ছেদ করতে গিয়ে তা মানুষের জীবনে কিভাবে কাজে লাগানো যায় তা আমরা আত্মস্থ করতে পারিনি। নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করার জন্য এই প্রোগ্রামের বাইরে গিয়ে আমরা ব্যতিক্রমী কিছু করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের লাইব্রেরি আছে, আমাদের বিজ্ঞান শিক্ষক আছে এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান পড়ার আগ্রহ আছে। কিন্তু কোথায় জানি সমন্বয়টা ঘটছে না। সেই সমন্বয়টা আমাদের ঘটাতে হবে। আমাদের অনুভূতির মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা নিয়ে আসতে হবে।

অপ্রতুল বিজ্ঞান শিক্ষকের কথা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, এখানে আমাদের ব্যর্থতা আছে। অনেক লাইব্রেরিতে বিজ্ঞান বই নাই, অনেক বিজ্ঞানাগার খোলা হয় না। তালাটা এমনভাবে মারা হয়েছে অনেকদিন পর আমরা পরিদর্শনে গেলে অধ্যক্ষ খোঁজে কার কাছে যেন চাবি আছে। এভাবে আধা ঘন্টা পার হয়ে গেলেও বিজ্ঞানাগার আর খোলা হয় না। সেই জায়গাগুলোতে আমাদের কাজ করতে হবে। ওই বিজ্ঞানাগার বা লাইব্রেরিটা আমার প্রাণের জায়গা বা প্রিয় জায়গায় নিয়ে আসতে হবে। এভাবেই আমরা একজন জগদীশ চন্দ্র বসু পাবো। আমরা চাকুরির আশায় ঘুরি অথবা দ্রুত পাস করার আশায় ঘুরি। বাবা-মা চায় সন্তান পাশ করে বের হবে। সেই জায়গায় না গিয়ে আমরা যদি ছেলেমেয়দের বিজ্ঞানমনষ্ক করতে পারি তাহলেই আমরা সফল হবো।

আগামী ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চলবে বিজ্ঞান মেলা। করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা যার যার প্রতিষ্ঠানে বসে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে সচেতন থেকে প্রজেক্ট তৈরি করে অনলাইনে তা প্রেজেন্ট করবে।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়