২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২০:২০, ২১ অক্টোবর ২০২০

আপডেট: ১৭:৪৮, ২২ অক্টোবর ২০২০

মন্দিরজুড়ে মাস্ক, করোনা সতর্কতায় ব্যতিক্রমী সজ্জা (ভিডিওসহ)

মন্দিরজুড়ে মাস্ক, করোনা সতর্কতায় ব্যতিক্রমী সজ্জা (ভিডিওসহ)
  • সৌরভ হোসেন সিয়াম (প্রেস নারায়ণগঞ্জ): করোনা পরিস্থিতিতে দুর্গোৎসবের সজ্জায় ব্যতিক্রম আনা হয়েছে নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জের শ্রী শ্রী বলদেব জিউর আখড়া ও শিবমন্দিরে। মন্দিরের সিলিং ও মন্ডপজুড়ে লাগানো হয়েছে মাস্ক, ঝুলছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। দু’টি দুর্গা প্রতিমায়ও দেওয়া হয়েছে ভিন্ন রূপ। প্রতিমার দশ হাতে রয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, স্টেথোস্কোপসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী। সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিতেই এমন আয়োজন বলে জানিয়েছে মন্দির কমিটির লোকজন।

মহামারী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাব পড়েছে সর্বত্র। ক্ষুদ্র এই ভাইরাস বদলে দিয়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। করোনা পরিস্থিতিতে সীমিত হয়ে এসেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় শারদীয় দুর্গোৎসবের আয়োজন। কোভিড-১৯ সংক্রমন রোধে মাস্ক পরিধানের নির্দেশনা রয়েছে সরকারি পর্যায় থেকে। বুধবার (২১ অক্টোবর) সকালে দেশের ব্যস্ততম পাইকারি বাজার নিতাইগঞ্জ মোড়ে অবস্থিত বলদেব জিউর আখড়া মন্দিরে প্রবেশ করে দেখা যায়, মাস্কের বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। মন্দিরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে সিলিংয়ে ঝোলানো মাস্ক। দুর্গামন্ডপের সজ্জাও হয়েছে মাস্ক দিয়ে। ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বোতল। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিকী রূপ পেয়েছে প্লাস্টিকের তৈরি খেলনা বল। দু’টি দুর্গা প্রতীমাও স্থাপন করা হয়েছে ভিন্ন আঙ্গিকে। থার্মোকল (ককশিট) দিয়ে তৈরি প্রতিমা দু’টির দশ হাতে দেওয়া হয়েছে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, স্টোথোস্কোপ, ফার্স্ট এইড কিট বক্স, সিরিঞ্জসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী। দেবীর হাতে ত্রিশূল পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে সিরিঞ্জ।

মন্দির পরিচালনা ও পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জয় কে রায় চৌধুরী বলেন, এবার অসুর হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকে। এই ভাইরাস থেকে মুক্তি দিয়ে সৃষ্টিকে রক্ষা করবেন দেবী। ব্যতিক্রমী সজ্জার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমন রোধে সবচেয়ে সহজলভ্য এবং কার্যকরী উপায় হচ্ছে মুখে মাস্ক পরিধান। কিন্তু এই বিষয়টি অনেকেই মানছেন না। পূজার সময় লোক সমাগম হবে। মন্দিরে প্রবেশের পরই মাস্ক পরার বিষয়টি যেন সকলের মাথায় আসে সেজন্যই এই ব্যবস্থা।’ সজ্জার কাজে প্রায় ৩ হাজার মাস্ক ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান জয় কে রায়। এছাড়া ১৫ হাজার মাস্ক বিতরণের জন্য রাখা হয়েছে। মন্দিরের প্রবেশ পথেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণের কাজে নিয়োজিত থাকবে স্বেচ্ছাসেবক দল।

করোনা পরিস্থিতিতে উৎসবের চেয়ে পূজাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বাদ দেওয়া হয়েছে অনেক আয়োজন। আলোকসজ্জা ও শব্দযন্ত্রের আয়োজনও কমিয়ে আনা হয়েছে। অর্চনা, অঞ্জলি ও পূজার সময় সরকারি নির্দেশনাগুলোকে গুরুত্বসহকারে পালন করা হবে জানালেন মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রবাস সাহা। তিনি বলেন, সকল আয়োজন সীমিত করা হয়েছে। তবে মন্দিরের বাইরে ফটোশ্যুট কর্ণার থাকবে। সেখানে ছোট আকারে আলোকচিত্র প্রদর্শনীও করা হবে। প্রসাদ হিসেবে প্রতি বছর খিচুড়ি বিতরণ করা হয়। এই আয়োজনও বাদ পড়েছে এবার। তবে দশমীর সিঁদুর খেলা সীমিত আকারে করা যায় কিনা তা নিয়ে ভাবছে মন্দির পরিচালনা কমিটি।

দেড়শ’ বছর পুরোনো এই মন্দিরের পুরোহিত পঙ্কজ চক্রবর্তী বলেন, প্রতি বছর দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনে মর্ত্যে নেমে আসেন দেবী। এ বছর করোনাই অসুর। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে সৃষ্টিকে রক্ষা করতেই আসছেন দেবী মা।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়