১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ৮ নভেম্বর ২০২২

আপডেট: ০৯:০১, ৯ নভেম্বর ২০২২

মর্গ্যান স্কুলে ‘স্পেশাল ক্লাসের ফি’ দিতে না পারা ছাত্রীকে শাস্তি

মর্গ্যান স্কুলে ‘স্পেশাল ক্লাসের ফি’ দিতে না পারা ছাত্রীকে শাস্তি

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: কথিত ‘স্পেশাল ক্লাস’ এর ফি ছয় হাজার টাকা না দেয়ায় স্কুলের টেষ্ট পরীক্ষার হল থেকে উঠিয়ে ‘শাস্তি হিসেবে’ প্রায় পৌনে এক ঘন্টা দাড় করিয়ে রাখা হয়েছে এক ছাত্রীকে। ‘বেতন দিতে পারো না এখানে মরতে এসেছো কেনো, অন্য স্কুলে গিয়ে মরো এমন’ কথা বলা হয়েছে বলেও অভিযোগ ওই ছাত্রীর৷ ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে৷

অভিযোগ স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক লায়লা আক্তারের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে ঐ শিক্ষকাকে ফোন দেয়া হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সময়ে এসে কথা বলতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সময়ের বাইরে ফোন দেয়া অপরাধ।’

মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ওই ছাত্রী জানায়, মঙ্গলবার ছিল তার এসএসসি’র টেষ্ট পরীক্ষার ভূগোল পরীক্ষা। তার বাবা একটি প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি গার্ড। মেধাবী ছাত্রী টিউশনি করে নিজের খরচ নিজেই চালায়। তার রোল নাম্বার তিন। স্কুলে তার কোনো মাসের বেতন বাকি নেই। পরীক্ষার ফি-ও দেয়া। তবে কথিত ‘স্পেশাল ক্লাস’ এর এর ফি সে দিতে পারেনি। স্পেশাল ক্লাস সে করতেও চায়নি। কারণ এটি তার দরকার নেই। এছাড়া এটির ফি দেয়ার তার সাধ্য নেই। সে স্কুল থেকে বেতন মওকুফ চেয়েছিল৷ সেটি তাকে না দিয়ে তখন বলা হয়েছিল পুরো বেতন দিয়ে গেলে স্পেশাল ক্লাসের ফি নেয়া হবে না। সে অনুযায়ী সে স্পেশাল ক্লাস করে। কিন্তু এখন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক তার কাছে স্পেশাল ক্লাসের ফি চাচ্ছে। না দেয়ায় এর আগে তাকে দুই দিন ক্লাস থেকে বের করে দাড় করিয়ে রাখা হয়। মঙ্গলবারও পরীক্ষার সময় তাকে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা ক্লাস থেকে বের করে দাড় করিয়ে রাখে এই সহকারী প্রধান শিক্ষক৷

ছাত্রীর মা জানায়, পরীক্ষার মধ্যে এমন অপমানে মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরীক্ষা শেষ করে বের হয়ে সে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যায়। তার জ্বর এসে যায়।

তিনি বলেন, শিশু হলেও তারও মান-ইজ্জত আছে। বেতন দিতে পারবে না বলে এভাবে অপমান করতে হবে? একজন ধনী মানুষের বা ক্ষমতাবান মানুষের সন্তান হলে কি শিক্ষিকা এমনভাবে অপমান করতে পারতো?

তিনি জানান, বুধবার তার মেয়ের বিজ্ঞান পরীক্ষা। পরীক্ষার আগে তার অভিভাবককে নিয়ে ও পরীক্ষার ফী কমপক্ষে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে স্কুলে যেতে বলেছে। নইলে তাকে পরীক্ষা দিতে দেবে না বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষকা লায়লা আক্তারকে ফোন দেয়া হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সময়ে এসে কথা বলতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সময়ের বাইরে ফোন দেয়া অপরাধ।’

এ ব্যাপারে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাচ্চার অভিভাবককে যেহেতু স্কুলে দেখা করতে বলা হয়েছে তারা দেখা করুক। দেখা করার পরে যদি স্কুলের শিক্ষকদের কথা তাদের মনপুতঃ না হয় তাহলে আমার সাথে কথা বলবে। আমি চেষ্টা করবো তাদের সমস্যা সমাধান করতে।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়