২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আপডেট: ১৬:৫৫, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১

মাওলানা আউয়ালের অভিযোগের জবাব দিলেন মেয়র আইভী

মাওলানা আউয়ালের অভিযোগের জবাব দিলেন মেয়র আইভী

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের বিরুদ্ধে নগরীর একটি মাদরাসা ভেঙে ফেলা এবং আরও দু’টি মসজিদ ও মাদরাসা ভাঙতে চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন জেলা হেফাজতে ইসলামের আমির ও ডিআইটি মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল আউয়াল। সম্প্রতি ধর্মীয় এই নেতার দেওয়া এমন বক্তব্যে শহরজুড়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়। মেয়রের পক্ষে-বিপক্ষে চলে নানান আলোচনা। তবে এসব অভিযোগের জবাব দিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।

সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) মসজিদ ও মাদরাসা ভাঙার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে এ প্রতিবেদকের কাছে বিষয়টি খোলাসা করেন। তিনি মাওলানা আব্দুল আউয়ালের অভিযোগের জবাব দেন।

গত শুক্রবার ডিআইটি জামে মসজিদে জুমার নামাজের বয়ানে মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, মাসদাইর কবরস্থানের পাশের মাদরাসা মেয়র ভেঙে দিয়েছেন। নিজস্ব অর্থায়নে করে দেওয়ার কথা থাকলেও বছরখানেক পার হয়েছে কিন্তু মাদরাসা আর করে দেন নাই। তিনি আরও বলেন, ‘খবর পেলাম বাগে জান্নাত মসজিদ ও মাদরাসা ভাঙার জন্য লোক পাঠিয়েছিল। সিটির জায়গা দাবি করে এটিকে ভেঙে পার্ক বানানোর কথা বলছেন। এখন আবার আলোচনা শুনছি, ডিআইটি মসজিদের সামনে নাকি ফ্লাইওভার বানানো হবে। আর শেখ রাসেল পার্কের দর্শনার্থী নারী-পুরুষ সব মসজিদের উপর দিয়ে চলাচল করবে। ডিআইটি মসজিদের সামনে ফ্লাইওভার কোনদিনও বাস্তবায়িত হতে দিবো না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শুরুতে মাসদাইরে অবস্থিত সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় কবরস্থান সংলগ্ন মাদরাসা ভাঙা প্রসঙ্গে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী দাবি করেন, ওই মাদরাসা ভাঙা হয়নি। ফতুল্লার শোভন গার্মেন্টস নামে পোশাক কারখানার মালিক আবু আহাম্মেদ সিদ্দিক মাদরাসাটি সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে তার নিজ অর্থায়নে অন্যত্র স্থাপন করেন। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মাদরাসা ভাঙা হয়নি দাবি মেয়রের।

‘শহরের চাষাঢ়ার বাগে জান্নাত জামে মসজিদ ও পার্শ্ববর্তী মাদরাসা এবং ডিআইটি জামে মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনা করছেন মেয়র’Ñ আব্দুল আউয়ালের এমন বক্তব্যেরও জবাব দিয়েছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী।

বাগে জান্নাত জামে মসজিদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাগে জান্নাত জামে মসজিদ নির্মাণের জন্য ১৯৮৪ সালে তারু সরদার তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার কাছে ৬ শতাংশ জমি বরাদ্দ চান। তার আবেদনে অনুমতি দেয় পৌরসভা। পরবর্তীতে মসজিদ কমিটির আবেদনে আরও ৪ শতাংশ জমি বরাদ্দ দেন মেয়র। কিন্তু ১০ শতাংশ জমি বরাদ্দ দেওয়া হলেও ৩১ শতাংশ জমি দখলে নিয়েছে মসজিদ কমিটি। যার ১৭ শতাংশে মসজিদ ও বাকি ১১ শতাংশে মাদরাসা নির্মাণ করা হয়েছে। এ নিয়ে মেয়র আপত্তি জানালে মসজিদ কমিটির সাথে তার বৈঠকও হয়। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি মসজিদ কমিটির সাথে নাসিকের বৈঠকে ১৭ শতাংশের উপর মসজিদ নির্মাণ এবং মাদরাসার বাকি ১১ শতাংশ জমি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।’

ডিআইটি মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পাল্টা প্রশ্ন করেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘ডিআইটি মসজিদ ভাঙার প্রসঙ্গ কখনই ওঠেইনি। ফ্লাইওভার নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়নি। এই কথা কারা ছড়িয়েছে তা আমি বুঝতে পারছি না। সিটি কর্পোরেশনের এমন কোনো পরিকল্পনা নেই।’

আইভী বলেন, ‘মসজিদের খতিব সাহেবের অনুরোধে সামনের বসার স্থানটি সৌন্দর্য বর্ধন করেছি। তাঁর ও মুসুল্লিদের অনুরোধে মসজিদের সামনের আতর-টুপির দোকান নিয়েও আপত্তি তোলা হয়নি। এসব কারণে তিনি নিজে এসে আমাকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন। মসজিদ ভাঙার প্রসঙ্গ কেন এখানে এসেছে সেটাই আমার বোধগম্য নয়। তাকে কেউ ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে বলেই আমার মনে হয়।’

সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে তাকে নিয়ে একটি মহল নোংরা রাজনীতিতে মেতেছে বলেও মন্তব্য মেয়র আইভীর। তিনি বলেন, মসজিদ-মাদরাসা ভাঙা প্রসঙ্গও ষড়যন্ত্রের অংশ। তার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তার। একজন সিটি মেয়র হিসেবে তিনি কোনো গোষ্ঠী বা পক্ষের না, সাধারণ জনগণের।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়