‘মুক্ত খালেদা জিয়ার’ মুক্তি চায় বিএনপি নেতারা: আইনমন্ত্রী

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, “বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে৷ অথচ বিএনপি নেতারা তার মুক্তি চায়৷ পত্রিকায় দেখলাম, গতকালও (বুধবার) নেতারা তার মুক্তির দাবি জানিয়ে বক্তৃতা করছেন৷ মুক্ত মানুষের মুক্তি চায় নেতারা৷”

উপস্থিত আইনজীবীদের তিনি প্রশ্ন করেন, “আপনারাও বলেন, মুক্ত মানুষকে কোর্ট কেমনে ‘বেইল’ দেয়?”

বৃহস্পিতিবার (১ ডিসেম্বর) রাতে জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন৷

মন্ত্রা বলেন, “২০০৭ ও ২০০৮ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল তখন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দু’টি দুর্নীতির মামলা হয়েছিল৷ সে মামলার তদন্ত হয়, এফআইআর ও চার্জশিট হয়৷ প্রতিটা সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতের শরনাপন্ন হন৷ নিম্ন আদালত থেকে আপিল বিভাগ পর্যন্ত যান তারা৷ আদালত তাকে সাজা দেয়৷”

“জেলে থাকাবস্থায় তার পরিবার থেকে খালেদা জিয়ার শরীর অত্যন্ত খারাপ বলে দরখাস্ত করা হয়৷ আইনের যেকোন প্রক্রিয়ায় তাকে জেল থেকে ছাড়ার প্রার্থনা করা হয়৷”

“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মহানুভবতায় ৪০১ ধারায় দন্ডাদেশ স্থগিত রেখে দুই শর্তে তাকে মুক্তি দিয়েছেন” বলে জানান আইনমন্ত্রী৷

তিনি আরও বলেন, “তারপরও বিএনপির লোকেরা বলে তাকে ‘বেইল’ দিতে হবে৷ আপনারাও বলেন, মুক্ত মানুষকে কোর্ট কেমনে ‘বেইল’ দেয়? মনে রাখতে হবে, হাইকোর্ট, আপিল বিভাগে তাকে মুক্তি দেয় নাই, তাকে বেইল দেওয়া হয় নাই, মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে৷”

আনিসুল হক বলেন, “খবরের কাগজে দেখছি তাকে মুক্তি দিতে বলছেন নেতারা৷ উনি তো মুক্ত৷ উনি ওনার বাসায় আছেন৷ প্রায়সময় চিকিৎসা নেবার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে যান, চিকিৎসা নিয়ে আবার বাসায় যান৷ ওনাকে মুক্তি দেওয়ার আর কী আছে?”

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন৷ বিএনপির একাধিক নেতা এমন কথা বলেছেন৷ এ প্রসঙ্গ টেনে আইনমন্ত্রী বলেন, “১০ ডিসেম্বর ওনাকে দিয়ে বক্তৃতা দেওয়াবেন৷ ওনাকে মুক্তি দেওয়ার সময় উনি রাজনীতি করতে পারবেন না এমন কোন শর্ত দেওয়া হয়নি৷ কিন্তু উনি হাটাচলাও করতে পারেন না এমন কথা বলে চিকিৎসার জন্য মুক্তি চাওয়া হয়েছিল৷ তিনি যদি সমাবেশে বক্তৃতা করেন তার মানে আবেদনে মিথ্যা বলা হয়েছিল৷”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘দেশে আইনের সুশাসন’ দিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন আনিসুল হক৷

তিনি বলেন, “স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই উচ্চস্বরে আইনের শাসনের জন্য লড়াই করতে পারছি৷ বঙ্গবন্ধুকে অনেকবার আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছে৷ জেলগেইট থেকেও তাকে গ্রেপ্তার করা হতো৷ আমরা এখন স্বাধীন৷ আমাদের মুখ মলিন হওয়ার মতো কিছু হয় নাই৷ আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি৷ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই আইনের সুশাসন দিয়েছেন৷”

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি সোচ্চার জানিয়ে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানান মন্ত্রী৷

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সুপ্রীম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দীন, স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান ও লিয়াকত হোসেন খোকা প্রমুখ৷