রূপগঞ্জে রফিক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে জমি দখল: গণশুনানিতে কৃষকরা
প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নে কয়েক হাজার বিঘা জমি ভরাটের অভিযোগে করা রিটের প্রেক্ষিতে গণশুনানির আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে আয়োজিত ওই গণশুনানিতে অংশ নিয়ে মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য দিয়েছেন ভুক্তভোগী জমির মালিকরা। তাদের অভিযোগ, কায়েতপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে ইউনিয়নের ৪২টি গ্রামের অন্তত সাড়ে সাত হাজার বিঘা জমি অবৈধভাবে বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তোফাজ্জল হোসেনের কার্যালয়ে এই গণশুনানির আয়োজন করা হয়। এডিসি তোফাজ্জল হোসেন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ৫০ জন কৃষক শুনানিতে অংশ নেন। শুনানিতে মৌখিকভাবে অভিযোগ শোনার পাশাপাশি প্রত্যেক কৃষকের কাছ থেকে আলাদাভাবে লিখিত অভিযোগ রাখা হয়েছে। জমি ভরাট বন্ধে রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে আদালত একটি প্রতিবেদন চেয়েছে। সেই প্রতিবেদনের জন্যই এই গণশুনানির আয়োজন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণশুনানিতে অংশ নেওয়া কৃষকরা জানান, প্রায় তিন বছর যাবৎ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে কায়েতপাড়ায় জমি ভরাট হচ্ছে। কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, তার ভাই নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য মিজানুর রহমান ও সফিকুল ইসলাম জমি ভরাটের কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত অবৈধভাবে সাড়ে সাত হাজার বিঘা জমি ভরাট করা হয়েছে। ভরাটের মধ্যে পড়েছে বাড়িঘর, আবাদী জমি ও জলাশয়। স্থানীয়ভাবে প্রতিবাদ, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী জমির মালিকরা। স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকেও সহযোগিতা পাননি বলে জানান তারা। পরে বাধ্য হয়ে উচ্চ আদালতে একাধিক রিট করেন তারা।
ভুক্তভোগীদের মধ্য থেকে উচ্চ আদালতে রিট করা কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদ আলী বলেন, ‘কৃষকদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে। এজন ইউপি চেয়ারম্যান পুরো একটি ইউনিয়ন দখল করে নিয়েছেন। অথচ এসব নিয়ে কোন কথা বলা যাচ্ছে না। কথা বললেই কৃষকরা মারধরের শিকার হচ্ছেন। এর প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করার পর আদালত জমি ভরাটের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। কিন্তু দখলদাররা সে আদেশ অমান্য করে এখনো জমি ভরাট চালিয়ে যাচ্ছে।’
তবে গণশুনানির স্থান ও প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কায়েতপাড়া ভূমিদস্যু প্রতিরোধ আন্দোলনের আহ্বায়ক মঈন উদ্দিন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গণশুনানির আয়োজন করা হলে আরও বেশি মানুষ শুনানিতে অংশ নিতে পারতেন বলে অভিমত তার। এই প্রসঙ্গে এডিসি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গণশুনানির আয়োজন করলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পূর্বেও আমরা গিয়েছি। ভয়ে অনেকেই সে সময় কথা বলেননি। ক্ষতিগ্রস্তরা নির্ভয়ে যাতে কথা বলতে পারেন সেজন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শুনানির আয়োজন করা হয়।’
প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম