২৯ মার্চ ২০২৪

প্রকাশিত: ১৮:৪৬, ১৩ নভেম্বর ২০২১

আপডেট: ১৮:৪৬, ১৩ নভেম্বর ২০২১

‘শামীম ওসমান চাঁদাবাজি করে হাজার কোটি টাকার মালিক’

‘শামীম ওসমান চাঁদাবাজি করে হাজার কোটি টাকার মালিক’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: ‘শামীম ওসমান পরিবহনে চাঁদাবাজি করে হাজার-হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব, কবি ও সাংবাদিক হালিম আজাদ। শনিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম আয়োজিত মতবিনিময় সভায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

হালিম আজাদ বলেন, ‘স্বাধীন দেশে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে জোর করে টাকা নিয়ে যাচ্ছে। টাকাগুলো নিয়ে যাচ্ছে পরিবহন সন্ত্রাসীরা। নগন্য কিছু মানুষ রাতারাতি শত শত কোটি টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে। আমি তো বলেই দিচ্ছি, যেই শামীম ওসমান মানুষের পকেট থেকে চাঁদা তুলে নিয়ে চলতো, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা যাওয়ার বাসভাড়া থাকতো না। সেই শামীম ওসমান পরিবহনে চাঁদাবাজি করে নিজে বাসের মালিক হয়েছে। এখন সে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা একটা উদাহরণ দিলাম। ওর সাথে আরও অনেক পরিবহন সন্ত্রাসী আছে নারায়ণগঞ্জে। ওরা ঢাকার সাথে যোগাযোগ করে এগুলো করে। যখন কোনো মন্ত্রী কথা বলে তখন তার পকেটে ৪০-৫০ হাজার দিয়ে দেয়। ওই মন্ত্রী চুপ হয়ে যায়। বিষয়গুলো এইভাবেই হয়। স্থানীয় ডিসি-এসপিরাও এই চাঁদার থেকে দূরে নয়। আমি জোরালোভাবেই বলছি, সাংবাদিকরাও চাঁদা খায়। গডফাদারদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা নেয়। কোন কোন সাংবাদিক সবসময় গডফাদারদের থেকে চাঁদা নিয়ে আসে তা আমি বলে দিতে পারবো। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায়। এর বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রতিবাদ করা উচিত।’

হালিম আজাদ বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দরকার। শুধু বাসের ভাড়াই বাড়ানো হয়নি। সাধারণ মানুষের পকেট থেকে ডাকাতি করার জন্যে সিন্ডিকেট পরিচালিত সকল যানবাহনের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। সিন্ডিকেটে কারা আছে কারা নেতৃত্বে দেয় সেই বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে। আলোচনায় একজন বলেছেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে যাত্রীবাহী সকল পরিবহনে যারা নেতৃত্বে দেয় তার মধ্যে ওই গডফাদার শামীম ওসমানের হাতটা অনেক বড়, সে-ই সব নিয়ন্ত্রণ করে। তার নিজের যে বাস আছে সেখান থেকে ৬০-৬৫ ভাগ টাকা সে নিয়ে নেয়, অন্যান্যরা বাকি ৪৫ ভাগ টাকা নেয়। শামীম ওসমানরা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে পরিবহনে যে লুটপাটের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে, সেখান থেকে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা নিয়ে নিচ্ছে, সেখানে আঘাত করা উচিত।’

তিনি বলেন, ‘যারা সাধারণ মানুষের পক্ষে থাকে, মানুষের অধিকারের জন্য কথা বলে ওই মানুষের সংখ্যা বাংলাদেশের পরিবেশ অনুযায়ী কমই থাকে। ঢাকা শহরেও ভাড়া নিয়ে এত কথা বলতে দেখিনি যেটা নারায়ণগঞ্জে বলা হচ্ছে। বাংলাদেশের সাংবাদিক সমাজ যারা ঢাকাতে নেতৃত্ব দেয়, বড় বড় যেসব প্রতিষ্ঠান আছে সেখানের অধিকাংশ সাংবাদিকই সরকারের পক্ষে টাকা খেয়ে কথা বলে। কিছু সংখ্যক সাংবাদিকই আছেন যারা মানুষের পক্ষে সর্বক্ষণ কথা বলে। তাদের সংখ্যা খুবই কম। তাই বলে নিজেদেরকে দুর্বল ভাবার কোনো কারণ নাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এইযে ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি সারা বাংলাদেশেই লঞ্চ, ট্রেন, বাসে প্রভাব পড়বে। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলই বড় একটি সভা করে প্রতিবাদ করলো না। এর চাইতে দুঃখজনক ও ভয়াবহ অবনতি আর কখনও আমি লক্ষ করিনি। ভাড়া বাড়িয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা আপনার পকেট থেকে নিয়ে নিচ্ছে। অথচ কেউ এই বিষয়ে কোনো শব্দ উচ্চারণ করছে না। পত্রিকাগুলোতেও জোরালোভাবে কোনো প্রতিবেদন কিংবা সম্পাদকীয় নেই। এগুলো দেখলে কষ্ট লাগে।’

নগরীর ডিআইটিতে আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনের পরীক্ষণ হলে বেলা পৌনে এগারোটায় শুরু হয়ে এই সভা চলে বেলা দেড়টা পর্যন্ত। যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বির সভাপতিত্বে এই মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, জেলা বাসদের সমন্বয়কারী নিখিল দাস, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি হিমাংশু সাহা, সিপিবির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজ, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, নাসিক কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আওলাদ হোসেন, সমমনার সভাপতি দুলাল সাহা, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন মন্টু, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়, সাবেক সভাপতি প্রদীপ ঘোষ বাবু, সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদ প্রমুখ।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়