২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৩:৪৭, ৩০ নভেম্বর ২০২০

আপডেট: ১৯:১৭, ৩০ নভেম্বর ২০২০

শিশু সোয়াইব হত্যায় ৩ জনের ফাঁসি

শিশু সোয়াইব হত্যায় ৩ জনের ফাঁসি

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ৫ বছরের শিশু সোয়াইবকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় তিন আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একই সাথে আরেক আসামিকে দশ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি মামলার ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (৩০ নভেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ রাজিয়া সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকালে আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাদীপক্ষ। রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন সোয়াইবের বাবা নাজমুল হোসেন মাসুম এবং মা আফরোজা আক্তার। তারা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও জানান।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত কৌঁসুলি আব্দুর রহিম বলেন, এই মামলায় ১০ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেয় পুলিশ। পরে ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয় আদালতে। দীর্ঘ সময়ের বিচার কার্যক্রম শেষে তিন আসামির ফাঁসি ও কিশোর অপরাধের ধারায় একজনের ১০ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছেন আদালত। বাকি আসামিদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলার তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী বলেন, নৃশংস এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত থাকা আসামিরা পুলিশের তদন্তে গাফিলতির কারণে বেকসুর খালাস পেয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথাও জানান তিনি।

ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন: সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মঙ্গলেরগাঁও গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে ফজল মুন্সি ওরফে ফজলুল হক মুন্সি, তার ভাই জসিম উদ্দিন রানা ও দুর্গাপ্রসাদ গ্রামের মৃত শফিকুল ইসলামের ছেলে রাজু।

ঘটনার সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়াতে এই মামলার আসামি মৃত আলী আকবরের ছেলে নাছির দশ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন। এদিকে মামলার ছয় আসামি মৃত আলী আকবরের স্ত্রী রিনা বেগম, আব্দুল খালেকের ছেলে ইকবাল, তার ভাই এমদাদ (পলাতক), ইজ্জত আলীর ছেলে আলী আহাম্মদ, ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ফজলুল হকের ছেলে মোশারফ, মৃত খোয়াজ আলীর ছেলে সিরাজ আলী ওরফে সেরশতালী বেকসুর খালাস পেয়েছেন।

এই মামলার বাদী প্রবাস ফেরত ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন মাসুম জানান, ২০১৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মঙ্গলেরগাঁও এলাকায় বাড়ির সামনে খেলছিল তার ৫ বছরের শিশু ছেলে মো. সোয়াইব হোসেন। সেখান থেকে নিখোঁজ হয় সে। এই ঘটনার ৬ দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারি বাড়ির অদূরে একটি ঝোপ থেকে সন্তানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পান। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় শিশু সোয়াইবকে।

বাবা তার বর্ণনা দিয়ে বলেন, সোয়াইবের মরদেহের গলা ও জিহ্বা কাটা এবং চোখ ওপড়ানো অবস্থায় ছিল। এমনকি তার যৌনাঙ্গও কেটে ফেলা হয়েছিল। নৃশংস এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় ছয় আসামি বেকসুর খালাস পাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন নাজমুল হোসেন। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি ফজলুল হক নিজে সাক্ষ্য দিয়েছেন তার ছেলে মোশারফ সোয়াইবের গলা কেটেছে। এছাড়া সেরশতালী, আলী আহাম্মদসহ অন্য আসামিরাও হত্যার ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত। কিন্তু তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এই মামলার সকল আসামির ফাঁসির দাবিতে আমি এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করবো।’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়