২৮ মার্চ ২০২৪

প্রকাশিত: ১৩:১৭, ১৬ জুন ২০১৮

শেষ কবে ঈদ পালন করেছেন জানেন না ডুবুরি কবির হোসেন

শেষ কবে ঈদ পালন করেছেন জানেন না ডুবুরি কবির হোসেন

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: ‘আমার নিজের ঈদ হলো অন্যরা যাতে নিরাপদে ঈদ পালন করতে পারে সে খেয়াল রাখা। ১৬ বছরের চাকরী জীবনে ঈদটা কবে শেষ বার পালন করেছি তা মনে পরে না। ছেলেকে নিয়ে কখনো ঈদগাঁয়ে নামাজ পরতে যাওয়া হয় নি’- বলছিলেন ফায়ার সার্ভিসের একজন ডুবুরি কবির হোসেন।

১৬ বছর ধরে তিনি দেশের সেবা করে যাচ্ছেন। ১৬ বছরের চাকরী জীবনে ভালো পেশাদারিত্বের জন্য তিনি ২ বার পুরষ্কৃত হয়েছেন। যেগুলো হলো, ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স পদক এবং প্রেসিডেন্ট ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স পদক। বর্তমানে তিনি নারায়নগঞ্জ বন্দরে চাকুরীরত আছেন। এর আগে তিনি সিলেট সদরে ছিলেন। সেখানে তিনি একমাত্র ডুবুরি ছিলেন। ফলে গত ৭ বছরে তিনি ঈদ কি তা ভুলেই গেছেন বলে আক্ষেপ করেন। তিনি আরো বলেন, ‘এবছর নারায়নগঞ্জে পোস্টিং হয়েছে। আমার বাড়ি ঢাকায়। প্রায় ৭ বছর পর এবার পরিবারের সাথে গিয়ে তাদের কেনাকাটা করে দিয়ে এলাম। হেড কোয়ার্টারে বলেছিলাম এবার যে করেই হোক ঈদে ছুটির ব্যবস্থা করতে। তারা নিজেদের মধ্যে এটা নিয়ে আলোচনাও করেছেন কিন্তু তারা ব্যবস্থা করতে পারেন নাই।’

ছোট বেলার ঈদ আনন্দ নিয়ে জিজ্ঞেস করতে তিনি বলেন, ‘ছোট বেলা ঈদের দিন মা সেমাই, পোলাও, মাংস রান্না করতেন। বন্ধুরা এক সাথে নামাজ পড়তে যেতাম। ছোট বেলার সবচেয়ে মজার স্মৃতি হলো ঈদের দিন সবাই মিলে বাজি ধরে মার্বেল খেলতাম। সেগুলো খুব মনে পরে।’

তার নিজের ঈদের কেনাকাটা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘২ বছর আগে ১টা পাঞ্জাবি আর পায়জামা কিনেছিলাম ঈদ উপলক্ষে। ঈদের ছুটি পাইনি বলে তা পরাও হয় নি। তাই ভেবেছি এবার সেটাই পরবো যদি সুযোগ পাই তাহলে। আর না পেলে আবার আগামী ঈদের জন্য তুলে রাখবো।’

এবারের ঈদে তিনি কি করবেন তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সকালে ব্যারাকে সকল কর্মকর্তা আর কর্মচারিদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে সবাই একসাথে নামাজ পড়বো। আমাদের বাইরে কোথাও গিয়ে নামাজ পড়ার অনুমতি নেই। সেখানেই সবার জন্য উৎসব ভিত্তিক কিছু ভালো মন্দ রান্না হবে। সময় পেলে সহকর্মীরা একসাথে বসে আড্ডা দিব।’

পরিবারের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বাড়িতে আমার বাবা-মা, স্ত্রী আর ছেলে রয়েছে। আমার ছেলের ১১ বছর বয়স। সে যখন খুব ছোট ছিল; প্রায় ২/১ বছর বয়স, তখন তার সাথে একটা ঈদ করেছিলাম। তার সেটা মনেও নেই হয়তো। তবে এখন সে আমায় কাছে না পেয়ে তেমন মন খারাপ করে না। সে জানে তার বাবা একটা মহৎ কাজ করছেন। সে ঈদে আমায় না দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। তবে আমার স্ত্রী নাকি এখন প্রত্তেক ঈদে বাড়িতে চটপটি বানায়। সেটা এখনো খাওয়া হয়নি। হয়তো পরের ঈদে হবে।’

তিনি বলেন, ‘চাকরি জীবনে আসার আগে ঈদি পেতাম। এখন সেভাবে ঈদি পাই না। বাড়িতে থাকি না তাই কাওকে ঈদি দেয়াও হয় না।’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়