২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ২৯ নভেম্বর ২০২১

আপডেট: ১৯:৪১, ২৯ নভেম্বর ২০২১

সন্তান হারা মায়ের আর্তনাদ

সন্তান হারা মায়ের আর্তনাদ

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নগরীর কিল্লারপুর এলাকার বাসিন্দা সানজিদ দেওয়ান। বাবা রিপন দেওয়ান একজন মিশুক চালক এবং মা মোসা. পুষ্পা গৃহিণী। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার। পিতার পাশাপাশি ১৭ বছর বয়সে সংসারের হাল ধরতে গতবছর এসিআই ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিতে চাকরি নেন সানজিদ। সুখের সংসার তাদের। প্রতিদিনের মত ২১ নভেম্বর চাকরি থেকে বাড়ি ফিরে সানজিদ। পরম স্নেহে মা পুষ্পা নিজের হাতে খাবার খাইয়ে দেন। তখনো পুষ্পা জানতেন না এই খাওয়াই তার সন্তানের শেষ খাওয়া। সে দিন রাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে খুন হন সানজিদ।

সোমবার (২৯ নভেম্বর) নিহতের বাড়ি পরিদর্শনে গেলে দেখা যায়, প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা মা পুষ্পা। সন্তানশোকে যেন পাথর হয়ে গেছেন। সানজিদের প্রসঙ্গ উঠতেই আর্তনাদে ভেঙ্গে পরেন তিনি। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘একটা জানোয়ারও এভাবে আঘাত করে না। সেও তো কোনো মায়ের গর্ভের সন্তান। সেও তো মানুষ। একটা ধাক্কার বিনিময়ে দুনিয়ার থেইক্কা নিলোগা আমার সন্তানরে।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমি তো ভাবছিলাম আমার পোলারে কোন বিলে নিয়া মাইরা ফালাইয়া থুইছে। এমন এক ঘনবসতি এলাকার মধ্যে এমন কইরা আমার ছেলেরে মারলো আর কেউ ধরতেও আইলো না!` কান্নাজড়ানো কন্ঠে পুষ্পা আর্তনাদ করে বলেন, ‘যে বাড়ির সামনে ঘটনাটা ঘটছে ওই বাড়ির লোকজন লাইট নিভাইয়া দৃশ্য দেখছে। আমার সন্তানের লগের পোলাপান এত কইরা চিল্লাইয়া ডাকলো কেউ আইলো না। রক্তের বন্যা বইয়া গেল আমার পোলার। কেউ যদি একটা কাপড়ও দিতো, কেউ যদি একটা গাড়িও আইন্না দিতো তাইলে আমার মানিকরে আমি বাঁচাইতে পারতাম। কেউ ডাক শুনল না, আমার পোলাটা মইরা গেল।’

বাবা রিপন দেওয়ান বলেন, ‘আমার আশা-ভরসা আমার এই একমাত্র পোলা। এক বছর হইবো ওরে কামে দিছি। ওর নামে এলাকার কেউ রিপোর্ট দিতে পারবো না। আমার এমন ভালো পোলাডারে ঐ আদম-কদম মাইরা লাইলো। আমি এর ন্যায্য বিচার চাই।’

জানা যায়, গত রবিবার (২১ নভেম্বর) রাতে সাড়ে ৯টার দিকে ব্যাডমিন্টন কোর্টের জন্যে কিল্লারপুলে বাশ নিয়ে আসার জন্যে যায় সানজিদ, সিজান ও আরো ২-৪ জন। সে সময় রাস্তায় দুই ছেলে মেয়েকে ঘিরে ৬-৭ জন জড়ো থাকায় কারণ জিজ্ঞেস করে সানজিদ। তখন আদম আর কদম নামের দুই ভাই সঙ্গে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাত করে সানজিদ ও সিজানকে। প্রথমে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে সিজানকে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং সানজিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে গেলে সানজিদকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়