২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২০:৪০, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১

আপডেট: ২০:৪০, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১

“সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ”

“সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ”

রহিমা খাতুন: ১৯৭০ সালের ৪ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত ‘‘পূর্ব পাকিস্তান মহিলা পরিষদ” স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকে “বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ’’ নামে সুপ্রতিষ্ঠিত। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত সুফিয়া কামাল যিনি সপ্ন দেখেছিলেন নারীদের আন্দলনে নতুন নতুন ভাবনার প্রেরণা দিয়েছেন, পথ দেখিয়েছেন, সাহস দিয়েছেন, আশ্রয় দিয়েছেন, নারীর বহুমুখী প্রতিভা ও দক্ষতার পথে অগ্রসর করেছেন। সত্তর দশক থেকে আজও অবধি পর্যন্ত এই অগ্রগতি থেমে নেই।

আজকের নারী সমাজের চেহারাও পরিবর্তন হচ্ছে শত বাধা, শত সংকটের মাঝেও বাংলাদেশের নারীর অগ্রসর হচ্ছে। পরিবার, ব্যক্তি জীবনে, সামাজিক কর্মকান্ডে, দেশের উন্নয়ন কাজে, অর্থনীতিক কর্মকান্ডে, রাজনৈতিক অঙ্গনে ও মেয়েরা এগিয়ে এসেছে। মেধায়, মননে, চিন্তা, চেতনায় কর্মে, স্পৃহায় এক নতুন আলোকিত নারী সমাজ তৈরী হয়েছে।

বাংলাদেশে এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে নারীদের দক্ষতার সাথে উপস্থিতি নেই। আকাশ পথ থেকে শুরু করে পাহাড় পর্যন্ত, প্রশাসন এমন কি সাংবাদিকতার মত চ্যালেজিং পেশায়ও মেয়েরা থেমে নেই। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পথ চলা এভাবেই নারী জাগরনে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলছে। নারীর এই জাগরণে একদিন পাথর কেটে পথ তৈরী করেছেন যারা তাদের অন্যমত প্রধান ব্যক্তিত্ব কবি সুফিয়া কামাল।

নারী আদোলনের পক্ষ থেকে মহিলা পরিষদ নিজ উদ্যোগে ও প্রচেষ্ঠায় ১৯৮০ সাল থেকে শুরু করে আজ অবধি সর্বাত্নকভাবে বহুমাত্রিক পদ্ধতিতে নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন বন্ধ করার, প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রচেষ্ঠা চলমান রয়েছে। এই ধরনের মানবাধিকার বিরোধী কর্মকান্ডে নির্যাতনের শিকার নারী ও কন্যা শিশুদের পাশে এই সংগঠন আইনী, মানসিক ও স্বাস্থ্যগত সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে গড়ে তোলেছে নারী নির্যাতন বিরোধ পারিবারিক সামাজিক ও জাতীয় সাংস্কৃতি। এটা গনতন্ত্র, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সংগ্রাম।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কন্যাশিশু নির্যাতন প্রতিরোধ, নারীর ক্ষমতায়ন, সকল প্রকার সহিংস নিষ্ঠুর আচরন থেকে নারীকে মুক্ত করা থেকে জীবনের বাস্তবতা, জীবনের প্রয়োজন স্বাবলম্বী হওয়া নারীদের ঘরের চার দেয়ালের বাইরে বৃহত্তর জনসমাজে দাড় করিয়েছে। প্রচলিত দ্যান ধারনার বৃত্ত ভেঙ্গে মেয়েরা ক্রীড়াঙ্গনে প্রবেশ করে ছিনিয়ে এনেছে বিজয়। রাজনৈতিক অঙ্গনে ও পা রেখেছে নারীরা।

সকল ক্ষেত্রে নারীরা সম্পৃক্ততা ঘটলের সমঅংশ গ্রহন আর সমঅংশীদায়িত্ব থেকে এখনও অনেক পিছয়ে। এহেন অবস্থা দূীরকরনে নানা পদক্ষেপ গ্রহনের মাধ্যমে নতুন আইনের খসরা সরকারের সাথে আইন তৈরীর জন্য অ্যাডেভোকেশি লবি করেছে। নির্যাতনের শিকার নারী ও কন্যা শিশুর পাশে দাড়িয়ে আইনগত সহায়তার মাধ্যমে সমাজের মূল স্্েরতধারায় ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।

১৯৭৯ সালের ১৮ই ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারন পরিষদে গৃহিত হয়। নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য দূরীকরন বিষয়ক সনদ সংক্ষেপে (সিডও)। নারীর জন্য সমান অধিকারের লক্ষ্য অর্জনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ন পদক্ষেপ। যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারীকে তার অবস্থার সমৃদ্ধি ঘটাবে।

পিতার সঙ্গে মায়ের নাম সংযুক্তি সহ, জাতীয় পরিচয় পত্রে স্বামীর পরিবর্তে পিতার নাম সংযোজন করা হয়েছে এই সবই হলো নারীর প্রাপ্তি।

আজ স্বধীনতার সূবর্ন জয়ন্তী যেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সূর্বন জয়ন্তীর সঙ্গে একাকার হয়ে নারী মুক্তির দ্বীপশিখা নিয়ে এসেছে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ৫০বৎসর পূর্তিতে সকলকে আর্ন্তরিক শুভেচ্ছা। স্মরন করছি সেই সমস্ত মহিয়সী নারীদের যাদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মহিলা পরিষদের আজকের এই অবস্থান।

অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে আজকের এই অর্জন। অদুর ভবিষৎতে নিয়ে যাবে। সত্যিই বেগম রোকেয়ার অরবোধবাসিনী পার হয়ে সত্যিকার রাজ্য স্বপ্নের নারীস্থানে।

পরিশেষে আগামী ৩০ এবং ৩১ শে ডিসেম্বর ২০২১সালের ত্রয়োদশ জাতীয় সম্মেলনের সফলতা কামনা করছি। নারী মুক্তি মানবমুক্তি, নারীর অধিকার মানবাধিকার সুর্বন জয়ন্তীতে এই হউক প্রত্যয়।

লেখক: রহিমা খাতুন, সহ-সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা

 

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়