২৮ মার্চ ২০২৪

প্রকাশিত: ১৮:৫১, ২৬ মে ২০২১

সেই ফরিদের পরিবারের পাশে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাব্বানী

সেই ফরিদের পরিবারের পাশে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাব্বানী

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: সরকারি খাদ্য সহায়তা উল্টো ১০০ জনের মাঝে খাদ্য বিতরণ করার মতো শাস্তি পাওয়া ফরিদ আহমদ খানের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘টিম পজেটিভ বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে বুধবার (২৬ মে) পরিবারটিকে ১০০ কেজি চাল, ৬০ কেজি আলু, ২৫ কেজি ডাল, ৮ কেজি তেল ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। টিমের পক্ষে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এই খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদ আহমদের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার। তিনি বলেন, সংগঠনটির সদস্যরা বাসায় এসে এসব খাদ্যসামগ্রী দিয়ে গেছেন। তবে সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সরকারি খাদ্য সহায়তা চেয়েও জরিমানা গুনতে হয়েছে তাদের। সাংবাদিকদের সহযোগিতার কারণে সেই ক্ষতিপূরণ তারা পেয়েছেন। তবে আর কোনো বিড়ম্বনায় তারা জড়াতে চান না। অনেকেই তাদের সহযোগিতা করার জন্য কল করছেন। তবে সেই খাদ্য নিয়ে গিয়ে আবার কোনো ঝামেলায় পড়েন কিনা তা নিয়ে এখনও শঙ্কায় রয়েছেন বলে জানান সুমাইয়া।

এদিকে ফরিদ আহমদের পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদানের বিষয়টি জানিয়ে ‘টিম পজেটিভ বাংলাদেশ’র সদস্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ওই স্ট্যাটাসের সাথে খাদ্য সহায়তা প্রদানের ছবিও সংযুক্ত করেছেন। গোলাম রাব্বানী ওই পোস্টে লিখেছেন, ‘নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার দেওভোগ নাগবাড়ি এলাকার ফরিদ চাচা। এই দুর্যোগকালীন সময়ে উপার্জনের মাধ্যম কারখানা বন্ধ থাকায় প্রতিবন্ধী ছেলে, কলেজ পড়ুয়া মেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়ে গেলে, সরকারি খাদ্য সহায়তার প্রত্যাশায় ফোন করেন ৩৩৩ নাম্বারে। কিন্তু সদর ইউএনও ঠিকঠাক খোঁজ না নিয়েই, তাকে স্বচ্ছল ভেবে উল্টো জরিমানা করে বসেন! পরে চাচার প্রকৃত অবস্থা জেনে, প্রশাসন ক্ষতিপূরণের অর্থ ফেরত দিলেও, ৩৩৩ এর সে খাদ্য সহায়তা আর পায়নি তার পরিবার।’

‘আজ ফরিদ চাচার বাড়িতে গিয়ে আমিও বাস্তবতা দেখে এসেছি, টিম পজেটিভ বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে দেশরতœ শেখ হাসিনার ভালোবাসার উপহার হিসেবে খাদ্য সহায়তা (১০০ কেজি চাল, ৬০ কেজি আলু, ২৫ কেজি ডাল, ৮ কেজি তেল) ও নগদ ৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। আর এই দুর্যোগময় সময়ে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে প্রকৃত অসহায় কেউ যদি ৩৩৩ তে ফোন করে মাঠ প্রশাসনের দায়িত্ব অবহেলায় খাদ্য সহায়তা না পান, টিম পজেটিভ বাংলাদেশকে জানান। আমরা সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করবো ইনশাআল্লাহ।’

উল্লেখ্য, একরকম নিরুপায় হয়েই জাতীয় কলসেন্টারের ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্য সহায়তা চান ফরিদ। কিন্তু সহায়তা তো পাননি, উল্টো তিনি চারতলা ভবনের মালিক এমন মিথ্যা তথ্যের কারণে জরিমানা গুনতে হয়েছে তাকে। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরার নির্দেশে তাকে নিজস্ব খরচে ১০০ জনের মাঝে চাল, আলু, ডাল, লবন ইত্যাদি খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করতে হয়েছে। নিজের স্ত্রী ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর গয়না বন্ধক দিয়ে ও ধার-দেনা করে বিতরণের জন্য এসব খাদ্যসামগ্রী কিনেছেন বলেও জানান। এমনকি স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আইয়ুব আলীর থেকেও ধার নিয়েছিলেন ১০ হাজার টাকা।

ফরিদ আহমদের করুণ অবস্থার কথা স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে প্রচার হলে এ নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত ফরিদ আহমদের পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে উপজেলা প্রশাসন বা স্থানীয় ইউপি সদস্য নয় ফরিদ আহমদের পরিবারকে ৬০ হাজার টাকা প্রদান করেন শাহীনূর আলম নামে স্থানীয় এক ধনাঢ্য ব্যক্তি। তিনি ওই এলাকার পঞ্চায়েত কমিটির উপদেষ্টা। প্রশাসনের অনুরোধে নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এই টাকা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়