২৩ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২১:৪৭, ৩ জুন ২০২৩

আপডেট: ২১:৪৭, ৩ জুন ২০২৩

স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীকে নির্যাতন করে ৩ ফ্ল্যাট আত্মসাতের অভিযোগ

স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীকে নির্যাতন করে ৩ ফ্ল্যাট আত্মসাতের অভিযোগ

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: প্রবাসফেরত স্বামীকে ওষুধ খাইয়ে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন ও ৩ ফ্ল্যাট আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী, তার পরকীয়া প্রেমিক ও স্বজনদের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার ক‌রে‌ছেন স্ত্রী। তার দাবি সামাজিকভাবে সমাধান করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়ে মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

ভুক্তভোগী প্রবাসফেরত স্বামীর অভিযোগ, ‘পরকীয়া ও জালিয়াতির বিষয় সামনে আসাতেই স্ত্রীর আচরণ পাল্টে যেতে শুরু করে। এক পর্যায়ে স্ত্রী তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। লোকলজ্জার ভয়ে কখনই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেননি।’

এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে নারায়ণগঞ্জের একটি আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী স্বামী ফতুল্লার আফাজ নগরের স্বপন আহম্মেদ।

অভিযুক্ত স্ত্রীর নাম আফরোজা আক্তার। সে বন্দর ইউলসন রোডের আল আমিন প্রধানের মেয়ে।

দশ বছর পূর্বে কোরিয়া ফেরৎ স্বপন পারিবারিক সিদ্ধান্তে আফরোজার সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হোন। তাদের সাত বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।

স্বপন আহম্মেদের দাবি, আফজানগরের সভাপতি আমজাদ হোসেনের সঙ্গে আফরোজার পরকীয়া। এরমধ্যে আফরোজার আরেক পরকীয়া প্রেমিক বিষয়টি জেনে স্বপন ও তার পরিবারকে আফরোজার নানা ধরণের তথ্য, তার সঙ্গে কথপোকথনের স্ক্রিনশট, ব্যক্তিগত ছবিসহ বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণও দেন। এ নিয়ে স্বপনের সংসারে অশান্তি শুরু হলে আমজাদের পরামর্শে স্বপনের আফাজনগরের বাড়ি ছেড়ে বন্দরে চলে যান আফরোজা। পরবর্তীতে স্বপনের পরিবার বিষয়টি পারিবারিকভাবে মিটমাট করার উদ্দেশ্যে চলতি বছরের ১লা ফেব্রুয়ারি আফরোজা ও তার মাকে নিয়ে আফাজ নগরে দরবারে বসেন। কিন্তু পরকীয়া প্রেমিক আমজাদের প্ররোচনায় কোনোভাবেই সমাধানের পথে আসতে রাজি হয়নি। পরবর্তীতে ৫ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৬নং আমলী আদালতে নিজ স্বামী নাহিদ হোসেন স্বপন, ননদের স্বামী নুর হোসেন, ভাশুর মোফাজ্জল এবং শ্বশুর নজরুল ইসলাম বেপারিকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। একই সাথে ৪৮৩৫ নম্বরের একটি দলিলমূলে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে স্বপনের তিনটি ফ্ল্যাট নিজনামে নামজারি করিয়ে নেন আফরোজা।

এদিকে আমজাদের সঙ্গে আফরোজার এবং মোহসিনের কথপোকথনের বেশ ক’টি কল রেকর্ড পাওয়া গেছে। যেখানে আমজাদ এবং মোহসিনের এই ঘটনায় সম্পৃক্তা পাওয়া যায়। এছাড়াও আগের পরকীয়া প্রেমিকের দেওয়া তথ্য প্রমাণ থেকে আফরোজার পরকীয়ার বিষয়টি জানা যায়।

স্বপনের পরিবার সূত্রে জানা যায়, জালিয়াতির মাধ্যমে ফ্ল্যাটের নামজারি করার ঘটনায় আদালতে বাদী হয়ে মামলা করেছেন স্বপন। এতে আফরোজা, তার মা নাসিমা, পরকীয়া প্রেমিক আমজাদ ও মোহসিনকে আসামি করা হয়। এর আগে চলতি বছরের ৭ মার্চ আফরোজার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হুমকি ধামকির অভিযোগ তুলে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন স্বপন। পরবর্তীতে ১৩ মার্চ আইনগতভাবে বিবাহ বিচ্ছেদও করেন। যা ১৩ জুন কার্যকর হবে।

এ বিষয়ে জানতে আফরোজা আক্তারের মুঠোফোনে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি তার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে তিনি এখনও অনেক সম্মান করেন। তাই তিনি কাদাছোড়াছুড়ি করতে আগ্রহী নন। শ্বশুরবাড়ির কেউ কেউ তার স্বামীর অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে লাভবান হতেই তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন।

আফরোজা বলেন, আমি মানুষ। ভুলের ঊর্ধ্বে আমি নই। যদি আমার ভুল কিছু থেকে থাকতো তাহলে সেটি সামাজিকভাবে, ঘরোয়াভাবে সমাধান করতো। কিন্তু তারা সেটা না করে আমাকে নির্যাতন করেছে। আমার ফোন কেড়ে নিয়েছে। যা শোভনীয় ছিল না। সামাজিকভাবে বিষয়টি সমাধান করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়ে আমি মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। আমি কোনো জালিয়াতি করিনি। আমার স্বামী নিজেই আমার নামে তার ফ্ল্যাট সাব রেজিস্টার করে দিয়েছে। যার অরিজিনাল দলিল আমার কাছে রয়েছে। মিউটিশন করানোর সময় দলিল নম্বরটা ভুল উঠেছে। এছাড়া আর কিছু নয়।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়