২৯ মার্চ ২০২৪

প্রকাশিত: ২২:২০, ৩ নভেম্বর ২০২১

আপডেট: ২২:২০, ৩ নভেম্বর ২০২১

হাইস্কুলের নির্বাচন নিয়ে ছাত্রদের উপর হামলা

হাইস্কুলের নির্বাচন নিয়ে ছাত্রদের উপর হামলা

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্কুলের ছাত্রদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৩ নভেম্বর) দুপুর একটায় স্কুলের সামনের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

অভিযোগ উঠেছে, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সদস্য ও আসন্ন নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী ওয়াহিদ সাদাত বাবুর লোকজন নারী সদস্য প্রার্থী দেলোয়ারা বেগম মায়া সমর্থক স্কুল ছাত্রদের উপর হামলা চালায়। ওয়াহিদ সাদাত বাবু সাবেক পিপি ওয়াজেদ আলী খোকনের ভাই। হামলায় ওয়াজেদ আলী খোকনের ছেলে আকিব ও তার বন্ধুরা অংশ নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে হামলার কারণে স্কুলের ছাত্ররা বাইরে থেকে স্কুলের ভেতরে আশ্রয় নিলে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল কামরুল ইসলাম ছাত্রদের বাইরে বের করে দেয়। ফলে ছাত্ররা দ্বিতীয়বার হামলার শিকার হয়।

স্কুলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুইজন শিক্ষক জানান, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সদস্য ও আসন্ন নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী ওয়াহিদ সাদাত বাবু, তার বন্ধু ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজ, আরেক প্রার্থী সরকার আলম ও আরো কয়েকজন অভিভাবক মিলে দল বেধে বিভিন্ন ক্লাসে গিয়ে গিয়ে নির্বাচনী প্রচারনা চালান। এটি নির্বাচনী আচরণ বিধি বিরোধী হওয়ায় এর প্রতিবাদ জানান নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদপ্রার্থী দেলোয়ারা বেগম মায়া। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।

বেলা বারোটা পঞ্চাশ মিনিটে স্কুল ছুটি হয়। এ সময় দু’জনই স্কুলের গেটে দাড়িয়ে নির্বাচনী প্রচারনা চালাচ্ছিলেন। বাবুর সমর্থনে তার ভাতিজা সাবেক পিপি ওয়াজেদ আলী খোকনের ছেলে, তোলারাম কলেজের ছাত্র আকিবের বন্ধুরা এ সময় তার পক্ষে স্লোগান দেয়। একই সময় নারী প্রার্থী মায়ার ছেলে স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র ¯েœহ ও তার বন্ধুরা মায়ার পক্ষে স্লোগান দেয়। এতে ওয়াহিদ সাদাত বাবু ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। সে মায়া সমর্থক স্কুল ছাত্রদের স্লোগান বন্ধ করতে বলে।

দেলোয়ারা বেগম মায়া অভিযোগ করেন, তার সমর্থকরা স্লোগান বন্ধ না করায় বাবুর ভাতিজা আকিব ও তার সহযোগিরা মায়ার ছেলে ¯েœহ, দশম শ্রেণীর ছাত্র ইফতি, রনিসহ দশ-বারোজন স্কুল ছাত্রকে চড়-থাপ্পর কিল-ঘুষি দিয়ে আহত করে। মায়ার ছোট ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র আদরকে টেনে হিচরে স্কুলের ব্যাজ, শার্ট ছিড়ে ফেলে।

এ সময় হাইস্কুলের ছাত্ররা আত্মরক্ষার্থে স্কুলের ভেতরে গিয়ে আশ্রয় নিলে স্কুলের প্রিন্সিপাল কামরুল ইসলাম তাদের জোর করে স্কুল থেকে বের করে দেয়। ফলে স্কুলের ছাত্ররা দ্বিতীয়বার হামলার শিকার হয়। তবে এ সময় এসআই জামিলের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

অভিযোগের ব্যাপারে ওয়াহিদ সাদাত বাবু বলেন, ‘স্কুল থেকে মায়ার ছেলে একটি মিছিল বের করে বাইরে আমাদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ফলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।’ ভাতিজা আকিবসহ বহিরাগতদের নিয়ে হামলার অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমার ভাতিজা শুধু না সবার লোকজনই আজ নির্বাচনের শেষ দিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিল।’ ক্লাস রুমে প্রচারনার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘শুধু আমারই দোষ? সবাই ক্লাস রুমে প্রচারনা চালালেও তাদের দোষ হয় না।’

ঘটনার ব্যাপারে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি চন্দন শীল বলেন, ‘স্কুলের বাইরে নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী ওয়াহিদ সাদাত বাবুর লোকজন আরেক সদস্য প্রার্থী মায়া সমর্থক কয়েকজন স্কুল ছাত্রের উপর হামলা চালিয়েছে বলে জেনেছি। তবে যেহেতু ৭ নভেম্বর নির্বাচন। তাই নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে আপাতত সব পক্ষকে এ ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকতে অনুরোধ করেছি। নির্বাচনের পরে আমরা বিষয়টি সামাজিকভাবে শেষ করবো।’

ঘটনার সময় স্কুলে আশ্রয় নেয়া ছাত্রদের বাইরে বের করে দেয়া প্রসঙ্গে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল কামরুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলের ছাত্রদের নিজেদের মধ্যে সামান্য উত্তেজনা হয়েছে। আমি সব ছাত্রদেরই বাইরে বের হতে বলেছি। এখানে তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। কোনো বহিরাগত এখানে আসেনি।’

ঘটনাস্থলে যাওয়া নারায়ণগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামিল জানান, ঘটনার খবর শুনে স্কুলে গিয়েছিলাম। তবে এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়