২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৪:৪৯, ৩০ মার্চ ২০২১

আপডেট: ২১:৫১, ৩০ মার্চ ২০২১

হেফাজত থেকে পদত্যাগ করলেন মাওলানা আউয়াল

হেফাজত থেকে পদত্যাগ করলেন মাওলানা আউয়াল

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়াল৷ গত সোমবার (২৯ মার্চ) রাতে ডিআইটির রেলওয়ে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মুসুল্লিদের সামনে এমন ঘোষণা দেন৷ দলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর নির্দেশনা মানছেন না বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি৷

মঙ্গলবার দুপুরে পদত্যাগের ঘোষণার বিষয়টি মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন খোদ মাওলানা আব্দুল আউয়াল৷ তিনি বলেন, ‘আমি সকল মুসুল্লির সামনে জানিয়ে দিয়েছি যে, আমি কোনো নেতৃত্বে থাকবো না৷ আমার নেতৃত্ব না মেনে কর্মীরা কার্যক্রম চালায় সুতরাং নেতৃত্বে থাকার কোনো কারণ নেই৷ গতকাল কেন্দ্রীয় দোয়া কর্মসূচি ডিআইটি মসজিদে করার কথা থাকলেও দলের কিছু নেতারা মিলে দেওভোগ মাদরাসায় সে আয়োজন করেছেন৷ আমার কথা কেউ শোনে না৷ আমি আর কোনো দলে থাকতে চাই না৷ হেফাজত, ওলামা পরিষদ সবকিছু থেকে পদত্যাগ করেছি৷ মৌখিকভাবে কেন্দ্রে তা জানিয়েছি৷ তারা লিখিত চাইলে তাও দেবো৷’

রাতে ডিআইটির রেলওয়ে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মুসুল্লিদের উদ্দেশ্যে মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, হরতালে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আর্মি এই ৪টা বাহিনী আমাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ আমাকে এমনভাবে আটকানো হইছে যে মসজিদ থেকে বের হলেই তারা আমাদের গুলি করবে। ৩টা কামান ফজরের পর দেখি ৩০টা। বলতেছে ভালো থাকেন আর নাহলে উপরের অর্ডারে সরাসরি অ্যাকশনে চলো যাবো। তারা যদি অ্যাকশনে চলে যায় আমাদের তো অস্ত্র নাই, আমরা কি তাদের সাথে পারি? যার জন্য আমরা আম গাছ তলা পর্যন্তই ছিলাম। বহু আবদার, বহু চেষ্টা করা হইছে কিন্তু বের হইতে পারি নাই। পরে শুনতেছি চিটাগাং রোডে নাকি ১৭টা গাড়ি পুড়ছে। এগুলো কারা পুড়ছে সব ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়। কিছু সন্ত্রাসী লোকেরা পুড়ছে অথচ আমাদের ছাত্ররা কেউ নাই। এখন বলতাছে যদি কালকে আপনি আমাদের কথা না শুনতেন তাইলে এই সব মামলা আপনার নামে হইতো। এই ১৭টা গাড়ি পোড়ানের মামলার ১নং আসামী আপনি হইতেন। তারাও আমাদের কথা বুঝতেছে না। আমাদের অতি উৎসাহীওয়ালা লোকেরাও বুঝে না।

তিনি বলেন, আল্লাহর ওয়াস্তে বলছি আমি আর দল করবোনা। তোমাদের হেফাজতের সাথেও কিছু করবো না। আমি এমনিতেই মসজিদে থাকবো। আমি আর কোন কাজে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়ে যাবো না। তাদের বলছি তোমরা যারা অতি উৎসাহীওয়ালা আছো তোমরা করো যাও। আমার এখন বয়স হয়েছে, অসুস্থ মানুষ, চলাফেরা করতে পারি না তাই আমি আর হেফাজতের নেতৃত্ব দিবো না। আমি কর্মী হিসেবে থাকবো, নেতৃত্বের মধ্যে নাই। সংবাদ সম্মোলন কইরা ইস্তফা দিয়া দিবো। আমি আর হেফাজতের নেতৃত্ব দিবো না। যার কারণে আজকে দোয়া ছিলো ডিআইটি মসজিদে সেটা না করে তারা দোয়ার আয়োজন করছে দেওভোগ মসজিদে। এটা কইরা তারা অটোমেটিক আমারে সাইড কইরা দিছে। এমন নেতা দিয়া তাগো চলবো না। আমিও আল্লাহর ওয়াস্তে নেতৃত্ব ছাইড়া দিলাম। শবে বরাতের রাত্রে আপনাদেরকেও আমি জানায় দিলাম ইস্তফা দিয়ে দিচ্ছি। হেফাজতের আমির বা কোন কিছু দরকার নাই। যতদিন বেচে আছি সাধারণ মুসল্লি হিসেবে থাকবো। আমার পক্ষ থেকে কোন কর্মসূচিতে আপনাদের কাছে ডাক আসবে না। অন্যান্য যারা আছে তারা ডাক দিবে। তাদের ডাকে আপনারা আসবেন।

মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, তারা আমারে বলতাছে কেন আমি ব্যারিকেড ভেঙ্গে তাদের নিয়ে মিছিলে গেলাম না। আমি যদি তাদের নিয়ে বের হইতাম তাইলে লাশ পরে যাইতো কয়েকটা। ডিআইটি মসজিদের যে গ্লাসগুলা আছে একটা গ্লাসও আস্ত থাকতো না যদি বাইর হইতাম। পরে সবাই বলতো এরে কে বলছে নেতৃত্ব দিতে। এরে তাড়াতাড়ি এখন থেকে উৎখাত করো এটা বলতো। তখন আইভীও বলবে, অমুক তমুকেও বলবে এরে সরানোতে সুবিধা হইছে। যদি লাশ পইড়া যাইতো আপনারাও বলতেন এরে কে নেতৃত্ব দিছে মায়ের বুক খালি করতে। এখন আমি কোন দিকে যাবো? এইদিকেও যেতে পারি না, ওইদিওে যাইতে পারি না। তাই আমি জিম্মাদারি ছাইড়া দিলাম। কোন সংগঠনের পক্ষ থেকে কখনো আর ডাকবো না। যাদের শক্তি আছে তাদের নেতৃত্বে কাজ করো। আমি তোমাদের সাথে থাকবো।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়