০৮ মে ২০২৪

প্রকাশিত: ১৯:৫৬, ১৬ জানুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ১৯:৫৭, ১৬ জানুয়ারি ২০২৩

অপ্রতিরোধ্য আইভীর হ্যাট্রিক জয়ের ১ বছর

অপ্রতিরোধ্য আইভীর হ্যাট্রিক জয়ের ১ বছর

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে টানা তিন মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। অপ্রতিরোধ্য আইভীর হ্যাট্রিক জয়ের আজ (সোমবার) এক বছর পূর্তি। ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন তিনি। নারায়ণগঞ্জ শহরে তাঁর যে জনপ্রিয়তা তাতে এই ফলাফল অনেকটা প্রত্যাশিতই ছিল।

বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী আওয়ামী লীগ মনোনীত ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী পেয়েছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ‘হাতি’ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৬২ ভোট। এবার ৬৬ হাজার ৫৩৫ ভোটের ব্যবধানে জিতলেন আইভী। এর আগে গত দুই নির্বাচনে প্রথমবার লক্ষাধিক ভোট এবং দ্বিতীয়বার প্রায় ৮০ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। ১৬ জানুয়ারির এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে তৃতীয় বারের মতো নাসিক মেয়রের চেয়ারে বসেন তিনি।

২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালি নেতা শামীম ওসমানকে হারিয়ে সিটি মেয়র হিসেবে যাত্রা শুরু করেন মেয়র আইভী। এর আগে ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচনে জয়লাভ করে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নারী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডিগ্রিপ্রাপ্ত ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী নিউজিল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হন। বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সেই দলের সমর্থিত প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারান আইভী। অনুন্নত পৌরসভার হাল ধরে রাজস্ব আদায় দ্বিগুণ করেন তিনি। পিতা আলী আহাম্মদ চুনকার মতো অল্প সময়েই মানুষের আস্থার প্রতীক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন ডা. আইভী। রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে আসা ব্যক্তিটি অল্প সময়তেই বুঝেছিলেন, মানুষ উন্নয়নের পাশাপাশি শান্তি চায়। এই কাজটি মেয়র আইভী সুনিপুণ হাতে সম্পন্ন করতে পেরেছেন বলেই মত নগরবাসীর। ২০০৩ সালে পৌর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বদলে দিয়েছেন নগরীর চেনা রূপ। রাস্তা-ঘাট নির্মাণ থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসেবা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো নাগরিক সেবা দিয়েছেন তিনি। সুপরিকল্পিত নগরায়নের এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে শহরের বুকে নির্মাণ করেছেন শেখ রাসেল নগর পার্ক। উন্নয়নের পাশাপাশি লড়েছেন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, ভূমিসন্ত্রাসীর মতো দৃশ্যমান গণশত্রুদের বিরুদ্ধে। কেবল নির্বাচনী আশ্বাসই নয়, দীর্ঘ এই রাজনৈতিক জীবনে লড়েছেন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। মেধাবী ছাত্র ত্বকীসহ নারায়ণগঞ্জে সংঘটিত সকল হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করেছেন এবং করে যাচ্ছেন ভরা মজলিশে। অনেকের মতে, রক্তচক্ষুকে ভয় না করার সাহস নগরবাসী পেয়েছেন মেয়র আইভীর কাছে। প্রতিকূলতার মুখে প্রতিবাদের অন্যতম প্রতীক হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি।

শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নই নয় মেয়র হিসেবে আইভী নাগরিক সেবাও নিশ্চিত করেছেন৷ কেবল নগরীর উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্যই নয় আইভী এই শহরে জনপ্রিয় আরও কয়েকটি কারণে। শুধু নারায়ণগঞ্জে নয় সারা বাংলাদেশেই সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত। নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন, মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যাসহ বিভিন্ন গুম-খুনের ঘটনায় সোচ্চার ছিলেন আইভী। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতার বিরুদ্ধে সবসময়ই জোরালো আওয়াজ ছিল তাঁর। প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের পাশাপাশি আইভীর সৎ ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবেও নিজেকে এই শহরের মানুষের কাছে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ভুমিদস্যুতার বিরুদ্ধে আপসহীন মনোভাব আইভীকে করেছে তুমুল জনপ্রিয়। স্বীকৃতি পেয়েছেন গণমানুষের নেতা হিসেবে। তার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধেও সন্ত্রাসী কোনো কর্মকান্ডের অভিযোগ নেই। যার কারণে ২০১১ সালে লক্ষাধিক এবং ২০১৬ সালে প্রায় ৮০ হাজার ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়