০৮ মে ২০২৪

প্রকাশিত: ১৫:৩৪, ২৬ নভেম্বর ২০২০

আপডেট: ২০:২৬, ২৬ নভেম্বর ২০২০

এমপি খোকাকে ক্ষমা করে দিলেন আনোয়ার হোসেন

এমপি খোকাকে ক্ষমা করে দিলেন আনোয়ার হোসেন

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: সোনারগাঁ জিআর ইনস্টিটিউশনে সাঁটানো নামফলক ভাঙার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি কর্মসূচির সমাপনী দিনে তিনি এসব কথা বলেন।

নামফলক ভাঙার প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার থেকে জেলা পরিষদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এক ঘন্টা করে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছিলেন। সমাপনী দিনে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত হন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন। পরে বক্তব্য দেওয়ার সময় সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘তুমি ভুল করেছো এবং সেই ভুলের ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। আমি খোকাকে অভিশাপ দিচ্ছি না বা খারাপ কিছু বলছি না। তার কৃতকর্মের জন্য একদিন তার সংশোধনের সময় আসবে। অনেকেই আমার সাথে বেয়াদবি করে আবার বাসায় গিয়ে পা ধরে ক্ষমাও চায়। আমি বিশ্বাস করি, ক্ষমাই পরম ধর্ম। তাই আমি খোকাকে ক্ষমা করে দিলাম। আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন নাই। কখনও অনুশোচনা হলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ো।’ পাশাপাশি নামফলক ভাঙার ঘটনায় সকল প্রতিবাদ কর্মসূচি স্থগিত রাখার কথা জানান আনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আগামীতে আমি সকল অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমি আপনাদের পাশে আছি। মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের এবং যারা অপরাধ করে তাদের বিরুদ্ধে আমার আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। যারা আন্দোলন করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলছি এ আন্দোলন স্থগিত করলাম।’

এর আগে তিনি বলেন, ‘আমি নারায়ণগঞ্জের এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে উন্নয়নের ছোয়া লাগানোর চেষ্টা করেছি। সব উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নে কাজ করছি। এই কাজের সোনারগাঁ জিআর ইনস্টিটিউশনে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলাম। সেই নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধনের জন্য আমার নামফলক লাগানো হয়েছিল। কিন্তু খোকা সাহেব ঈর্ষান্বিত হয়ে এ রকম ঘটনা ঘটিয়েছে।’

আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘১৭ নভেম্বর একটি দুঃখজনক ঘটনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১৭ তারিখ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত এই কয়েকদিনে এই প্রসঙ্গে আমি মুখ খুলিনি। এই ঘটনার প্রতিবাদে ঝড় উঠেছে সোনারগাঁ উপজেলার তৃণমূল নেতৃবৃন্দের মধ্যে। যারা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে, যারা শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ডে বিশ্বাসী, যারা আমাকে ভালোবাসে তারাই এ ঘটনার প্রতিবাদে ঝড় উঠিয়েছে। একমাত্র যারা সম্পৃক্ত ছিল না এবং যারা জাতীয় পার্টির নেপথ্যে সমর্থন দেয় তারা ব্যাতীত সকলে সমর্থন দিয়েছিল। কারণ তারা জানে, আনোয়ার হোসেন একজন সাচ্চা কর্মী, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী।’

আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সেদিন মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও প্রতিবাদ করা হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জের যারা আমাকে ভালোবাসে তারাই প্রতিবাদ করেছিল। জেলা আওয়ামী লীগ এ ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাতে পারেনি বলে আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারলাম না। এজন্য আমি দুঃখিত। সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ আহ্বায়ক কমিটি যারা নেতৃত্ব দেয় তাদেরকেও আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে পারলাম না। কারণ এ রকম ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদ তারা করেনি।’

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, মো. আলাউদ্দিন, মাহবুবুর রহমান রোমান, ফারুক হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, সহকারী প্রকৌশলী মো. ওয়ালীউল্লাহ, উপসহকারী প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমার পালিত, প্রশাসনিক কর্মকর্তা কেএম রাশেদুজ্জামান, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম, উচ্চমান সহকারী মীর মাহমুদা খানম, নমিতা মল্লিক, সার্ভেয়ার রকিবুল হাসান, অফিস সহকারী মিলন হোসেন, হারুন অর রশিদ, কম্পিউটার অপারেটর হারুন প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত সকলে কালো ব্যাজ ধারণ করেন।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়