০৯ মে ২০২৪

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৬:১৭, ২৫ মার্চ ২০২৪

রূপগঞ্জে রফিকুল ও মোশারফ বাহিনীর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৮

রূপগঞ্জে রফিকুল ও মোশারফ বাহিনীর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৮
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে দুইপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত আটজন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও সাবেক ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর আগে রোববার রাতেও উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিরা হলেন- আকবর (২৪), তাজেল (৩৬), জয়নাল (৩৫), শামীম (২৫), মুক্তার হোসেন (৬০), নুর হোসেন (২৪), আরিফ (৯) ও রোমান (২০)। তারা মোশারফ হোসেনের অনুসারী বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। রূপগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলাসহ অন্তত ৪২টি মামলা রয়েছে। পুলিশের সন্ত্রাসীর তালিকায়ও তার নাম রয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, আহতরা শর্টগানের ছোড়া ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। তবে তাদের আঘাত গুরুতর নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কায়েতপাড়ায় রফিকুল ইসলাম ও তার ভাই জেলা পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমানের সাথে সাবেক ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের দ্বন্দ্ব পুরোনো। বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির পক্ষে জমি বেচা-কেনার ব্যবসা নিয়ে প্রায় সময়ই তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত রোববার রাতে বাড়ি ফেরার পথে রফিকুল ইসলামের অনুসারী নাওড়ার বাসিন্দা নাজমুল নামে এক যুবককে পিটিয়ে আহত করে মোশারফের অনুসারীরা। এই ঘটনার জেরে সোমবার সকালে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয়পক্ষ এই সময় আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। মোশারফ হোসেনের ছেলে নিরব হোসেন অভিযোগ করেন, সকালে মোশারফ হোসেনের বাড়ি ঘেরাও করে রফিকুল ইসলাম, তার ভাই মিজানুর রহমানসহ তাদের অনুসারী লোকজন। ‘রফিক ও মিজানের নেতৃত্বে জশু, রুবেল, কানা মোজাম্মেল, জাহিদ, শিপলু, সজিব, রাজিব, আলাদিনসহ শতাধিক সন্ত্রাসী বাহিনীর আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তাদের চালানো গুলিতে আটজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।’ তবে, আগের রাতে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন নিরব। এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে মিজানুর রহমান বলেন, তিনি ঢাকায় আছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় তিনি কিংবা তার পরিচিত কোন লোক জড়িত নন বলে দাবি করেন। ‘আমি শুনেছি, নাজমুল নামে গ্রামের একটা নিরীহ ছেলেকে গতরাতে মারধর করে টাকা-পয়সা রেখে দেয় মোশারফ ও তার লোকজন। এতে গ্রামবাসী ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে। সকালে গ্রামবাসীদের উপর আবারও মোশারফের লোকজন হামলা চালিয়েছে বলে শুনেছি। হামলায় গ্রামবাসীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর বেশি কিছু ভাই আমি জানি না, কারণ আমি তো গ্রামে ছিলামই না।’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নাওড়া গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘গ’ সার্কেল) আবির হোসেন। তিনি বলেন, ‘রোববার রাতে উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এরই জেরে সকালেও তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় আটজন আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জেনেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছে পুলিশ। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।’ তবে, বেলা আড়াইটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়