০৯ মে ২০২৪

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:১৯, ৪ এপ্রিল ২০২৪

রূপগঞ্জে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ১২

রূপগঞ্জে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ১২

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এসিএস টেক্সটাইল লিমিটেড নামক একটি কারখানার শ্রমিকরা বেতন ও বোনাসের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। এ সময় পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে ইট পাটকেলের আঘাতে পুলিশসহ অন্তত ১২ আহত হয়েছে। এতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অন্তত ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাতটা থেকে আটটা পর্যন্ত তারাব পৌরসভার বরপা এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এই ঘটনা ঘটে। রাত আটটায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সড়ক যানজট মুক্ত হয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

কারখানাটির শ্রমিকরা জানান, গত প্রায় চারমাস ধরে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বেতন ভাতা ঠিকঠাক দিচ্ছে না। কথা ছিল ঈদের আগে শ্রমিকদের সব পাওনা বুঝিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার কারখানায় আসার পর শ্রমিকরা জানতে পারেন মালিকপক্ষ তাঁদের বেতন ভাতা না দিয়েই কারখানা ছুটি ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পরে তারা বৃহস্পতিবারের মধ্যে বেতন বোনাস পরিশোধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন।

শ্রমিক, পুলিশ ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল পাঁচটায় কারখানা ছুটির পর হঠাৎ করেই কারখানাটির কিছু শ্রমিক ঢাকা সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নেন। তারা বেতন বোনাসের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মিছিল করেন। প্রায় বিশ মিনিট সড়ক অবরুদ্ধ থাকার পর শিল্প পুলিশ ও রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের রোববার বেতন বোনাস পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে তাঁদের শান্ত করেন। তখন শ্রমিকদের একাংশ সড়ক ছেড়ে দিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। তবে কিছু শ্রমিক তখন কারখানার ভেতরে অবস্থান নিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে সেই শ্রমিকরা মহাসড়কে নেমে এসে কয়েকটি বাস ভাঙচুর করে। এসময় পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে, পুলিশও পাল্টা কাঁদানেগ্যাস ছোড়ে। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়৷ এ সময় অন্তত ১১ শ্রমিক আহত হয়েছে বলে জানান শ্রমিকরা৷ পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারও আহত হয়েছেন শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে৷

শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, শ্রমিকরা বেতন ও বোনাস পাওনা। রোববার শ্রমিকদের বেতন ও সোমবার বোনাস দেয়ার কথা ছিল। শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার স্বাভাবিকভাবেই কাজে আসেন। কাজ শেষ করে হঠাৎই কিছু শ্রমিক সড়ক অবরোধ করে।

শ্রমিকদের উত্তেজিত করে তোলার পেছনে কারখানার বাইরের একটি পক্ষ উস্কানি দিয়েছে বলে দাবি এই পুলিশ কমকর্তার।

তিনি বলেন, শ্রমিকদের উত্তেজিত করে তোলা হয়েছে। বিকেলে মালিকপক্ষ রোববারের মধ্যে বেতন বোনাস পরিশোধের আশ্বাস দেয়ার পর শ্রমিকরা চলে যান। অন্ধকার হওয়ার পর একটি পক্ষ বাসে ইটপাটকেল ছুড়ে ভাঙচুর করে। আমরা তখন তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে চাইলে আমাদের উপর হামলা করেন। এতে এক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ তখন কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে।

এই ঘটনায় কারখানার মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

এদিকে মহাসড়ক অবরোধ ও সংঘর্ষের ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সড়কটির বিভিন্ন অংশে যানজট তৈরি হয়। সন্ধ্যায় মহাসড়কটির কাঁচপুর থেকে ভুলতা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে যাত্রীদের এক থেকে দেড়ঘন্টা পর্যন্ত যানজট পোহাতে হয়েছে।

ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) আলী আশ্রাফ মোল্লা বলেন, শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের জন্য বিক্ষোভ করলে যানজট তৈরি হয়। আমরা সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছি।
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়