২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৭:৫২, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ১৩:০২, ৩০ জানুয়ারি ২০২৩

হত্যাচেষ্টা মামলার অভিযোগপত্রে আইভীর নারাজি

হত্যাচেষ্টা মামলার অভিযোগপত্রে আইভীর নারাজি

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে হকার ইস্যুতে সংঘাতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামিদের অস্ত্র আইনের ধারা থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতে নারাজির আবেদন জানান সিটি করপোরেশনের আইন কর্মকর্তা জিএম সাত্তার।

এর আগে গত ২৩ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক আতাউর রহমান। চার বছর আগের এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রে আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, জখম, ভাঙচুর ও নাশকতার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানান তদন্ত কর্মকর্তা। তবে অস্ত্র আইনের ধারা থেকে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন তিনি।

গত ৮ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে এ অভিযোগপত্রে ‘অসন্তুষ্ট’ সেলিনা হায়াৎ আইভী এর বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে জানান।

সিটি করপোরেশনের আইন কর্মকর্তা জিএম সাত্তার বলেন, ‘মামলাটির নির্ধারিত তারিখ ছিল। আমরা আদালতে অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন জানাই। কী কারণে আমরা নারাজি জানিয়েছি সেই বক্তব্যও আদালতে পেশ করেছি। আদালত তখন আমাদের বক্তব্য শোনেন। এই মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী ১ মার্চ নির্ধারণ করেছেন আদালত।’

এদিকে আদালতে আসামিপক্ষে দাঁড়ান মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েলসহ কয়েকজন আইনজীবী।

২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে হামলা হয়। এতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় সিটি মেয়র নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দিলে তা সাধারণ ডায়েরি হিসেবে রেকর্ড করা হয়। ঘটনার ২২ মাস পর আদালতের নির্দেশে এটিকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশ। মেয়র আইভীর পক্ষে মামলার বাদী হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আইন কর্মকর্তা জিএম সাত্তার। ওই মামলায় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের অনুসারী ৯ ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৯০০-১০০০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলায় হত্যাচেষ্টা ও হামলার অভিযোগে বাদী ১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ১৪৩, ১৪৪, ১৪৯, ৩২৩, ৩২৪, ৩২৬, ৩০৭, ৩৪ এবং ১৯৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ (ক) ধারায় অভিযোগ করেন।

মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। দীর্ঘসময় তদন্ত শেষে গত ২৩ নভেম্বর মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

অভিযোগপত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন, পিস্তল জাতীয় আগ্নেয়াস্ত্র ভিডিও ফুটেজে দেখা গেলেও আসামি জামিনে থাকায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে না পারায় অস্ত্রটি উদ্ধার করা যায়নি। অপরজনের অস্ত্রটি তার নামে লাইসেন্স করা। এ কারণে তাদের অস্ত্র আইনের ধারা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, যুবলীগ নেতা নিয়াজুল ইসলাম খান, হকার নেতা রহিম মুন্সি, আসাদুল ইসলাম ওরফে আসাদ, সায়মন, ইকবাল হোসেন, মাসুদ পাটোয়ারী ওরফে শুক্কুর, তোফাজ্জল, পলাশ মিয়া, মহসীন বেপারী, সালাউদ্দিন ওরফে সালাউদ্দিন গাজী এবং সাদেকুল ইসলামকে। তাদের মধ্যে কেবল শাহ নিজাম ও নিয়াজুল ইসলাম খান এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন। বাকিরা এজাহার বহির্ভূত আসামি।

আসামিরা সবাই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ অনুসারী বলে জানিয়েছে মামলার বাদীপক্ষ।

এজাহারভুক্ত আসামি মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া সাজনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন, যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন, যুবলীগকর্মী নাসির উদ্দিন ওরফে টুন্ডা নাসির ও চঞ্চল মাহমুদকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেছে পিবিআই। তাদের মধ্যে মিজানুর রহমান সুজন গত বছরের ৯ জানুয়ারি মারা গেছেন।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়