২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২০:২০, ৫ মার্চ ২০২১

কারা ত্বকীকে হত্যা করেছে তা প্রধানমন্ত্রী জানেন: আনু মুহাম্মদ

কারা ত্বকীকে হত্যা করেছে তা প্রধানমন্ত্রী জানেন: আনু মুহাম্মদ

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ‘কতটা পাষন্ড, নির্দয় হলে ত্বকীর মতো মেধাবী এক কিশোরকে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। এই কাজ করে দেখিয়েছে নারায়ণগঞ্জের খুনিরা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কী করে এই পাষন্ড খুনি পরিবারের পক্ষে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে পারেন সেটা আমার বোধগম্য নয়। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরেই বিচারকার্য বন্ধ রয়েছে। কারা, কীভাবে ত্বকীকে হত্যা করেছে তা প্রধানমন্ত্রী জানেন। তাঁর কাছে সকল কাগজপত্র আছে। জানা সত্ত্বেও তিনি বিচারকার্য বন্ধ রেখেছেন। এর দায় তাকেও নিতে হবে।’

শুক্রবার (৫ মার্চ) বিকেলে নগরীর ডিআইটিতে বঙ্গবন্ধু সড়কে ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ৮ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ত্বকী হত্যার বিচারে লাগাতার কর্মসূচি পালিত হচ্ছে নারায়ণগঞ্জে। এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। সারাদেশের সকল খুন, গুম, নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন হিসেবে প্রেরণা হয়ে থাকবে।

আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আইন তার নিজের গতিতে চলে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মুশতাকের মৃত্যু স্বাভাবিক। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ধরনের কথাবার্তা বলার পর তদন্ত কমিটির আর কিছু করার থাকে না। তদন্ত কমিটি, আইন, আদালত, পুলিশ, র‌্যাবসহ কোনো প্রতিষ্ঠানই স্বাধীনভাবে বাংলাদেশে কাজ করতে পারছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘উন্নয়ন মানে ভবন নয়। পদ্মা সেতুর ব্যয় প্রথমে ১০ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। সেই ব্যয় এক পর্যায়ে ৩০ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এদিকে প্রতি বছর এইরকম চারটা পদ্মা সেতুর টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। আর এই পাচারকারীদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী জনগণের উপর ভরসা করতে পারেন না বলেই ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দখলদার, খুনি, লুটেরার পক্ষে কথা বলেন।’

তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে হকারদের কাছ থেকে, দোকানদারদের কাছ থেকে চাঁদা নেয়। এই চোরাই টাকা তারা বিদেশে পাচার করে। ত্বকীকে যারা তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে তাদের মতো লোকজন সারা বাংলাদেশকে জিম্মি করে রেখেছে। সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশ, র‌্যাব সবাই চলছে। জনগণের টাকায় যেহেতু তারা চলছে, সুতরাং অনিয়ম-দুর্নীতি হলে তার সমালোচনা করার অধিকার জনগণের আছে। কিন্তু সেই সমালোচনা করা যাবে না, করলেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে কালো আইনের মাধ্যমে গ্রেফতার হয়ে কারাবন্দী থাকতে হচ্ছে।’

জনতার আদালত অনেক বেশি শক্তিশালী মন্তব্য করে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। অনেক বিচার জমে যাচ্ছে। এইসব বিচার বাংলাদেশের মানুষ অবশ্যই করবে। জনগণ সবই দেখছে। মানুষকে জিজ্ঞেস করলেই জানতে পারবেন নারায়ণগঞ্জের কোথায় কী হচ্ছে। লুটেরা, দখলদার, নির্যাতক, ধর্ষক, ডাকাত দল, সম্পদ পাচারকারীদের হাতে বাংলাদেশ এখন বেদখল হয়ে আছে। সেই দেশকে আমাদের হাতে আনার জন্য শক্তি অর্জন করতে হবে।’

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক নিহত ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বির সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্যসচিব, কবি ও সাংবাদিক হালিম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাড. মাহবুবুর রহমান মাসুম, বাসদের জেলা সমন্বয়কারী নিখিল দাস, খেলাঘরের সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সিপিবির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি হাফিজুর রহমান, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায় প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদ।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়