২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৭:৫০, ২৪ আগস্ট ২০২১

আপডেট: ১৭:৫৭, ২৪ আগস্ট ২০২১

টিকা দিতে দেরি করায় হাসপাতাল স্টাফ-স্বেচ্ছাসেবককে মারধর

টিকা দিতে দেরি করায় হাসপাতাল স্টাফ-স্বেচ্ছাসেবককে মারধর

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল কেন্দ্রে করোনার টিকা দিতে দেরি করায় উত্তেজিত টিকাগ্রহীতাদের বিরুদ্ধে হাসপাতালের স্টাফ ও স্বেচ্ছাসেবকদের মারধর ও লাঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় দু’জনকে আটকও করেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে মুচলেকায় তারা ছাড়া পান।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১টার দিকে হাসপাতালের তৃতীয় তলার একটি টিকা বুথে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের স্টাফ সাউদ নূর, সিটি কর্পোরেশনের নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবক মো. রবিন, লাঞ্চিত হয়েছেন অর্পনা নামের এক নার্স।

মারধরের শিকার স্বেচ্ছাসেবক মো. রবিন বলেন, নিয়মিত বরাদ্দের টিকা সোয়া একটার দিকে শেষ হয়ে যায়। তখন সর্বোচ্চ ৩০ জন টিকাগ্রহীতা লাইনে ছিলেন। অতিরিক্ত টিকা আনার প্রক্রিয়া চলছিল। তবে টিকাগ্রহীতার লাইনে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাদের তাৎক্ষণিক টিকা দিতে হবে বলে হাসপাতালের স্বেচ্ছাসেবক ও স্টাফদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। এক পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক রবিনকে মারধর শুরু করেন তারা। তাদের থামাতে এসে মারধর ও লাঞ্চনার শিকার হন হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় সাউদ নূর ও নার্স অপর্না। সাউদ নূরের হাতে থাকে হ্যান্ড মাইক আছাড় মেরে ভেঙে ফেলা হয়। বুথের সামনের দরজাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সদর মডেল থানার শীতলক্ষ্যা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. সাঈদুজ্জামান। তিনি বলেন, টিকা নিয়ে হাসপাতালের স্টাফ ও টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়। পরে স্টাফদের সাথে দুর্ব্যবহার ও তাদের লাঞ্চিত করেন দুই ব্যক্তি। এ বিষয়ে মিমাংসা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কোনো অভিযোগ করতে চাননি বলে মুচলেকা নিয়ে ছাড়া হয়েছে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে।

এদিকে হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, আটক দুই ব্যক্তিকে হাতকড়াও পড়িয়েছিল পুলিশ। তাহের আলী নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির তদবিরে কোনো অভিযোগ ছাড়াই অভিযুক্ত দু’জনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও পরে কোনো আপত্তি তোলেনি।

জানতে চাইলে হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সকাল থেকে শৃঙ্খলার সাথে টিকাদান কার্যক্রম চলছিল। তৃতীয় তলার ওই বুথে নিয়মিত টিকা বরাদ্দ শেষ হয়ে গেলে অতিরিক্ত আরও টিকা আনার প্রক্রিয়া চলছিল। কিন্তু উচ্ছৃঙ্খল কয়েকজন টিকাগ্রহীতা এই কান্ড ঘটিয়েছে। এই ঘটনার পর কিছুক্ষণ টিকা প্রদান কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এই কেন্দ্রে মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদান করা হচ্ছিল। ১২৫০ টিকা বরাদ্দ ছিল। পরে আরও ২০০ ডোজ টিকা সেখানে নেওয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শেখ মোস্তফা আলী বলেন, টিকাগ্রহীতাদের ভিড় কমানোর জন্য সিনোফার্মের প্রথম ডোজ টিকার কেন্দ্র সরিয়ে হাসপাতালের বিপরীত পাশে একটি স্কুল মাঠে নেওয়া হয়েছে। তারপরও কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তির এই ধরনের আচরণ যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়। একই সাথে হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদারের কথা বলেন তিনি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে মুঠোফোনে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, তিনি এই বিষয়ে কিছু জানেন না। তবে কিছুক্ষণ হাসপাতালের টিকাপ্রদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল বলে অবগত ছিলেন।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়