২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৮:৩৫, ২৪ মার্চ ২০২২

আপডেট: ১৮:৩৫, ২৪ মার্চ ২০২২

নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ রুটে সি ট্রাক চালু

নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ রুটে সি ট্রাক চালু

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: শীতলক্ষ্যায় কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবির পর চারদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জ, চাঁদপুরসহ সাতটি রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে৷ তবে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জ রুটে যাত্রী চলাচলের জন্য একটি নৌ ট্রাকের (সি ট্রাক) ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)৷

দুপুর সোয়া দুইটায় ৩০ জন যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনাল থেকে `এসটি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত` নামে নৌ ট্রাকটি প্রথম যাত্রা শুরু করে৷ যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে এ সেবা চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ নারায়ণগঞ্জ জেলার যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামাল৷ তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএ`র সিস্টার অর্গানাইজেশন বিআইডব্লিউটিসি। যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিআইডব্লিউটিসির সি-ট্রাক চালু করা হয়েছে। এটি পরীক্ষামূলক হলেও যাত্রী চাহিদা অনুসারে সংখ্যা ও রুট বাড়ানো হবে৷

বিআইডব্লিউটিসি’র এই সি ট্রাকের প্রধান চালক নূর হোসেন সুমন বলেন, ২০০ যাত্রী ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন সি ট্রাকে মুন্সিগঞ্জ পৌঁছতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ পৌনে এক ঘন্টা৷ এটা সমুদ্রেও চলাচলের উপযোগী বলে নিরাপত্তা ঝুঁকি কম৷

গত চারদিন নারায়ণগঞ্জ থেকে বিভিন্ন রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে নিয়মিত যাত্রীদের৷ নৌ পথে চলাচল করতে না পেরে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে সড়ক পথে চলাচল করতে হয়েছে তাদের৷ নৌ ট্রাক চালু করায় যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে৷ তবে যাত্রীদের দাবি, রুট ও ট্রাকের সংখ্যা বাড়াতে হবে৷ অন্যথায় ঘাট থেকে ছাড়তে এবং গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগবে বেশি৷ যা যাত্রী চলাচলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে৷

এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, এই সি-ট্রাক এক সপ্তাহের বেশি চলবে না। কারণ এর যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ২০০ জন। পুরো ট্রাক ভর্তি করতে ঘন্টা দেড়েক টার্মিনালে বসে থাকতে হবে যাত্রীদের৷ কিন্তু আমরা যখন লঞ্চ চালিয়েছি তখন ৩০ থেকে ৪০ জন যাত্রী নিয়ে আধ ঘন্টা পরপর ঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে গিয়েছে। অন্যথায় যাত্রীরা বিকল্প পথে চলে গিয়েছে। ফলে এ যাত্রীরা এক দেড় ঘন্টা বসে থাকবে না।

সি ট্রাকের পাশাপাশ যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এ সি-ট্রাক চলাচলে আমাদের কোন সমস্যা নেই। আমরা কোন বিশৃঙ্খলাও করবো না। তবে আমরা ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর থেকে মুন্সিগঞ্জ ও অন্যান্য নৌপথে চলাচলরত লঞ্চগুলির চলাচল স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করার জন্য বিআইডব্লিউটিএ`র চেয়ারম্যানেরর কাছে লিখিত আবেদন করেছি।

লঞ্চ চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় অসংখ্য নৌ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন জানিয়ে নৌ যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদাক বলেন, লঞ্চের তদারকির দায়িত্ব যাদের তারা ঠিকমতো তদারকি করে না৷ আবার লঞ্চ ডুবে গেলে তারাই লঞ্চ চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেয়৷ এতে সংকটে পড়েন নৌ যান শ্রমিক ও কর্মচারীরা৷ এই নিষেধাজ্ঞাতেও কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা৷ আমরা বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করেছি। যে লঞ্চগুলো অন্তত চলাচলের উপযোগী সেগুলো দ্রুত যেন চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২০ মার্চ দুপুর ২টা ১০ মিনিটে সদর উপজেলার চরসৈয়দপুর কয়লাখাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে এমভি রূপসী-৯ নামে একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় এমএল আফসার উদ্দিন নামে যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবে যায়। এতে প্রাণ হারান নারী ও শিশুসহ ১০ জন৷ ঘটনার দিনের পর রাত থেকেই নারায়ণগঞ্জ থেকে সাতটি রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষনা করে বিআইডব্লিউটিএ।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়