১০ মে ২০২৪

প্রকাশিত: ২০:৪৩, ১৫ এপ্রিল ২০২১

রূপগঞ্জে বাকপ্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ নেয়নি পুলিশ

রূপগঞ্জে বাকপ্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ নেয়নি পুলিশ

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বাক প্রতিবন্ধির স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়ার পর ধর্ষণ চেষ্টা এবং ছিনতাইকারীকে চিনে ফেলায় গলাটিপে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের বীর হাটাবো এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ অসহযোগিতা করেছে বলে অভিযোগ বাদীপক্ষের।

বীর হাটাবোর এলাকার বাসিন্দা কাজিমদ্দিন জানান, তার মেয়ে আফরোজা আক্তার (৩০) গত ১১ এপ্রিল সকালে হাটাবো থেকে কাঞ্চন ব্রিজ এলাকায় অটোরিকশায় করে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আমদিয়া কাজিরটেক এলাকার পৌঁছলে ওই অজ্ঞাত অটোচালকের সহযোগিতায় বীর হাটাবো নাগদাপাড়ার ইসলাম উদ্দিনের ছেলে মোগলসহ অজ্ঞাত আরও তিনজন হামলা চালায়। এ সময় ছিনতাইকারীরা আফরোজাকে মুখ বেঁধে রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে যায়। পরে তার গলায় থাকা একভরি দুই রতি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার যার আনুমানিক মূল্য ৭৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এতে বাঁধা দিলে এলোপাথারি মারধর করে ছিনতাইকারীরা। এ সময় আফরোজা জোরে শব্দ করলে বীর হাটাবো গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেকের ছেলে হালিম ঘটনাস্থলে দৌড়ে যায়। এতোক্ষণে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। তবে হালিম মিয়া শুধুমাত্র ইসলাম উদ্দিনের ছেলে মোগলকে চিনতে পারে। বাকিদের মুখে মাস্ক থাকায় চিনতে পারেনি। পরে আফরোজাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তার পরিবারকে জানায়। পরিবারের লোকজন তাকে চিকিৎসার জন্য রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে ভুক্তভোগীর ভাই মোশারফ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমার বোন আফরোজার স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়ার পর ধর্ষণ চেষ্টা করা হলেও ভোলাবো তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সানোয়ার হোসেন রহস্যজনক কারণে এ ঘটনার অভিযোগপত্রে ধর্ষণ চেষ্টার কথা লিখতে দেয়নি। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে পূর্ব শত্রুতা লেখা হয়েছে। আমার পিতার অক্ষরজ্ঞান না থাকায় তা বুঝতে পারেনি। ফলে ওই দারোগা আমার বোনের বিচার পেতে অসহযোগিতা করছে। দারোগা আমার মুঠোফোনে বলেছেন, আফরোজা বাক প্রতিবন্ধী। তাই আদালতে সাক্ষী দিতে পারবে না, মামলা করে লাভ হবে না। অযথা হয়রানি হবেন। তাছাড়া অভিযুক্তদের ধরিয়ে দিতে পারলে মামলা নেয়া হবে বলে শর্ত জুড়ে দেন।

তবে অভিযুক্ত উপপরিদর্শক (এসআই) সানোয়ার হোসেন বলেন, বাদীপক্ষকে বলেছিলাম, অভিযুক্তদের অবস্থান জানাতে। বাদীপক্ষ গরীব, অসহায়। তারা থানা ও আদালতে দৌড়াতে পারবে না ভেবে এ কথা বলেছি। তবে অসহযোগিতা করবো না।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত কেন্দ্র বা থানায় তারা কোনো অভিযোগ দেননি বলেই জানি। অভিযোগ দিলে অবশ্যই মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা করতেছি। এদিকে অভিযুক্ত মোগল মিয়া পলাতক থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযুক্ত মোগল ও তার অধীনে একটি চক্র পূর্বাচলে ঘুরতে আসা লোকজনের কাছ থেকে সুযোগ বুঝে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। এমন ঘটনা আরো রয়েছে। এছাড়াও তারা এলাকায় মাদকসেবী হিসেবে চিহ্নিত।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এইচ এম জসিম উদ্দিন বলেন, কোনো পুলিশ সদস্যের এমন বক্তব্য হতে পারে না। ঘটনা তদন্ত করে প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর প্রতিবন্ধি আফরোজার অভিযোগ পেয়েছি। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়