২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

আপডেট: ১৯:৫১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

‘সরকারি জায়গা আমরা দখল করেছি’

‘সরকারি জায়গা আমরা দখল করেছি’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার তল্লা এলাকায় অবস্থিত ‘সাধারণ পাঠাগার, নারায়ণগঞ্জ’ এর সামনের মাঠের জায়গা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দখলের অভিযোগ ওঠার পর স্থানীয় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ওই সময় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আলী নূর বলেন, ‘আমরা কারও জায়গায় যাই নাই। সরকারি জায়গা আমরা দখল করছি। যেহেতু সরকার আমাদের, আমরাও সরকারের। কাজেই আমাদেরও একটা দাবি আছে। এইখানে সরকারি জায়গা আছে, আমরা একটু পাইছি, এইটাকে আমরা বসার জন্য নিয়ে যাবো।’

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তল্লা এলাকায় সাধারণ পাঠাগারের সামনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন আলী নূর। এই সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন মোল্লা, বীর মুক্তিযোদ্ধা বকুল মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা জমশের আলী ঝন্টুর নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা উপস্থিত হয়ে পাঠাগারের সামনের জায়গাটিতে টিনের বেষ্টনি দিয়ে দেন। সেখানে সাঁটান মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাইনবোর্ড।

সাধারণ পাঠাগারের কর্মকর্তারা জানান, তিন দশক আগে ১৯৯০ সালে পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর কর্তৃক নিবন্ধিত এই পাঠাগারের উপদেষ্টা শেখ মোজাম্মেল হকের নামে লিজ থাকা রেলওয়ের ১৮ শতাংশ জমির ৩ শতাংশের উপর আধাপাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনের সামনের খালি জায়গায় এলাকার শিশু-কিশোররা খেলাধুলা করে এবং পাঠাগারের বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম চলে। শিশু-কিশোরদের এই খেলাধুলার জায়গাটি দখল করে বাঁশের খুটি গেঁথে টিনের বেষ্টনি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাঠাগার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।

স্থানীয় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানদের এই কর্মকান্ডে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ও সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী। গত ২৮ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় ছিলাম। বিষয়টা পড়ে জানছি। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা কেন কীভাবে জায়গা একটা দখল করে নিছে। পাঠাগারের লোকজনের সাথে আলোচনা করে জায়গা করে নিতে হবে। সরকারি জায়গা সবার জায়গা। এইখানে আরেকজনের জায়গা বন্ধ করে দিয়ে জোর করে দখল করতে গেলে তো চলবে না। এইটাকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের জেলা কমিটি কোনভাবেই সমর্থন করবে না। এমনটা কেউ কইরা থাকলে ঠিক করো নাই।’

মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আগামী সাতদিনের মধ্যে এইটা সমাধান করতে হবে। এইটা নিয়া যেন আর বাড়াবাড়ি না হয়। মূল যেই কাজ সেইটা তো করতেছি না।’

তবে এই বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে বৃহস্পতিবার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী নূর বলেন, ‘পাঠাগারের লোকদের আমি বসার জন্য সংবাদ পাঠাইছি। তারা আমাদের অবহেলা কইরা বসে নাই। বিভিন্ন জায়গায় তারা দৌড়ঝাপ করছে। পরে আমরা এইখানে জায়গা নিতে চেষ্টা করলাম। আমাদের সাইনবোর্ড আগেও এইখানে ছিল। কিন্তু সেই জায়গাটা এখন রাস্তার উপর পড়ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এইটা পুরাটা পুকুর ছিল। ১৯৮২ সালে মুরুব্বিরা মাছ চাষের জন্য রেলওয়ে থেকে লিজ নেয়। সেই লিজ অনুযায়ী এই জায়গায় পাঠাগার হইছে। এখন তারা পাঠাগার নিয়া থাকুক। আমরা কারও জায়গা দখল করি নাই। এই জায়গা সরকারের। তারাও কিন্তু সরকারি জায়গার উপরেই আছে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জেলা কমান্ডারকে জানিয়েছি। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যেই কিছু লোক আছে ষড়যন্ত্রের মধ্যে। আমাদের বসার জায়গা নাই। আমাদের পেছনে এখনও ষড়যন্ত্র করতেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু কার্যক্রম আছে। সেই কার্যক্রমের জন্য এই জায়গাটা আমরা নিতে চাইতেছি।’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়