২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ২৫ মার্চ ২০২৪

শীতলক্ষ্যা পাড়ের গাছ কাটার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

শীতলক্ষ্যা পাড়ের গাছ কাটার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে বিআইডব্লিউটিএ’র প্রকল্পের জন্য গাছ কাটার প্রতিবাদে ও অবশিষ্ট গাছ রক্ষার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে পরিবেশ ও সংস্কৃতি কর্মীরা। ‘শীতলক্ষ্যা পাড়ের গাছ রক্ষায় নারায়ণগঞ্জবাসী’ সংগঠনের ব্যানারে সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

এ সময় তারা নদীর পাড় নগরবাসীর জন্য উন্মুক্ত ও গাছ রক্ষা করে প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সমন্বয়ক কবি আরিফ বুলবুল, সদস্যসচিব শুভ দেব, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়, সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণের সাবেক সভাপ্রধান শিল্পী অমল আকাশ, নাট্যকর্মী সোহেব মনির, গণসংহতি আন্দোলন জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, নারায়ণগঞ্জ একটি শিল্পঘন শহর। এই শহরের জনসংখ্যার ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি। নগরায়নর ফলে এ শহরের বেশিরভাগ সবুজ হারিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে শীতলক্ষ্যার পাড়ে তিন নম্বর ঘাট এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র বৃক্ষ নিধনযজ্ঞ পুরো পরিবেশের উপর মহাহুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে ওই এলাকার বাস্তুসংস্থান, জীব বৈচিত্র্য ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়েছে। ভবিষ্যতে এই সংকট আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

প্রাণ-প্রকৃতি ও প্রতিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের যে সামান্য কয়েকটি অবকাশ যাপনের স্থান আছে তার মধ্যে শীতলক্ষ্যার পাড় অন্যতম। নদী তীরে বসে থাকার জন্য প্রতিদিন শত শত মানুষ, ছুটির দিনে হাজারো মানুষ এখানে ভীড় জমায় একটু স্বস্তির আশায়। যদি এলাকাটিকে কোনভাবে রুদ্ধ করা হয়, সংরক্ষিত করে ফেলা হয় তাহলে এতগুলো মানুষ তাদের কাঙ্খিত অবকাশ থেকে বঞ্চিত হবে। যে কাজ মানুষকে অবকাশ যাপন থেকে বঞ্চিত করে তা কখনো উন্নয়ন হতে পারে না।

নদী ও নদীর তীর রক্ষায় উচ্চ আদালতের নির্দেশের কথা স্মরণ করিয়ে পরিবেশ কর্মীরা বলেন, নদী রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিএ সম্প্রতি অত্যাধুনিক টার্মিনাল নির্মাণ ও সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে শীতলক্ষ্যা নদী তীরের ৩ নম্বর মাছ ঘাট অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৮১টি গাছ কেটে ফেলেছে এবং আরও গাছ কাটার পাঁয়তারা করছে। এই বিশেষ প্রতিষ্ঠানটি হাইকোর্টের নির্দেশকেও অগ্রাহ্য করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গত শনিবার প্রায় ২০ বছরের অধিক পুরোনো একটি বটগাছকে তারা এক্সাভেটর দিয়ে উপড়ে ফেলেছে। এই নিকৃষ্ট ঘটনার আমরা নিন্দা জানাই।

প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় সকলে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়ে কবি আরিফ বুলবুল বলেন, নদী রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো নদীর মালিক না। নদী তাদের কাছে আমানত। নদী রক্ষায় কাজ করার কথা তাদের। কিন্তু  তারা এমন আচরণ করছে যেন এটি তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছে। শীতলক্ষ্যার পানি ড্রেনের পানির মতো দুর্গন্ধকর হয়ে গেছে। একটি নদীর দূষেণের প্রভাব পুরো শহরের উপর পড়ে। এভাবে চলতে থাকলে এই শহর আর শহর থাকবে না। ইদুর যেভাবে গর্তে বসবাস করে একদিন আমাদেরও সে অবস্থা হবে।

উল্লেখ্য, শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। সেখানে থাকবে আধুনিক রেস্ট হাউস, পার্কিং প্লেস। এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির ৮১টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। এ নিয়ে পরিবেশ ও সংস্কৃতি কর্মীসহ নাগরিক সমাজ প্রতিবাদ জানালেও গাছগুলোকে রক্ষা করা যায়নি।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়