২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:৪৮, ২৫ মার্চ ২০২৪

 ‘ছাড় পেতে যাচ্ছেন’ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের সেই ৫ কর্মচারী!

 ‘ছাড় পেতে যাচ্ছেন’ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের সেই ৫ কর্মচারী!

দুর্নীতি ও অনিয়ম করে হাসপাতালের সরকারি অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছিল শহরের খানপুুুরে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের ৫ কর্মচারীর বিরুদ্ধে৷ তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কমিটিও করেছিল৷ তবে দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ থেকে ছাড় পেতে যাচ্ছেন তারা৷ তদন্ত কমিটির প্রধান জেলা সিভিল সার্জনের সাথে তদন্তের বিষয়ে কথা বলে এমনটা ধারণা করা যাচ্ছে৷

সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান বলছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে করা অভিযোগের তিন অভিযোগকারী স্বাক্ষর নকল করে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা৷ এখন অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে এমন রেসপন্স পাওয়া গেলে অভিযোগ হালকা হয়ে যায়৷

তবে, সিভিল সার্জন বলেন, তারপরও বিষয়টি তদন্ত চলছে৷ তদন্ত শেষে প্রতিবেদনে বিষয়গুলো উল্লেখ করা হবে। 

এদিকে, নারায়ণগঞ্জের অনেকের মতে, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে দুর্নীতি ও অনিয়মের কথা কারও অজানা নয়৷ অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পরও যখন কর্মচারী ছাড় পেয়ে যায় বলে দুর্নীতি আর শেষ হয় না৷ যার ফলে ভুক্তভোগী হচ্ছেন সাধারণ সেবাপ্রার্থীরা৷

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের ৫ কর্মচারীর বিরুদ্ধে সরকারি বিল ভাউচারের টাকা আত্মসাৎ, ব্লাড ব্যাংকের অর্থ লোপাট, সরকারি মালামাল বাইরে বিক্রি, রোস্টারের নামে প্রতি মাসে অর্থ লুটে নেয়াসহ বিভিন্ন প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই  অভিযোগে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।

অভিযুক্ত ৫ কর্মচারীরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের হিসাবরক্ষক আহসান হাবিব, ব্লাড ব্যাংক ইনচার্জ আব্দুর আজিজ, স্টোরকিপার আতিকুর রহমান, ওয়ার্ডমাস্টার শেখ আনসার আলী ও অফিস সহায়ক জয়নাল।

এই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সভাপতি জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মুহম্মদ মুশিউর রহমান। এছাড়া কমিটিতে অপর দুই সদস্য হলেন, সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার মো. আসিফ মাহমুদ, মেডিকেল অফিসার ডা. একেএম মেহেদী হাসান।

এই কমিটি গত ২৪ মার্চ দুপুরে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অফিস কক্ষে অভিযোগকারী ও অভিযুক্তদের সাথে কথা বলেন। সেখানে অভিযোগকারীরা তাদের স্বাক্ষর জাল করে এই অভিযোগ দেয়া হয় বলে কমিটি কে জানান। অনেকেই বলছেন অভিযোগকারী গোপনীয়তার স্বার্থে নাম পরিচয় প্রকাশ না করলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত করা উচিত। কারণ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতির বিষয়টি অনেকটাই আলোচনায় আছে।  

এদিকে, অনিয়ম ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজন নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের আলোচিত ‘পিএ সিদ্দিক’ এর আত্মীয়। দুইজন সিদ্দিকের ভাই এবং অপরজন ভায়রা। পিএ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ছিল ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তারাও এই কর্মচারীর দাপটে ছিলেন তটস্থ। পিএ সিদ্দিকের দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সেলিম ওসমানও। তিনি প্রকাশ্যে একাধিক অনুষ্ঠানে সিদ্দিকের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন। যদিও সিদ্দিকের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে, দুর্নীতির অভিযোগের পাহাড় মাথায় নিয়ে পিএ সিদ্দিক বদলি হন রাজশাহীতে।
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়