২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৭:৩৯, ২৮ জানুয়ারি ২০২১

আপডেট: ১২:৩১, ২৯ জানুয়ারি ২০২১

আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে হট্টগোল, সাংবাদিকরা লাঞ্ছিত (ভিডিওসহ)

আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে হট্টগোল, সাংবাদিকরা লাঞ্ছিত (ভিডিওসহ)

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: সারাদিন কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির (বার) ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হলেও ভোট গণনার ঠিক পূর্বে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে মারধর ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরাও। বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে নির্মাণাধীন বার ভবনে ভোটকেন্দ্রের ভেতর এ ঘটনা ঘটে।

গণমাধ্যমকর্মীদের ধারণ করা কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হামলার ঘটনার নেতৃত্বে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল। তার নির্দেশ ও নেতৃত্বে বহিরাগতরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন।

প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীরা জানান, সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। এবার নির্বাচন চলাকালীন ভোটকেন্দ্রে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ নিষেধ ছিল। কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। মাইকে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে ঘোষণা করার কিছুক্ষন পরেই কেন্দ্রের ভেতরে হৈ-চৈ, হট্টগোল শোনা যায়। কেন্দ্রে ওই সময় আইনজীবীদের ছাড়াও বহিরাগত কয়েকজনকে দেখা যায়। তারা বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছিলেন। এই ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে মারধর ও লাঞ্ছনার শিকার হন কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীও। খবর পেয়ে জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামানসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ভেতরে ঢোকার পর আরেক দফায় বিশৃঙ্খলা ও ধাক্কাধাক্কি চলে। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও অতিরিক্ত পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। কেন্দ্রের ভেতরে বহিরাগত কাউকে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় তখন।

মারধর ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ নারায়ণগঞ্জ’ এর প্রতিবেদক শ্রাবন মোবাশ্বির, মোহনা টেলিভিশনের প্রতিবেদক আজমীর হোসাইন, নারায়ণগঞ্জ টিভির প্রতিবেদক সাজিত হোসেন সজিত, মাই টিভির ক্যামেরাপারসন মো. রায়হান। তাদের হাত থেকে ক্যামেরা, মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ও কিলঘুষি মারে।

মারধরের শিকার শ্রাবন মোবাশ্বির বলেন, কেন্দ্রের ভেতর বিশৃঙ্খলার খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় কয়েকজন আইনজীবীকে মারধর করতে দেখে ভিডিও ধারণ করতে গেলে হামলাকারীরা গণমাধ্যমকর্মীদের উপর চড়াও হয়। তাদের হাত থেকে মোবাইল, ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে চর-থাপ্পর দিয়ে সেখান থেকে বের করে দেয়।

ঘটনার পর আদালতপাড়ায় থমথমে পরিবেশ ছিল। বিভিন্ন স্লোগানে ভোটকেন্দ্রের বাইরে মিছিল করেছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত আদালতপাড়ায় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা।

এদিকে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে এসে জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ওয়াজেদ আলী খোকন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. খোকন সাহা গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ভেতরে তেমন কিছু হয়নি। কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি ঠিক আছে। ভোট গণনা শুরু হয়েছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘ভোট গণনায় কারচুপি করার পায়তারা করলে সাধারণ আইনজীবীরা তাতে বাধা দেয়। এ সময় আইনজীবীদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়।’
সাখাওয়াত হোসেন জানান, তাদের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কামাল হোসেন মোল্লা, বিএনপি নেতা অ্যাড. আবুল কালাম জাকির, আনোয়ার প্রধানসহ বেশ কয়েকজন মারধরের শিকার হয়েছেন।

এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাড. শামসুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, ‘সামান্য বিশৃঙ্খলা হয়েছিল। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়