২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ১৯ জানুয়ারি ২০২১

আশাবাদী আওয়ামী লীগ, চ্যালেঞ্জে বিএনপি

আশাবাদী আওয়ামী লীগ, চ্যালেঞ্জে বিএনপি

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নির্বাচন কমিশন নিয়ে দ্বিমত থাকলেও জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণার পর প্রচারণাও নেমেছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। তারা বলছেন, এই নির্বাচনকে তারা চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। অন্যদিকে পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা আদালতপাড়ায় উভয় প্যানেলের প্রার্থী ও সমর্থকরা প্রচারণা চালিয়েছেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত সিনিয়র আইনজীবী নেতারা প্রচারণায় অংশ নেন। এ সময় সাধারণ আইনজীবীদের মাঝে প্যানেলের প্রার্থী সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করে ভোট প্রার্থনা করেন তারা। আদালতপাড়ায় মিছিলও করেছে উভয় প্যানেলের প্রার্থী ও সমর্থকরা।

দুপুর দেড়টার দিকে আইনজীবী সমিতির নির্মাণাধীন ভবনের সামনে সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সাবেক সহসভাপতি একরামুল হক প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদের (২০২১-২২) সভাপতি প্রার্থী মোহসীন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাহবুবুর রহমানসহ অন্যান্য প্রার্থীরা।

একই সময়ে জেলা আদালত ভবনের সামনে সমাবেশ করেছে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান, মহানগর বিএনপির সহসভাপতি অ্যাড. জাকির হোসেন, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক অ্যাড. আনোয়ার প্রধান প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি সমর্থিত প্যানেল থেকে সভাপতি প্রার্থী সরকার হুমায়ূন কবির, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কামাল হোসেনসহ অন্যান্য প্রার্থীরা।

এই নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন উল্লেখ করে আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘জাতীয়, স্থানীয় সব নির্বাচনের মতো নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকেও সরকার কুক্ষীগত করেছে। আইনজীবী সমিতির সকল সদস্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমরা এবার এই নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। এই নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে থাকবো। আইনজীবীদের ভোট নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলে তারা এদেশে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে একটি কলঙ্কে রূপান্তরিত করেছে। এই কলঙ্ক থেকে এদেশের মানুষ ও আইনজীবী সমিতিকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে সভাপতি প্রার্থী সরকার হুমায়ূন কবির বলেন, রক্ত দিয়ে হলেও নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন। সাধারণ আইনজীবীদের কাছে কেবল ভোট প্রার্থনা করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত মোহসীন-মাহবুব প্যানেলের জন্য ভোট প্রার্থনা করে অ্যাড. খোকন সাহা বলেন, ‘এমপিরা আইনজীবীদের ভবন করে দিয়েছেন। উন্নয়ন কিন্তু তারা (বিএনপি) করে নাই। উল্টা তারা বারের টাকা আত্মসাৎ করেছে। সভাপতি প্রার্থী কিন্তু দুই লাখ হিসেবে পরিচিত।’

আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল বলেন, ‘সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে আইনজীবীরা অতীতেও ভুল করেনি আগামী নির্বাচনেও করবে না। আমরা নেতা হতে আসিনি। আইনজীবীদের সেবা করতে এসেছি। সাধারণ ভোটাররাই সিদ্ধান্ত নেবেন কাকে নির্বাচিত করবেন।’

গত ৭ জানুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শামসুল ইসলাম ভূঁইয়াকে প্রধান করে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হলে তা আওয়ামী লীগের আজ্ঞাবহ উল্লেখ করে প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা। ওই সভা মাত্র ৫ মিনিটেই শেষ হয়ে যায়। আদালতপাড়ায় তাৎক্ষনিক একটি প্রতিবাদ সভাও করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এই কমিশনের প্রত্যাখ্যান করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় ওইদিন। তবে এই কমিশনের অধীনেই নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা। গত ১৩ জানুয়ারি প্যানেলও ঘোষণা করে তারা।

প্রসঙ্গত, আগামী ২৮ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত ডিজিটাল ভবনের দ্বিতীয় তলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়