সকলে মিলে পরিবেশ রক্ষা, পরিচ্ছন্ন শহর গড়বো: আইভী

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, ‘পরিবেশ রক্ষায় অনেক কাজ করতে হয় কিন্তু একসাথে সব সম্ভব না। আমাদের প্রায় দেড় হাজার পরিচ্ছন্নকর্মী আছে কিন্তু তারা যথাযথভাবে কাজ করে না। অন্যদিকে মানুষ যত্রতত্র ময়লা ফেলে। আমরা দুইটা ওয়ার্ড নিয়ে পাইলট প্রজেক্ট করতে চাই। প্রত্যেক বাসায় আমরা তিনটি ডাস্টবিন দিবো। যার একটিতে প্লাস্টিক, অন্যটিতে শুষ্ক বর্জ্য এবং তৃতীয়টিতে গৃহসৃষ্ট বর্জ্য রাখবে। আমরা 'থ্রি আর' দিয়ে শুরু করি। এতদিন এগুলো শুনে এসেছি এখন বাস্তব প্রয়োগ করতে চাই।’

রোববার (১০ মার্চ) সকালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে পরিবেশ রক্ষায় রিসাইক্লিং উদ্যোক্তাদের জীবনমান উন্নয়নে গৃহীত প্রকল্প অবহিতকরণ কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন৷

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্পগুলো শুধু গ্রহণ নয়, এর জন্য সকলকে যথাযথভাবে কাজ করতে হবে। প্রকল্প সফল করতে হবে। আমাদের পরিবেশ রক্ষার জন্য, পরিচ্ছন্ন শহরের জন্য আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। এসব কাজ করতে গিয়ে যদি কোনো সমস্যা হলে আমাকে জানাবেন। আমি মনে করি, আমরা সকলে মিলে কাজ করলে একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়তে পারবো।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কর্ডএইড বাংলাদেশের পরিচালক ডাওয়া ডেক্সট্রো, নগর পরিকল্পনাবিদ মঈনুল ইসলাম, জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এসকে মুজাহিদ, গ্রীন টেক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ প্রকৌশল পরিচালক মো. লুৎফর রহমান, নাসিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও নাসিক ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস। এছাড়া জিআইজেড, সিবিআর ইন্টারনেশনাল, সমবায় সমিতির প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ১১টায় নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে নেদারল্যান্ডভিত্তিক সহযোগী সংস্থা কর্ডএইডের উদ্যোগে এ কর্মশালা শুরু হয়৷

আয়োজকরা জানান, নাসিক এলাকায় প্রায় ২০ লাখ মানুষের বসবাস। প্রতিদিন তাদের সৃষ্ট বর্জ্যরে মধ্যে ২০ শতাংশই প্লাস্টিক বর্জ্য। তবে এই বর্জ্য পুনরায়ন ব্যবহারযোগ্য। তাই পরিবেশ রক্ষায় রিসাইক্লিং উদ্যোক্তাদের উপার্জন ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কর্ডএইডের সহযোগিতায় ‘রেজিলিয়েন্ট প্রকল্প’ হাতে নিয়েছে নাসিক। এ প্রকল্পের আওতায় ৫০০ জন পরিচ্ছন্নকর্মী ও ৩০ জন ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীদের (সবুজ উদ্যোক্তা) প্লাস্টিক সংগ্রহে ও পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে। প্লাস্টিক সংগ্রহ বাড়ানোর জন্য ভ্যালু চেইনকে শক্তিশালী করা হবে।

রেজিলিয়েন্ট প্রকল্পের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সবুজ উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়ন, প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলা, জলজ জীবন উন্নয়ন, সঠিক জল প্রবাহ নিশ্চিত করা, প্লাস্টিকের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা রোধ করা, প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্ভাবনী সমাধান, জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন কর্মসূচীতে অবদান কথা বলা হয়। এ লক্ষ্যে সহযোগিতা এবং নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে, পরিষ্কার এবং সবুজ শহুরে পরিবেশ বিকাশের জন্য সমমনা সংস্থাগুলির জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার কথা জানান আয়োজকরা।

এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে ও কর্ডএইড এর সহযোগিতায় প্লাস্টিক বাজার স্থাপন করা হয়েছে। রিসাইক্লিং পয়েন্ট এবং আরএফএল কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে রিসাইক্লিং কেন্টার করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান কর্ডএইড জেলা প্রডেক্ট অফিসার মোস্তফা জামান।