২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৮:০০, ২৯ আগস্ট ২০২১

আপডেট: ১৮:০১, ২৯ আগস্ট ২০২১

অবশেষে মিললো তল্লার সেই মসজিদ খোলার অনুমতি

অবশেষে মিললো তল্লার সেই মসজিদ খোলার অনুমতি

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: প্রায় এক বছরের মাথায় গ্যাস বিস্ফোরণ ঘটা সদর উপজেলার তল্লার সেই বাইতুস সালাত জামে মসজিদে নামাজের জন্য খোলার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে সেক্ষেত্রে ছয়টি শর্ত দিয়েছে প্রশাসন। এসব পূরণের শর্তে ওই মসজিদে নিয়মিত নামাজের আয়োজন করা যাবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।

রোববার (২৯ আগস্ট) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল গফুরের কাছে মসজিদটি ব্যবহারের অনুমতিপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। মসজিদটি ব্যবহারের জন্যে কমিটিকে অনুমতিপত্রে লিখিতভাবে ছয়টি শর্ত দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

শর্তগুলো হলো: মসজিদে একাধিক দরজা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে এবং আপাতত মসজিদটিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ (এসি) যন্ত্রের ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বিদ্যুতের প্যানেল বোর্ড মসজিদ ভবনের বাইরে অথবা বারান্দায় বসাতে হবে। প্রতি ৩ মাস পর পর অনুমোদিত প্রকৌশলী, এবিসি লাইসেন্সপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান দ্বারা পরীক্ষা করে রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে। স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক মসজিদের বিদ্যুৎ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রমের সঠিকতা নিশ্চিত করতে হবে। মসজিদের নিচে বা পাশে গ্যাস লাইন নেই অথবা গ্যাস লাইন সঠিক আছে মর্মে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ থেকে প্রত্যয়নপত্র নিশ্চিত করতে হবে। মসজিদের প্রতিটি তলায় পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামাদি রাখতে হবে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এবং তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাযথভাবে মনিটরিং করাসহ এসব শর্তাবলি পালন নিশ্চিত করতে হবে।

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, মসজিদ খোলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের চিঠি চাওয়া হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এই বিষয়ে ইতিবাচক সুপারিশ করেছেন। পরিপ্রেক্ষিতে মসজিদ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মসজিদ সংস্কার করে যেকোনো সময় মুসুল্লিরা নামাজের আয়োজন করতে পারবেন।

গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর রাতে এশার নামাজ চলাকালীন উপজেলার পশ্চিম তল্লা এলাকায় অবস্থিত বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণ ঘটে। এই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ ৩৪ জন মারা যান। আহত হন আরও কয়েকজন। এই ঘটনায় জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস, ডিপিডিসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত প্রতিবেদনে বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে মসজিদের অবকাঠামো নির্মাণে ত্রুটি, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ, তিতাসের গ্যাস লাইনে লিকেজের বিষয়টি উঠে আসে। মসজিদের অভ্যন্তরে জমে থাকা গ্যাস ও বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে সৃষ্ট স্ফুলিঙ্গ থেকেই এই ধরনের ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এই ঘটনায় দায়ের করা পুলিশের মামলায় মসজিদ কমিটির সভাপতি, তিতাস ও ডিপিডিসির সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হন। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর এই মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযোগপত্রে মসজিদ কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল গফুরকে প্রধান করে ২৯ জনকে আসামি করা হয়। তবে সরকারি সংস্থার আসামিদের আসামি করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি না পাওয়ায় এই মামলায় গ্রেফতার তিতাসের ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অভিযোগপত্রে আসামির তালিকায় সংযুক্ত করা হয়নি।

বিস্ফোরণের পর থেকে মসজিদটিকে নামাজ আদায়ের জন্য অনুপযুক্ত হিসেবে ঘোষণা করে সিলগালা করা হয়। চলতি বছরের গত ২০ আগস্ট মসজিদটি খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করে স্থানীয় এলাকাবাসী। তারা মসজিদটি দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবি তোলেন।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়