২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ১৯:৪৭, ২২ অক্টোবর ২০২২

আপডেট: ১৯:৪৭, ২২ অক্টোবর ২০২২

আওয়ামী লীগের সম্মেলন, কমিটিতে আসতে পারে চমক

আওয়ামী লীগের সম্মেলন, কমিটিতে আসতে পারে চমক

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: দীর্ঘ বছর পর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আসতে পারে চমক। দলের প্রতি নিবেদিত, ত্যাগী ও সৎ নেতারা পেতে যাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ পদ। দলে থেকেও বিগত সময়ে যারা দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন সেসব আমলনামা এবার বিবেচনায় আনা হবে। সার্বিক বিশ্লেষনে এবার নেতৃত্বে পরিবর্তন আসতে পারে বলেই মনে করছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

ইতোমধ্যে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামীকাল রোববার (২৩ অক্টোবর) নগরীর ইসদাইরে অবস্থিত ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। একই স্থানে ২৫ অক্টোবর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে দুই কমিটির সম্মেলনকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। নতুন কমিটিতে পদ পেতে কেন্দ্রে তদবির চলছে জোরেসোরে। কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক নেতার শোনা যাচ্ছে। তবে সকলেই তাকিয়ে আছেন কেন্দ্রের দিকে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে দলীয় সম্মেলনে নাজমা রহমান সভাপতি ও শামীম ওসমানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ২০০১ এ আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারালে দেশ ছাড়েন শামীম ওসমান। পরে জেলায় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। ওই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন এসএম আকরাম, সদস্যসচিব ছিলেন মফিজুল ইসলাম। তবে ওই কমিটি আর পূর্ণাঙ্গ হয়নি। ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর আব্দুল হাইকে সভাপতি, ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি করে দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এক বছর পর ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। তবে ওই কমিটির ছয়টি পদ এখনও শূণ্য রয়েছে।

এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা। তারা দীর্ঘদিন এই কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার কমিটিতে চমক অপেক্ষা করছে। বিগত সময়ে কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মীদের কথাবার্তাও তা অনেকটা স্পষ্ট হয়েছে। সুসময়ের মাছিরা এবার কমিটিতে জায়গা পাবেন না। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দল সুসংগঠিত রাখতে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে। অগ্রাধিকার পাবেন সৎ ও নির্ভীক নেতারা। দলের জন্য যাদের নিবেদিত প্রাণ তারাই এবার কমিটিতে পাবেন গুরুত্বপূর্ণ পদ।

দলীয় সূত্রমতে, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি আছেন আব্দুল হাই। সম্মেলনে তিনি ছাড়াও সভাপতি পদে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের নাম শোনা যাচ্ছে। আলোচনায় রয়েছে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর নামও। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনা আছেন আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।

এদিকে মহানগর কমিটির সভাপতি পদে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর নাম শোনা যাচ্ছে জোড়েসোড়ে। তবে বর্তমান সভাপতি আনোয়ার হোসেনও পুনরায় এই পদ পেতে পারেন বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তনের আভাস মিলছে নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে। সাধারণ সম্পাদক পদে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাতের নাম আসছে। বিগত সময়ের রাজনীতি ও গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে তার উল্লেখযোগ্য অবস্থান এগিয়ে রাখছে এই তালিকায়। আলোচনায় আছে দীর্ঘ দুই যুগ এই পদে থাকা খোকন সাহার নামও।

তবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বলছেন, দলের জন্য নিবেদিত, ত্যাগী ও সৎ নেতারই কমিটির গুরুত্বপূর্ণ এই দুই পদে আসা প্রয়োজন। এদিকে আগামী নির্বাচনের আগে বিভক্তি না তৈরি করে পুরোনো কমিটিই বহাল রাখা হবে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তবে নেতা-কর্মীদের বিগত সময়ের আমলনামা এবার বিবেচিত হবে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সরাসরি নারায়ণগঞ্জে এসে পর্যবেক্ষণ করেছে কেন্দ্রীয় নেতারা। কারা দলীয় প্রার্থীর বাইরে অবস্থান নিয়েছিলেন তাদের আমলনামা আছে কেন্দ্রের কাছে। সম্মেলনকে ঘিরে তাদের জবাব দেওয়া হবে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। এমন আভাস জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ বর্ধিত সভায় দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে আছেন নারায়ণগঞ্জের নেতারা।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়