২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২১:২৩, ২০ জুন ২০২১

আপডেট: ০০:১৫, ২১ জুন ২০২১

দুঃখিনী জাহানারার চোখে আনন্দ অশ্রু: ‘শেখ সাবের বেটিরে ধন্যবাদ’

দুঃখিনী জাহানারার চোখে আনন্দ অশ্রু: ‘শেখ সাবের বেটিরে ধন্যবাদ’

সৌরভ হোসেন সিয়াম (প্রেস নারায়ণগঞ্জ): স্বামী জব্বার মিয়া দুর্ঘটনায় পা ভেঙে ৫ বছর যাবৎ বিছানায়। একটি ঝুটের কারখানায় কাপড় বেছে দিয়ে সপ্তাহে এক হাজার টাকা উপার্জন জাহানারা আক্তারের। পরের জমিতে ছাপড়া ঘর তুলে দশ বছর বয়সী মেয়ে ও পঙ্গু স্বামীকে নিয়ে থাকতেন। এখন নিজের দুই শতাংশ জমি হয়েছে জাহানারার। পেয়েছেন নতুন ঘরও।

গতকাল রোববার (২০ জুন) সকালে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় দুই শতাংশ জমির উপর নতুন ঘরের কাগজপত্র তুলে দেওয়া হয় তার হাতে। নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে কাগজ ও প্রতিকী চাবি হাতে বসে থাকতে দেখা যায় জাহানারাকে। সবকিছুই অবিশ্বাস্য ঠেকছে তার। জানতে চাইলে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, ‘আমি দুঃখিনি মানুষ। দুই মেয়েরে কোনো মতে বিয়া দিছি। স্বামী কাম করতে পারে না। ছোট মেয়েটারে নিয়া ছাপড়া ঘরে থাকতাম। ঝুট মিলে ত্যানা (কাপড়) বাইছা কিছু ট্যাকা পাই সেই টাকাতে দিন চলতো। নিজের জায়গায় নতুন ঘরে উঠমু, এমন কপাল যে হইবো তা কখনও ভাবি নাই।’

জাহানারা জমি ও নতুন ঘর পেয়ে কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। তিনি জানান, বন্দর উপজেলার লক্ষণখোলা এলাকায় তাকে ঘর দেওয়া হয়েছে। সেই ঘর দেখেও এসেছেন তিনি। দুই-তিনদিনের মধ্যে মেয়ে ও স্বামীকে নিয়ে ওই ঘরে উঠবেন।

গণভবন থেকে সকালে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ঘরগুলো দ্বিতীয় পর্যায়ে হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ জেলায় মোট ১৮২টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। বন্দর উপজেলায় দুই কক্ষবিশিষ্ট এমন ১৫টি ঘরের কাগজপত্র ও চাবি উপকারভোগীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

নতুন ঘর ও জমির কাগজপত্র পেয়েছেন বৃদ্ধ মজিবর রহমান। এলাকায় ঘুরে ঘুরে ভাঙা ছাতা মেরামত করে বেড়ান তিনি। এক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, ছেলে ট্রাকে নির্মাণসামগ্রী লোড-আনলোডের কাজ করে। কখনও নিজের বাড়ি হবে তা কল্পনাতেও ছিল না মজিবরের। বন্দরের লাঙ্গলবন্দ এলাকায় মাসে আড়াই হাজার টাকা ভাড়ায় টিনশেডের ঘরে থাকতেন। মজিবর বলেন, ‘এলাকায় এলাকায় ঘুইরা ছাতা ঠিক করি। বাপ-দাদারাও এই লাঙ্গলবন্দে থাকতো। তাগো লগে এক সময় গাঙের উপর নৌকায় থাকছি। তহোন থাকার কোনো জায়গা ছিল না। এহোন নিজের ঘর পাইছি। এই আনন্দ কইয়া বুঝাইতে পারমু না। শেখ সাবের বেটিরে ধন্যবাদ।’

একই অনুভূতি আশ্রয়ন প্রকল্পে সুবিধাভোগী আনোয়ার, লোকমান, পিয়ারা খাতুনেরও। ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বিনামূল্যে জমিসহ ঘর দেওয়ার এই প্রকল্পের জন্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তারা।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়