২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২২:১০, ৪ অক্টোবর ২০২০

ফতুল্লায় মসজিদ কমিটি নিয়ে বিতর্ক, শাহ্ নিজামের কমিটি ‘অবৈধ’

ফতুল্লায় মসজিদ কমিটি নিয়ে বিতর্ক, শাহ্ নিজামের কমিটি ‘অবৈধ’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তক্কার মাঠ এলাকার বায়তুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। নির্ধারিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই ৩ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব শামসুল হক। ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অপরাধের সাথে জড়িত থাকাসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। কমিটি গঠন নিয়ে রোববার (৪ অক্টোবর) এশার নামাজের পর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা ও নিয়মিত মুসুল্লিরা দীর্ঘক্ষন বৈঠক করেছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও মসজিদের মুসুল্লিরা জানান, তক্কার মাঠ এলাকার বায়তুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সভাপতি ছিলেন আব্দুল মজিদ গাজী। বছরখানেক হয়েছে তিনি মারা গেছেন। পরে সিনিয়র সহসভাপতি সানোয়ার হোসেন জুয়েল ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বিএম কামরুজ্জামান আবুল।

এদিকে ওই কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের জন্য গত ৩ সেপ্টেম্বর তিন সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক করা হয় আলহাজ্ব শামসুল হককে এবং সদস্যসচিব আলহাজ্ব ইলিয়াস মতব্বর। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন আলহাজ্ব মো. আবুল বাশার।

শামসুল হক বলেন, শনিবার মাগরিবের নামাজের পর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ নিজাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপুসহ আওয়ামী লীগ নেতারা ৩ সদস্যের নতুন মসজিদ পরিচালনা কমিটি ঘোষণা করেন। এই কমিটিতে সানোয়ার হোসেন জুয়েলকে সভাপতি ও বিএম কামরুজ্জামান আবুলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এই ঘোষণা দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কোনো সদস্যের মতামত নেওয়া হয়নি। ফলে কমিটি অবৈধ ঘোষণা করেন শামসুল হক।

তিনি বলেন, কমিটি হবে মসজিদমুখী লোকজনকে দিয়ে। সবাইকে নিয়েই কমিটি হবে। কারোর একার প্রভাব সেখানে থাকবে না। যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন তারাই কমিটিতে অগ্রাধিকার পাবেন। কেননা তারাই মসজিদের সমস্যা তুলে ধরতে পারবেন। সুন্দর একটা কমিটি দেওয়ার জন্যই আমাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। অথচ আমাকে এবং কমিটির অন্য দুই সদস্যকে কিছু না জানিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এটা অবৈধ।

নতুন ঘোষিত কমিটির সভাপতি সানোয়ার হোসেন জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান আবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সাবেক কমিটির সদস্য শফিক মাস্টার বলেন, সভাপতি-সেক্রেটারির বিপক্ষে লোকজন। স্থানীয়দের মধ্যে তারা বিতর্কিত। এলাকার মধ্যে দুই নম্বরি সকল কাজের মধ্যে সেক্রেটারি আবুল জড়িত। সভাপতি সানোয়ার হোসেন জুয়েলেরও খারাপ রেকর্ড রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সানোয়ার হোসেন জুয়েলের মুঠোফোনের নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি।

এদিকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ইলিয়াস মতব্বর জানান, রোববার রাতে এশার নামাজের পর মুসুল্লি ও কমিটির সদস্যরা বৈঠকে বসেছিলেন। তিনটি পৃথক কমিটির সুপারিশ এসেছে। একটিতে সভাপতি পদে তোফায়েল হোসেন সোহেল, সিনিয়র সহসভাপতি কামরুল ইসলামকে সুপারিশ করা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদকের পদটি খালি রয়েছে এই তালিকায়। পৃথক আরেকটি তালিকায় সভাপতি মো. হারুন উর রশীদ, সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদ (অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য), সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম মাস্টারকে মনোনীত করা হয়েছে। তৃতীয় তালিকায় সভাপতি সানোয়ার হোসেন জুয়েল, সিনিয়র সহসভাপতি কামরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক পদে কামরুজ্জামান আবুলের নাম রয়েছে।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বলছেন, তিনটি তালিকার সমন্বয়ে সকল মুসুল্লিদের মতামত অনুযায়ী একটি কমিটি গঠন করা হবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে কমিটি ঘোষণা করা হবে। এই প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠন করতে ব্যর্থ হলে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সদস্যরা নির্বাচিত হবেন।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়